এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > দন্ডি কেটে রাস্তায় কর্মচারীরা, আর কবে চোখ খুলবেন মমতা ? চরম লজ্জা রাজ্যের!

দন্ডি কেটে রাস্তায় কর্মচারীরা, আর কবে চোখ খুলবেন মমতা ? চরম লজ্জা রাজ্যের!

 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-তার সরকার নাকি মানবদরদী সরকার! মাঝেমধ্যেই বড় বড় সব দাবি করতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু যে কর্মচারীদের নিয়ে এই সরকারের কাজকর্ম, সেই কর্মচারীদের প্রতি বিন্দুমাত্র সহানুভূতিশীল নয় রাজ্য। ইতিমধ্যেই তা বেশ কিছু বিষয়ে স্পষ্ট হয়েছে। বিরোধীরা অন্তত তেমনটাই বলছে। বলা বাহুল্য, বকেয়া ডিএর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় বসে আন্দোলন করছেন সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। কিন্তু সেদিকে নজর নেই এই সরকারের। তবে এবার রাজ্যকে চরম লজ্জায় ফেলে দিয়ে দন্ডি কেটে নিজেদের অভাব অভিযোগ জানালেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলনকারীরা।

সূত্রের খবর, শহীদ মিনারের তলায় দীর্ঘদিন ধরে ডিএর দাবিতে আন্দোলনকারীরা আজ একটি মিছিল করেন। যেখানে ধর্মতলায় দন্ডি কেটে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায় সরকারি কর্মচারীদের একাংশকে। জানা গিয়েছে, তারা এই মিছিল নিয়ে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তার কাছে তাদের অভাব অভিযোগের বিষয়টি তুলে ধরবেন। আর প্রকাশ্য রাস্তায় একেবারে ডিএর দাবি তুলে সরকারি কর্মচারীদের একাংশ যেভাবে দণ্ডী কাটলেন, তাতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে মহানগরীতে। রোদ, ঝড় ঝল, বর্ষায় এই সমস্ত কর্মচারীরা আন্দোলন করছেন। অথচ সেই দিকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না রাজ্যের সরকারকে। বরঞ্চ তৃণমূলের বিভিন্ন নেতারা সেই আন্দোলনকারীদের মঞ্চকে বিরোধীদের মঞ্চ বলে কটাক্ষ করছেন। কিন্তু এই ঘটনার পরেও যদি সরকারের লজ্জা না হয়, তাহলে আর কিছু বলার নেই। সত্যিই আর বলার মত পরিস্থিতি নেই। কারণ এত কিছুর পরেও যাদের ঘুম ভাঙবে না, তাদের কর্মচারীদের কষ্টে যে কিছুই যায় আসে না, তা স্পষ্ট বলেই দাবি একাংশের।

বিরোধীদের কটাক্ষ, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রী এবং বিধায়কদের ভাতা বাড়িয়েছেন। কিন্তু এই সমস্ত বকেয়া ডিএর দাবিতে আন্দোলনকারী সরকারি কর্মচারীদের দিকে তার নজর নেই। তারা যদি ডিএর দাবি করে, তখন মুখ্যমন্ত্রী তাদের সঙ্গে কোনো এক পশুর তুলনা করে বসবেন। এই তো হচ্ছে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের মানসিকতা। সুতরাং তার কাছ থেকে সরকারি কর্মচারীরা কেন, রাজ্যের সাধারণ মানুষ আর কিছুই আশা করেন না। শুধুমাত্র ভাতা, ভর্তুকি দিয়ে এই রাজ্যকে পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা এই সরকারের। তবে এদিনের এই আন্দোলন, প্রতিবাদ হয়ত সরকারকে চাপে ফেলবে না। কিন্তু রাজ্যের মানুষের কাছে এই সরকারের মানসিকতা নিয়ে, মূল্যবোধ নিয়ে একটা বড় প্রশ্ন তৈরি হবে বলেই দাবি পদ্ম শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী যতই বলুন, তৃণমূলের পক্ষ থেকে যতই বলা হোক যে, এই সমস্ত সরকারি কর্মচারীরা যে মঞ্চ তৈরি করেছেন, সেটা বিরোধীদের মঞ্চ। কিন্তু এই কর্মচারীদের নিয়েই তো কাজ করতে হয় সরকারকে। সরকারের কাছে তো তারা সকলেই সন্তানসম। তাহলে নিজের কর্মচারীদের কষ্ট দেখেও কেন বিবেকবোধ জাগ্রত হচ্ছে না রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের? তার ভাড়ারে অর্থ নেই, তিনি টাকা দিতে পারছেন না, সব যুক্তি মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু একবারটি কি সেই আন্দোলনকারীদের মঞ্চে এসে তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে সহমর্মিতার বাণী দিতে পারেন না রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান! তিনি তো বিদেশে শিল্প আনার নাম করে টানা 12 দিন সেখানে কাটিয়ে আসতে পারেন। কিন্তু যে রাজ্যের মানুষ তাকে মুখ্যমন্ত্রী করেছেন, সেই রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ব্যথা তার কানে পৌঁছয় না? কিছুদিন আগে শুভেন্দু অধিকারী এই সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন মঞ্চে এসে তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। যে বিরোধী দলনেতার সঙ্গে প্রতিমুহূর্তে কম্পিটিশন করার চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী, তার সঙ্গে এই ব্যাপারে কম্পিটিশন করতে পারছেন না বাংলার প্রশাসনিক প্রধান! তাহলে অন্তত সেই সরকারি কর্মচারীরা একটু হলেও তো আশার আলো দেখতে পেতেন। তাদের তো এইভাবে বাড়ি ঘর ছেড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগকে উপেক্ষা করে রাস্তায় দন্ডি কেটে প্রতিবাদে ভাষা সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে হত না। তবে এতকিছুর পরেও সরকারের হুঁশ যে ফিরবে না, তাদের পক্ষ থেকে যে আবার এই আন্দোলনকারীদের ছোট করে আক্রমণ করা হবে, সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না সমালোচক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!