এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > কাটমানি দিয়েও মেলেনি কাজ! মহিলা বিক্ষোভ সামাল দিতে নির্বিচারে লাঠিচার্জ পুলিশের!

কাটমানি দিয়েও মেলেনি কাজ! মহিলা বিক্ষোভ সামাল দিতে নির্বিচারে লাঠিচার্জ পুলিশের!

লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে কেউ কাটমানি খেলে তাকে রেয়াত হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু সমাজের পরোতে পরোতে ঢুকে যাওয়ায় ঘুনকে মুছে দিতে পারছেন না কেউই। এবার কাটমানি দিয়ে পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম তৈরীর কাজের বরাত না পাওয়ায় রাস্তা অবরোধ করতে দেখা গেল রায়গঞ্জ ব্লকের স্বনির্ভর দলের কয়েকশ মহিলাকে। সূত্রের খবর, সোমবার শিলিগুড়ি মোড়ের 34 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন তারা।

জানা যায়, পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের কিছু মানুষ এবং প্রশাসনের কিছু কর্মী স্কুল ইউনিফর্মের কাজ দেওয়ার নাম করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। আর এই ব্যাপারে কাজের কাজ কিছু না হওয়ায় এবং তাদের টাকা আত্মসাৎ করায় এবার সেই রায়গঞ্জ ব্লকের স্বনির্ভর দলের কয়েকশ মহিলা 34 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন।

এদিন এই প্রসঙ্গে বাহিন একতা সংঘের সহ-সভানেত্রী মিঠু পাল বলেন, “2018 সালের স্কুল ইউনিফর্মে নয় লক্ষ টাকার কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য এক লক্ষ টাকা নগদ দেওয়া হয়েছিল। দলের মহিলারা সেই কাজ পাবে বলে জনপ্রতিনিধিরা আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু এখনও আমাদের সেই কাজ দেওয়া হচ্ছে না।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে এই ব্যাপারে শেরপুরের বাসিন্দা অনিমা রায় বলেন, “রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির একাংশ জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মীদের একাংশ মিলে আমাদের মহিলাদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা কাঠমানি নিয়েছে। টাকা দিতে আপত্তি করলে কাজ পাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। রাজ্য সরকার যখন আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে, তখন রায়গঞ্জে কিছু ধান্দাবাজ উল্টো পথে হাঁটছে। তাই এদিন আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছি।”

এদিকে তারা এদিন প্রতিবাদে নামলেও পুলিশ তাদের ওপর চরম অত্যাচার করেছে এবং লাঠিচার্জ করেছে বলে জানান স্বনির্ভর দলের মহিলা অঞ্জলি রায়, সীমা চক্রবর্তীরা। কিন্তু কেন এমনটা হল! যেখানে খোদ তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাটমানি যাতে না নেওয়া হয় তার জন্য সকলকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, সেখানে কেন এখনও নীচুতলায় সেই কাটমানি নেওয়া হচ্ছে!

এদিন এই প্রসঙ্গে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের ছিতা টুডু বলেন, “আমি পঞ্চায়েত সমিতির দায়িত্ব গ্রহণ করার পর কারও কাছে একটি টাকাও নিইনি। স্কুল ইউনিফর্মের বিষয়টা প্রশাসনের আধিকারিকরা দেখেন। তাই এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।” অন্যদিকে এই বিষয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক অমল আচার্য বলেন, “মহিলাদের টাকা যদি কেউ নিয়ে থাকে তবে তারা তাকে পাকড়াও করে সেই টাকা আদায় করুক। কাজের জন্য কেন মহিলারা টাকা দেবেন! পূজোর আগে রাস্তা অবরোধ করে এইভাবে মানুষকে অসুবিধায় ফেলা ঠিক নয়।”

এদিকে এইভাবে কাটমানির ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় তা নিয়ে পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেছে রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তকে। এদিন এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দিদিকে বলো যাত্রাপালা হচ্ছে, রাজ্যজুড়ে লুটপাটও চলছে। স্বনির্ভর দলের মহিলাদের সঙ্গে প্রতারণার প্রতিবাদে আগামী দিনে বড় আন্দোলন হবে।” সব মিলিয়ে উপর তলা থেকে দুর্নীতি বন্ধের জন্য যতই নির্দেশ দেওয়া হোক না কেন, নিচুতলায় যে এখনও কাটমানির রেওয়াজ চলছে, তা রায়গঞ্জের স্বনির্ভর দলের মহিলাদের এই আন্দোলনে আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!