এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > হেভিওয়েট নেতাকে বহিস্কার করেও রেহাই নেই! আরও চওড়া শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফাটল!

হেভিওয়েট নেতাকে বহিস্কার করেও রেহাই নেই! আরও চওড়া শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফাটল!

উত্তর দিনাজপুর জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কিছুতেই কমছে না। রায়গঞ্জ সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান মাসুদ মহম্মদ নাসিম এহসানকে দল থেকে বহিষ্কার ইস্যুতে এবার গোয়ালপোখর ব্লকে শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে চলে এল। বস্তুত, বর্তমানে রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী গোলাম রব্বানির খাসতালুকে খোদ শাসকদলের এই পরিণতি জেলাজুড়ে রাজনৈতিক মহলের তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

সূত্রের খবর, বুধবার দুপরে গোয়ালপোখর ব্লক কমিটির বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যান তথা কোর কমিটির অন্যতম সদস্য মজাহার আলম ও কোর কমিটির সদস্য উজার আলম ইসলামপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। যেখানে তারা বলেন, “দলের ব্লক সভাপতি গোলাম রসুল ওরফে মনি বলেছেন যে আমরা ব্লকের নেতৃত্ব মিটিং করে নাসিম সাহেবকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু আমরা সংবাদ মাধ্যমের সামনে জানাতে চাই নাসিম সাহেবকে বহিষ্কারের বিষয়ে ব্লকে কোনও মিটিং হয়নি। দুই তিন মাস আগে একটি মিটিং হয়েছিল। ওই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় নাসিম সাহেবকে শো-কজ করা হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তাঁকে শো-কজ করা হয়নি। ব্লক কমিটির বেশিরভাগ নেতাই সেসময় বহিষ্কারে মত দেননি। রাষ্ট্রমন্ত্রী গোলাম রব্বানি ও ব্লক সভাপতি সমস্ত সভাতেই বলেন ব্লকে যেকোনও সিদ্ধান্ত সবাই মিলে নেব। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। তাঁরা দুই ভাই নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। অন্যদের কিছুই বলছেন না।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের গোয়ালপোখর ব্লক সভাপতি গোলাম রসুল ওরফে মনি বলেন, “সোমবারের মিটিংয়ে মন্ত্রী গোলাম রব্বানি এবিষয়ে ঘোষণা করেছিলেন। ওই মিটিংয়ে সকলেই উপস্থিত ছিলেন।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, “কয়েক মাস আগেই দলের জেলা সভাপতি পরিবর্তন হয়েছেন। ফলে সমস্ত কমিটিই ভেঙে গিয়েছে। কানাইয়ালাল আগরওয়াল জেলা সভাপতি হয়ে গোলাম রসুলকেই ফের ব্লক সভাপতি করেছেন। কিন্তু ব্লক সভাপতি এখনও বাকি কমিটি তৈরি করেননি। ফলে ব্লক সভাপতি বাদে কেউ দলের পদে নেই। ফলে যাঁরা বলছেন তাঁদের কোনও পদে নেই। লোকসভা নির্বাচনে নাসিম এহসান দলের হয়ে কাজ করেননি। অন্য দলের হয়ে কাজ করেছেন। ভোট শেষ হওয়ার পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপির মিটিংয়ে তিনি ছিলেন এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। আমরা দলের জেলা সভাপতিকে বিষয়টি জানাই। আমি ও ব্লক সভাপতি জেলা সভাপতিকে প্রস্তাব পাঠাই। তারই ভিত্তিতে জেলা সভাপতি তাঁকে সাসপেন্ড করেন। আমরা সোমবার একটি সভা করি ওই সভায় দলের বিভিন্ন পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সদস্য এবং সমস্ত নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আমি ঘোষণা করি আমাদের প্রস্তাবে জেলা সভাপতি নাসিম সাহেবকে সাসপেন্ড করেছেন। আমরা জেলা সভাপতির এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই।”

তৃণমূল সূত্রের খবর, এই নাসিম সাহেবকে বহিষ্কারের ঘটনায় ব্লক কমিটির অনেক তৃণমূল নেতাই তার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। যার ফলে নাসিম সাহেবকে বহিস্কার নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েক বছর থেকেই এই জেলায় প্রতিটি ব্লকেই কম বেশি তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। কিন্তু এতদিন তা কতটা প্রকাশ্যে আসেনি। তবে এবার জেলার একমাত্র মন্ত্রী গোলাম রব্বানির নির্বাচিত এলাকা গোয়ালপোখরে গোষ্ঠী সংঘর্ষ নিয়ে সর্বত্র গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গোয়ালপোখরের বিধায়ক গোলাম রব্বানি মন্ত্রী এবং তাঁর ভাই গোলাম রসুল ব্লক সভাপতি ও জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ, তাঁর ভাই বউ মুস্তরি বেগম গোয়ালপোখর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। ফলে দলের যাবতীয় সিদ্ধান্ত তাঁরাই নেন বলে অভিযোগ। তবে এতদিন অন্যরা এর বিরোধিতা করার সাহস না পেলেও নাসিম সাহেবকে বহিষ্কার ইস্যুতে এবার একাংশ নেতা-কর্মীরা সেই গোলাম রাব্বানী এবং তার পরিবারের তীব্র বিরোধিতায় নামতে শুরু করেছেন। যা উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের অন্দরে বড়সড় অশনিসংকেত বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!