দলীয় কর্মীদের তুমুল ক্ষোভের মুখে তৃণমূলের হেভিওয়েট মন্ত্রী-বিধায়ক, তুলকালাম উত্তরবঙ্গে উত্তরবঙ্গ তৃণমূল রাজনীতি রাজ্য July 2, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনা আবহে এমনিতেই সমস্যার শেষ নেই। তার ওপরে নিত্যনতুন রাজনৈতিক তরজার মুখে পড়ে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠছে রাজ্যের শাসকদলের বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, কোথাও শাসকদলের কার্যালয় ঘিরে সাধারণের বিক্ষোভ, কোথাও আবার প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের ঘিরে চলছে লাগাতার স্লোগান। এই অবস্থায় আবার দলের অন্দরেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে তীব্র সংকটে এই মুহূর্তে বাংলার শাসক দল বলে মনে করা হচ্ছে। এবার জলপাইগুড়ি জেলা থেকে উঠে এসেছে কর্মী বিক্ষোভের কথা। সম্প্রতি সেখানে একটি সেতুর নামকরণ নিয়ে রীতিমতো ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল। এবং এই পুরো ব্যাপারটাই ঘটেছে রাজ্যের উন্নয়ন মন্ত্রীর সামনে। ঘটনা ঘিরে রীতিমতো রাজনৈতিক চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। এবার রাজগঞ্জ ব্লকের কুকুরযান গ্রাম পঞ্চায়েতের হাজির ঘাট গ্রামে তালমা নদীর ওপর সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে রীতিমতো দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়। সম্প্রতি রাজগঞ্জ ব্লকের কুকুরযান গ্রাম পঞ্চায়েতের হাজির ঘাট গ্রামে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তর থেকে তালমা নদীর উপর একটি সেতু তৈরি করা হয়। সেই সেতুর উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার বিকেলে। উদ্বোধনে আসেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কিন্তু সেখানে মন্ত্রীর সামনেই শুরু হয় গন্ডগোল। জানা গেছে, এই সেতুটির উদ্বোধনের আগে নাম ছিল হাজির ঘাট সেতু। কিন্তু নতুন সেতু তৈরি করার পর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তর থেকে সেতুটির নাম বদলে দেওয়া হয় মাহরুম আব্দুল সাত্তার সেতু। আর তাই নিয়ে শুরু হয় তীব্র গন্ডগোল। জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠ রাজগঞ্জের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি মোশারফ হোসেন এর অনুগামী স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীরা এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের সঙ্গে শুরু হয় তুমুল বচসা। এরপরেই পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। পরে উন্নয়নমন্ত্রীর কাছ থেকে হাজী সাহেবের নাম যুক্ত হওয়ার আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভকারীরা ফিরে যান বলে জানা গেছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এ প্রসঙ্গে হাজী পরিবারের সদস্য নুর আলম জানিয়েছেন, তাঁর দাদুর দান করা জমিতেই এই সেতু বাম আমলে তৈরি হয়েছিল। তখন সেতুটির নাম ছিল হাজির ঘাট সেতু। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে সেতুর নাম বদলে দেওয়া হয়েছে। আর তাই নিয়ে শুরু হয়েছে গন্ডগোল। অন্যদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানিয়েছেন, বর্তমানে সেতুর নামকরণ করা হয়েছিল এলাকার মহান নেতা আব্দুল সাত্তার এর নামে। তবে আগামী দিনে হাজী সাহেবের নামে যে উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে সে ব্যাপারেও আশ্বাস দেন তিনি। অন্যদিকে রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় পুরো ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, কিছু ব্যক্তি এসে গন্ডগোল করেছিল ঠিকই। কিন্তু পরে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করেন। খগেশ্বর রায় আরো জানান, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের আশ্বাসে পুরো সমস্যা মিটে গেছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনা থেকে রাজ্যের শাসক দলের অন্দরে বহু জায়গায় যে দলীয় কর্মীদের ক্ষোভ জমা হচ্ছে সেকথা ক্রমশ প্রকাশ হচ্ছে। আগামী দিনের রাজনৈতিক ময়দানে টিকে থাকতে রাজ্যের শাসক দলের প্রতিনিধিদের অবশ্যই দলীয় কর্মীদের ক্ষোভ প্রশমন করা আশু কর্তব্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। শুধুমাত্র ব্রিজের নামকরণ করা নিয়ে যেভাবে শাসক দলের অন্দরেই তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হল, তা কিন্তু চিন্তায় ফেলছে শাসক মহলকে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, 2021 এর বিধানসভা নির্বাওনের আগে পারবে কি শাসক দল দলীয় কর্মীদের একজোট করতে নাকি এগিয়ে থাকবে চিরপরিচিত গোষ্ঠীদ্বন্দ! আপনার মতামত জানান -