তৃণমূলের বিরুদ্ধে একের পর এক “ভুয়ো” অভিযোগ? দিলীপ ঘোষকে পদত্যাগ করতে বললেন ফিরহাদ হাকিম কলকাতা রাজ্য April 29, 2020 করোনা ভয়াবহতা দিনকে দিন বাড়ছে বাংলায়। পরিস্থিতি বাগে আনতে প্রত্যেকে চেষ্টা করলেও, অবস্থার ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। আর এমতাবস্তায় সরকার পক্ষকে বারবার আক্রমণ করছে বিরোধীরা। সঠিক পরিকাঠামোর অভাব, রেশনে দুর্নীতি সহ বিভিন্ন বিষয়ে সরব হচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি। পাল্টা আক্রমণ ধেয়ে আসছে সরকারের তরফে। করোনার মত ভয়াবহ রোগকে মোকাবিলা করা অপেক্ষা যেভাবে বাংলায় শাসক-বিরোধী তরজা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে হতাশ করছে গোটা বঙ্গবাসীকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাজনৈতিক পারদ কিছুতেই কমছে না। এবার করোনা মোকাবিলা নিয়ে রাজ্যের পরিকাঠামো সম্পর্কে ফের রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। যার পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে সেই দিলীপবাবুকে ইস্তফা দেওয়ার পরামর্শ দিলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আর শাসক-বিরোধী দুই দলের দুই হেভিওয়েট নেতার এই তরজা এখন রীতিমত শোরগোল ফেলে দিয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “রাজারহাটে করোনার কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে একই ঘরে একাধিক পরিবার রয়েছে। কোনো সুরক্ষা নেই। রোগীদের ঠিকমতো চিকিৎসা হচ্ছে না। বাঙ্গুরে ভর্তি রোগীদের ডাক্তাররা দেখছেন না। দেহ পড়ে থাকছে ঘন্টার পর ঘন্টা।” শুধু তাই নয়, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যের পক্ষ থেকে ক্যাবিনেট কমিটি গঠন করা নিয়েও কটাক্ষ করেন দীলিপবাবু। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রচারমুখী কাজ করছেন। করোনা মোকাবিলার নামে এক মাস ধরে শুধু রাজনীতি করছেন। পরিস্থিতি সামলাতে কিছু সদর্থক ব্যবস্থা নেননি। যখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে, সামলাতে পারছেন না, তখন কমিটি করে চারজন মন্ত্রী ও আমলাদের সামনে এগিয়ে দিচ্ছেন। ম্যাচ হেরে যাচ্ছেন বলে ময়দান ছেড়ে পালাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” আর সবশেষে প্রথম থেকেই দিলীপবাবু যে অভিযোগ করে আসছেন, সেই অভিযোগ আরও একবার করেন তিনি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - যেখানে তিনি বলেন যে, ডাক্তাররাও এই করোনা আক্রান্তে মারা যাচ্ছে। কিন্তু মৃতদেহকে নিয়ে রাজনীতি করছে শাসক দল। গোপনে দেহ পুড়িয়ে দিচ্ছে তারা। আর এই সমস্ত কথা তুলে ধরে রাজ্যের শাসক দলকে কটাক্ষ করার পরেই পাল্টা তৃণমূলের তরফে বিবৃতি আসতে শুরু করে। এদিন এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে বসেন কলকাতা পৌরসভার মেয়র তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে দীলিপবাবুর প্রশ্নের জবাবে তিনি রীতিমত আক্রমণাত্মক ছিলেন। তিনি বলেন, “ঘরে বসে মিথ্যার বেসাতি না করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে একবার বাঙ্গুর বা রাজারহাটে চলুন। রাজনৈতিক স্বার্থে যে অভিযোগ করছেন, তার অন্তত একটা প্রমাণ করুন। প্রমাণ করতে না পারলে সাংসদ থেকে এখনই পদত্যাগ করুন।” অন্যদিকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্যাবিনেট কমিটি গঠন নিয়েও সরব হন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশ বলছে করোনা মোকাবিলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের সেরার সেরা।” ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী ঘরে বসে সই করে শুধু নির্দেশ দিচ্ছেন না, নিজে রাস্তায় নেমে ডাক্তার, নার্স, পুলিশ থেকে শুরু করে সাফাই কর্মী সবাইকে উৎসাহিত করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর পথে তৃণমূল কর্মীরাও পাড়ায় পাড়ায় সামাজিক দূরত্ব রাখতে সবাইকে বাধ্য করছেন। ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন। বিজেপি শুধু ঘরে বসে বিবৃতি দিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে।” শুধু তাই নয়, কেন্দ্রের উদ্দেশ্যেও এদিন সরব হয়ে দিলীপবাবুদের একহাত নেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ঘরের বাইরে কি হচ্ছে, কেন্দ্র রাজ্য সরকার কি করছে, তার কোনো খবর নিচ্ছেন না। উনি নিজেই জানেন না, আজ কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশিকা জারি করে বলেছে, যারা বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে পারে, সে গাইডলাইন মেনে থাকবেন। আসলে শূন্য কলসি বাজে বেশি। ঘরে বসে রাজনীতি করলে এর থেকে বেশি কিছু আশা করা যায় না।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময় রাজনৈতিক তরজা ভুলে যাওয়া উচিত প্রতিটি রাজনৈতিক দলের। কিন্তু তা না করে যেভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন শাসক-বিরোধী নেতারা, তাতে সাধারণ মানুষের দুর্দশা আদৌ কি কমবে! মানুষ চায় সুরাহা। তাই সেই দিকটিতে লক্ষ্য না রেখে যেভাবে একে অপরের দিকে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করতে ব্যস্ত রয়েছেন, তাদের বাংলার মানুষের হতাশা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনার মতামত জানান -