এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > অমিত শাহের চিঠিতে বেড়ে গেল “গোর্খাল্যান্ড” রহস্য! তীব্র জল্পনা পাহাড়ের রাজনীতিতে

অমিত শাহের চিঠিতে বেড়ে গেল “গোর্খাল্যান্ড” রহস্য! তীব্র জল্পনা পাহাড়ের রাজনীতিতে

দীর্ঘদিন পাহাড়ে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি নানা বিতর্ক উস্কে দিয়েছিল। তবে বাংলা থেকে কখনোই পাহাড় আলাদা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যের বর্তমান সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মাঝেমধ্যেই সেই গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হতে দেখা গেছে কাঞ্চনকন্যাকে।

কিছুদিন আগেই টানা আন্দোলনের শেষে শান্ত হয়েছিল পাহাড়। কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার সংসদের দুই কক্ষেই কাশ্মীরের 370 ধারা অবলুপ্তির পর এবং কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার পরই পাহাড়ে ফের গোর্খাল্যান্ডের দাবি উঠতে শুরু করে।

আর এরই মাঝে সেই বিতর্ককে আরও উস্কে দিয়ে দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তাকে লেখা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর চিঠি চরম চাঞ্চল্য ছড়িয়ে দিল। জানা গেছে, গত 11 জুলাই দিল্লি পুলিশের বিশেষ বাহিনী থেকে গোর্খাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটি চিঠি পাঠান দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা।

আর সেইখানে পাহাড়, তরাই ডুয়ার্স এবং লাদাখে বসবাসকারী গোর্খাদের বিশেষ বাহিনীতে পুনর্নিয়োগের দাবি জানাতে দেখা যায় তাকে। আর দলীয় সাংসদের সেই চিঠির জবাব দিতে গিয়েই এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর উত্তরে “গোর্খাল্যান্ড” শব্দটি উঠে আসায় তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হল।

অনেকে বলছেন, কেন এইভাবে আগুনে ঘি ঢাললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী! একেই তো পাহাড়ের কিছু মানুষের দীর্ঘদিন ধরে দাবি গোর্খাল্যান্ড। সেখানে কেন তিনি নিজের দলীয় সাংসদকে চিঠির উত্তর দিয়ে সেই শব্দটি ব্যবহার করে বিতর্ককে আরও বাড়িয়ে তুললেন! তাহলে কি এটা ইচ্ছাকৃত ভাবেই করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী!

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার পর দার্জিলিংয়ের পৃথক রাজ্যের দাবি উঠতে শুরু করেছে। আর সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এই চিঠি সেই দাবিতে আরও নতুন করে ইন্ধন যোগাবে। তবে এই গোর্খাল্যান্ড শব্দটি নিয়ে যে রাজ্য বিজেপি যে অনেকটাই সাবধানী, তা দুর্গাপুরে এদিন তাদের চিন্তন বৈঠকেও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

কোনোভাবেই যাতে গোর্খাল্যান্ড শব্দটিকে প্রচার করা না হয়, সেই জন্য সকলকে সতর্ক করে দিয়েছেন তারা। কিন্তু সেই জায়গায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেই একই শব্দ প্রয়োগ করে কেন এত বড় ভুল করলেন! তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করলে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিরোধীদের তরফে জোর কটাক্ষ করা হয়েছে।

এদিন এই প্রসঙ্গে জিটিএ প্রধান বিনয় তামাং বলেন, “বিজেপি গোর্খাল্যান্ডের কথা বলে ভোট নিয়ে এখন পাহাড়ের মানুষকে ভাওতা দিচ্ছে। গোর্খাল্যান্ড করে দিতে না পারলেও মানুষকে বোকা বানাতে এই শব্দটি ব্যবহার করছে।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে পাহাড়ের তৃণমূল সভাপতি লাল বাহাদুর রাই বলেন, “বিজেপি পাহাড়ে কাজ না করে এই সব কথা বলে শান্ত পাহাড়কে অশান্ত করতে চাইছে।”

একইভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়াতে দেখা গেছে বামেদেরকেও। এদিন এই প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূল-বিজেপি কোনো পক্ষই পাহাড় সমস্যার সমাধান করতে চাইছে না। কেউ ঘুরিয়ে, আবার কেউ বা সরাসরি গোর্খাল্যান্ডের কথা বলে পাহাড়ে অশান্তি ছড়াচ্ছে।” তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গোর্খাল্যান্ড শব্দ ব্যবহারে কিছুটা হলেও ড্যামেজ কন্ট্রোল দিতে দেখা গেছে দার্জিলিংয়ের বিজেপি বিধায়ক নীরজ জিম্বাকে।

তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন এই শব্দ ব্যবহার করেছেন, তার ব্যাখ্যা দিতে পারব না। উনি হয়ত পাহাড়ের মানুষের আবেগকে সম্মান দিতেই এই শব্দটি ব্যবহার করে থাকবেন।” কিন্তু যে শব্দটি নিয়ে মাঝেমধ্যেই গণ্ডগোলের সূত্রপাত হয়, সেই শব্দটি উচ্চারণ করে কেন নিভে যাওয়া আগুনকে ফের জ্বালিয়ে তোলার চেষ্টা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী! এখন তা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে সমালোচক মহলের একাংশ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!