এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > দিল্লি বলেই এতটা করতে পারলেন ভাইপো, বাংলায় মমতার দেখা পাওয়া তো অলীক স্বপ্ন!

দিল্লি বলেই এতটা করতে পারলেন ভাইপো, বাংলায় মমতার দেখা পাওয়া তো অলীক স্বপ্ন!

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- দিল্লিতে বাংলার প্রতি বঞ্চনার অভিযোগের ধর্না মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনেক বড় বড় কথা বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি বললেন যে, যতই পুলিশ নামানো হোক। তিনি নাকি মন্ত্রীর টেবিলে এই বাংলা থেকে আনা বঞ্চিতদের চিঠি ফেলে আসবেনই। আর যুবরাজের এই কথা শুনে তৃণমূলের কর্মীদের হাততালি ছিল চোখে পড়ার মত। তবে সাধারণ মানুষ কিন্তু ভাইপোর এই মন্তব্যকে বিরাট করে দেখছেন না। বরঞ্চ দিল্লির মাটিতে দাঁড়িয়ে এই ধরনের সভা করা এবং মন্ত্রীর কাছে যাওয়ার অনুমতি পাওয়া তৃণমূলের সৌভাগ্য বলেই মনে করছেন একাংশ।

বস্তুত, আজ তৃণমূলের ঝর্ণা মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলেছেন বাংলার যুবরাজ। নিজেকে হিরো হিসেবে তুলে ধরে তিনি এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে, তাদের আন্দোলনের কাছে বিজেপি মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু বিজেপি কোনো আন্দোলনের কাছে মাথা নত করতে রাজি নয়। তারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে মান্যতা দেয়। তাই দিল্লির মতো জায়গাতেও আঞ্চলিক দল হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস সভা করতে পারলো। পুলিশ দিয়ে উঠিয়ে দেওয়া হয়নি। বরঞ্চ তারা যে সমস্ত কথা বলেছেন, বিজেপিকে যেভাবে আক্রমণ করেছেন, তার সবটাই সহ্য করে নিয়েছে গেরুয়া শিবির। আর তারপর মন্ত্রীর কাছে গিয়ে বাংলা থেকে আনা 50 লক্ষ চিঠি জমা করার জন্য কৃষি ভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও বা সেই চিঠির মধ্যে কতগুলো ফলস বা সাজানো চিঠি রয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তবে মন্ত্রীর টেবিলে চিঠি জমা করার যে কথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে উঠে এলো, তা দেখে অনেকে বলছেন, বাংলায় এই অভিষেকবাবুর পিসি ঠিক কি করেন? তার সঙ্গে কোনো বিরোধী দলের বিধায়ক তো দূরের কথা, স্বয়ং বিরোধী দলনেতা দেখা করতে চাইলেও কি দেখা পাওয়া যায়?

একাংশের মতে, বাংলায় দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া ডিএর দাবিতে সরকারি কর্মচারীর আন্দোলন করছেন। তাদেরকে সহানুভূতি দেওয়া তো দূরের কথা, তাদের মঞ্চে গিয়ে একবার দেখা করতে পারছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব। মুখ্যমন্ত্রী তাদেরকে “ঘেউ ঘেউ করবেন না” বলে অপমান করছেন। বিরোধীরা স্বাস্থ্য ভবনে গেলে তাদেরকে বাধা দেওয়া হয় পুলিশ দিয়ে। আর দিল্লিতে সেই তৃণমূল সভা করতে পেরে এখন বড় বড় হরিনামের কীর্তন শোনাচ্ছে। যারা বাংলায় গণতন্ত্রের কন্ঠরোধ করে, যাদের নেত্রীর দেখা পাওয়া কার্যত অলীক স্বপ্ন বঞ্চিত চাকরি প্রার্থী থেকে শুরু করে সরকারি কর্মচারীদের কাছে, সেই দলের নেতার মুখ থেকে এত বড় বড় কথা মানায় না বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপি তৃণমূলকে যে সুযোগ দিল, তাতে সত্যিই গণতন্ত্রের প্রতি যে গেরুয়া শিবির শ্রদ্ধা জানাচ্ছে, তা আরও একবার প্রমাণিত হয়ে গেল। তৃণমূল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী না থাকার কারণে সেই দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী তাদের সঙ্গে দেখা করেছে। তবে বাংলায় এই তৃণমূল বিজেপির ওপর কতই না অত্যাচার করে। কত বিজেপি কর্মী পুলিশি অত্যাচারের কারণে, তৃণমূলের কারণে ঘরছাড়া বলে অভিযোগ। তবে এবার সুযোগ পেয়েও দিল্লির মাটিতে সেই তৃণমূলের গায়ে একটাও আঁচড় কাটতে দেয়নি ভারতীয় জনতা পার্টি। ফলে এটাই সর্বভারতীয় বিজেপি, আর এটাই পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যের পার্থক্য। তাই “মন্ত্রীর টেবিলে চিঠি ফেলে আসবই” বলে যে গর্জন ছাড়লেন ভাইপো, তাতে তিনি এই গর্জন না ছাড়লেও, মন্ত্রী তাদের সঙ্গে দেখা করতেনই। কারণ বিজেপির কাছে গণতন্ত্র রক্ষার মন্ত্র সবার আগে। কিন্তু দিনের শেষে এই দিল্লির মাটি থেকে সমগ্র পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার পর তৃণমূল নেতারা কি বাংলায় গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে বিন্দুমাত্র শিক্ষা নেবেন, তাদের দলের নেত্রী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কোনো বঞ্চিতদের সঙ্গে, কোনো প্রতিবাদী ব্যক্তির সঙ্গে, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে তাদের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করেন না। কিন্তু দিল্লিতে তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেখা করার পর কি এবার বদলাতে শুরু করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? গনতন্ত্রের কন্ঠরোধ করার যে প্রবণতা পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে শুরু হয়েছে, তা কি অবশেষে বন্ধ হবে? প্রশ্ন তুলছে সমালোচক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!