প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বর্তমানে বিভিন্ন জেলায় যে সমস্ত তৃণমূল নেতারা দায়িত্ব পাচ্ছেন, তাদের নাম সমীক্ষার মাধ্যমে তুলে তা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জমা দিচ্ছে প্রশান্ত কিশোরের টিম। কিন্তু এবার সেই প্রশান্ত কিশোরের টিমের বিরুদ্ধেই ঘুষ নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করার অভিযোগ উঠতে শুরু করল। সূত্রের খবর, বর্তমানে কোচবিহার জেলার নতুন জেলা কমিটি গঠন হওয়ার পরেই দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করতে দেখা গেছে কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামীকে।

আর এবার সেই হেভিওয়েট তৃণমূল বিধায়ক তৃনমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে প্রশান্ত কিশোরর টিমের বিরুদ্ধে ঘুষ খাওয়ার অভিযোগ তুলে মিথ্যা রিপোর্ট তৈরি করা কথা বলেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল বিধায়কের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এবার ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। বস্তুত, গত লোকসভা নির্বাচনের পর দলের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে তৃণমূলের রাজনৈতিক রননীতিকার করা হয় প্রশান্ত কিশোরকে।

আর তারপরেই নিজের টিম গঠন করে বিভিন্ন জেলায় কোন নেতা ভালো কাজ করছে, তার সমীক্ষা করতে শুরু করে সেই প্রশান্ত কিশোর। এদিকে তার টিমের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জেলায় কাকে দায়িত্ব দিলে ভালো হয়, তার রিপোর্ট প্রশান্ত কিশোরের কাছে আসার পরেই তা চলে যায় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশান্ত কিশোর এবং তার টিমের মতামত অনুযায়ী বিভিন্ন জেলায় সংগঠন সাজাতে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস।

সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন জেলায় নতুন করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই কমিটি নিয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করতে দেখা গেছে একাধিক তৃণমূল নেতৃত্বকে। কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী ইতিমধ্যেই সমস্ত দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার কথা বলেছেন। আর এবার যেভাবে জেলায় কোন নেতাকে দায়িত্ব দিলে ভালো হয়, তা নিয়ে প্রশান্ত কিশোরের টিমের করা সমীক্ষার ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে দিলেন এই তৃণমূল বিধায়ক, তাতে তৃণমূলের অন্দরে ব্যাপক গুঞ্জন তৈরি হয়েছে।

জানা যায়, তৃণমূলের জেলা এবং ব্লক কমিটি নিয়ে দলের অন্দরেই ব্যাপক মতানৈক্য রয়েছে। মূলত ব্লক কমিটি গঠনের আগে প্রত্যেক বিধায়কদের কাছ থেকে তাদের তালিকা নেওয়া হয়। আর তারপরেই জেলা সভাপতির কাছ থেকে তালিকা নিয়ে প্রশান্ত কিশোরের টিমের পক্ষ থেকে একটি তালিকা করে পাঠানো হয়। তবে তারপরই কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী অভিযোগ করেন বিধায়কদের মতামত না নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আর এবার সেই তৃণমূল বিধায়ক প্রশান্ত কিশোরের টিমের বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করার অভিযোগ তুললেন।

এদিন মিহির গোস্বামী বলেন, “নির্দিষ্ট কিছু নেতারা আতিথিয়তায় প্রশান্ত কিশোরের টিমের সদস্যরা থাকছেন। তাদের মত রিপোর্ট তৈরি করেই পাঠাচ্ছেন।” আর একজন তৃণমূল বিধায়কের মুখ থেকে দলের রাজনৈতিক রণনীতিকানের টিম নিয়ে এই ধরনের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যে ব্যাপক সমস্যায় পড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এদিন মিহির গোস্বামীর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা জবাব দিয়েছেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বলেন, “তৃনমুল গণতান্ত্রিক দল। প্রত্যেকেই নিজের মত জানাতে পারেন। তবে বিধায়ক আমাদের অভিভাবক। রাজ্য নেতৃত্ব তার সঙ্গে কথা বলছেন।” তবে জেলা সভাপতি যে কথাই বলুক না কেন, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশান্ত কিশোরের টিমকে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে চাইছে।

কিন্তু সেই সংগঠনকে শক্তিশালী করতে গিয়ে যেভাবে সেই প্রশান্ত কিশোরের টিমের বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে বাছাই করা নেতাদের দায়িত্ব দেওয়ার অভিযোগ তুললেন এক তৃণমূল বিধায়ক, তাতে রীতিমত চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। যদি সত্যিই এই ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে আদতে তৃণমূলের সংগঠনের শ্রীবৃদ্ধি হওয়া অপেক্ষা সমস্যা সমস্যাতেই থেকে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সব মিলিয়ে হেভিওয়েট তৃণমূল বিধায়কের প্রশান্ত কিশোরের টিমের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতৃত্ব কতটা অস্বস্তিতে পড়ে এবং কোন দিকে এগোয় গোটা পরিস্থিতি, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।