এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > লোকসভা নির্বাচনে বাম- কংগ্রেস জোট নিয়ে আলোচনায় চার হেভিওয়েট নেতা, কথাবার্তা এগোলেও সূত্র এখনও অধরা

লোকসভা নির্বাচনে বাম- কংগ্রেস জোট নিয়ে আলোচনায় চার হেভিওয়েট নেতা, কথাবার্তা এগোলেও সূত্র এখনও অধরা


জাতীয় রাজনীতিতে যাই হোক না কেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে সরাতে বাংলায় শাসকদল তৃণমূলের সাথে কোনো মতেই জোট করা যাবে না বলে প্রথম থেকেই দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে আপত্তি জানিয়েছে বাংলার দুই রাজনৈতিক দল সিপিএম এবং কংগ্রেস। এমনকি এই ব্যাপারে রাজ্যের বিধান ভবনের কংগ্রেস নেতারা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধী এবং আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের বাম নেতারা দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির কাছে আবেদনও করেছিলেন। জানা গেছে, দুই শীর্ষ নেতাই এই ব্যাপারে কিছুটা হলেও সহমত পোষণ করেছেন। কিন্তু সীতারাম ইয়েচুরি বা রাহুল গান্ধী এই ব্যাপারে একমত হলেও রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে গেলে ঠিক কিভাবে তারা এগোবে তা নিয়ে এখনও সংশয়ে রয়েছেন বাংলার কংগ্রেস এবং সিপিএম নেতারা।

সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ কলকাতার এক দুঁদে বাম আইনজীবীর বাড়িতে সিপিএম ও কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা হয়। যেখানে বামেদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেব এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং প্রদীপ ভট্টাচার্য। আর এই আলোচনায় থেকেই অনেকের মনেই জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে যে, তাহলে কি অবশেষে লোকসভা নির্বাচন এবং নিজেদের মধ্যে আসন সমঝোতা ও লড়াইয়ের ব্যাপারে এই দুই দল নিজেদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা করে নিল! সূত্রের খবর, জোট নিয়ে আলোচনা হলেও প্রকাশ্যে এই ব্যাপারে কোনো পক্ষই কিছু বলতে চায়নি। তবে গত ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের মতো যৌথভাবে প্রার্থী ঘোষণা না করে নিজেদের মতো করেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে বাম ও কংগ্রেস বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এই আলোচনার পথ যাতে আরও প্রশস্ত হয় সেজন্য রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেসের সোমেন মিত্র এবং সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র মিলে একটি বৈঠকও করবেন বলে খবর। তবে অত সহজে যে দু’পক্ষের মধ্যে বরফ গলবে না সেই আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকে। কেননা গত বুধবার সিপিএমের পক্ষ থেকে এক আলোচনায় বলা হয় যে, গত ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম ও কংগ্রেস এই রাজ্যে যে ছয়টি আসন জিতেছিল সেখানে যে দল যে আসনে জয়লাভ করেছে এবার সেই আসনগুলোই সেই দলকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এতেই কিছুটা আপত্তি জানায় কংগ্রেস। কেননা বিগত ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ এই দুটি কেন্দ্রেই জয় লাভ করেছিল সিপিএম। আর সিপিএমের দাবি অনুযায়ী এই দুটি আসনে এবার প্রার্থী দেবেন তাঁরা।

কিন্তু এতেই আপত্তি রয়েছে কংগ্রেসের। ইতিমধ্যেই রায়গঞ্জে কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সি এবং মুর্শিদাবাদে আবু হেনাকে প্রার্থী করার দাবি উঠতে শুরু করেছে। ফলে সেই দিক থেকে যদি কংগ্রেস এবং সিপিএমের মধ্যে জোট হয় তাহলে এই মুর্শিদাবাদ এবং রায়গঞ্জ কেন্দ্র নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে যে প্রবল দড়ি টানাটানি হতে পারে তা মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। অন্যদিকে, গত লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম ও কংগ্রেসের মধ্যে যে দল যেখানে দ্বিতীয় স্থানে ছিল, তারাই সেখানে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবে বলে সিপিএমের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা মানতে নারাজ কংগ্রেসের বিধান ভবনের নেতারা। সূত্রের খবর, এই ব্যাপারে কিছুটা হলেও আপত্তি রয়েছে কংগ্রেসের।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সেই দিক থেকে দেখলে হয়ত বা কংগ্রেস অনেক জায়গাতেই প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে বঞ্চিত হবে। তাই সিপিএমের এই প্রস্তাবটি মানার ক্ষেত্রে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রবল অনীহা প্রকাশ করা হতে পারে। পাশাপাশি বিশেষ একটি সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে – বাম ও কংগ্রেসের জোট ফর্মুলায় প্রাথমিকভাবে ৫০-৫০ আসন বন্টনের কথা কংগ্রেস বললেও, পরবর্তীকালে এক-তৃতীয়াংশ আসন পেলেই জোটে হ্যাঁ করে দিতে পারেন কংগ্রেস নেতারা। কিন্তু, বামফ্রন্টের ক্ষেত্রে মুশকিল হল – যেসব আসন জোটের ফলে পেতে পারে, তার বাইরে তাদের ভোটব্যাঙ্ক প্রায় শূন্য, ফলে জোট করে কংগ্রেস লাভবান হলেও, বামফ্রন্টের কপাল পুড়তে পারে। সব মিলিয়ে রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপিকে ঠেকাতে কংগ্রেস এবং সিপিএমের জোট আলোচনা থেকে শেষ পর্যন্ত কোন পথে এগোয় এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!