মিটেও মিটছে না! ‘ভাইপোর’ সঙ্গে হেভিওয়েট তৃণমূল মন্ত্রীর দ্বন্দ্ব ঘিরে তীব্র অস্বস্তি শাসকদলে উত্তরবঙ্গ রাজ্য January 5, 2019 সম্পর্ক অবনতির আঁচ পাওয়া গিয়েছিল আগেও। প্রকাশ্যে কেউ এব্যাপারে কিছু স্বীকার না করলেও তাঁদের পারস্পরিক মনোমালিন্য যে জারি রয়েছে সেটারই প্রমাণ দিয়ে দিল এদিনের কোচবিহারের অনুষ্ঠান। কথা হচ্ছে কোচবিহারের সংসদ সদস্য পার্থপ্রতিম রায় এবং জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের। রবীন্দ্রনাথ বাবুকে কাকা বলেই সম্বোধন করেন পার্থপ্রতিম বাবু,একথা অজানা নেই রাজনীতিসচেতন মানুষের। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁদের সম্পর্কের চাপানউতোর নজরে এসেছে রাজনৈতিকমহলের। জল্পনাকে উস্কে দিয়ে এদিন ফের তাঁদের সম্পর্কের তিক্ততা প্রকাশ্যে এল। গতকাল কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংসদ সদস্যের উন্নয়ন তহবিল থেকে কেনা বাস প্রদানের অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ বাবুকে প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি সেই অনুষ্ঠানে আসেন নি। অনুষ্ঠানে পার্থবাবুর সঙ্গে বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন,স্থানীয় বিধায়ক মিহির গোস্বামী হাজির হলেও ছিলেন না উন্নয়নমন্ত্রী। উক্ত ঘটনায় শাসকদলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ফের গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে রবীন্দ্রনাথ বাবু কেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি শাসকদল। লোকসভা ভোটের আগে বিতর্কের সমস্ত সম্ভাবনাকে এড়ানোর চেষ্টায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন কেবল,এমনটাই অভিমত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের৷ শুধুমাত্র ব্যস্ততার কারণেই রবীন্দ্রনাথ বাবু অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি,এমনটাই জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়। ওদিকে,দলগত কোনো বিভাজন নেই বলেই দাবীতে জানালেন পার্থবাবু্। তিনিও মন্ত্রীর ব্যস্ততাকেই হাইলাইট করলেন। ওদিকে যাকে নিয়ে এতো গুঞ্জন সেই রবীন্দ্রনাথ ঘোষও পার্থপ্রতিমবাবুর অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকতে পারার কারণ হিসাবে নিজের ব্যস্ততা কারণকেই সামনে রাখলেন। জানালেন, “কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে কোনও ‘লবি’ করতে চায় করতে পারে। কিন্তু আবার বলছি দলের কর্মীরা আমাদের সম্পদ। সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে চলতে হবে। এদিন আমার অনেক কর্মসূচি ছিল। সেকারণে যেতে পারিনি।” প্রসঙ্গত,পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গেই ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে রয়েছেন উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। এদিন সংসদ সদস্য পার্থপ্রতিম বাবুর তহবিল থেকে কেনা বাস উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল দলীয় অন্দরেই। দলের কর্মী সমর্থকদের আশঙ্কাকে সত্যি করে অনুষ্ঠানে আসলেন না রবীন্দ্রনাথ বাবু। দিনকয়েক আগেও একটি বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ বাবুকে দেখা গেলেও থাকেননি পার্থবাবু। পদযাত্রার মাঝপথেই অন্যত্র চলে যান তিনি। এছাড়া কোচবিহার পলিটেকনিক কলেজেও প্রাক্তনী এবং হস্টেলের আবাসিক অনুষ্ঠানে পার্থবাবু,মিহিরবাবু থাকলেও দেখা মেলেনি রবীন্দ্রনাথ বাবুর। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়েও পার্থপ্রতিম বাবুর অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ বাবু হাজির না হওয়াতে তাঁদের সম্পর্কের অবনতির ছবিটা আরো একবার প্রকাশ্যে এল। এর জেরে কোচবিহারের শাসকদলের অন্দরে রাজনৈতিক মেরুকরণের ছবি আরো স্পষ্ট হল। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে যুবদের প্রভাব একটু কমে যাওয়াতে গোটা জেলাকেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকটাই সফল হয়েছেন রবীন্দ্রনাথ বাবু। সর্বত্র তিনি ঐক্যের বার্তা দিয়ে বেড়ালেও পার্থপ্রতিম বাবুর সঙ্গে বিরোধ কিছুতেই মেটাতে চাইছেন না তিনি। অন্যদিকে পার্থবাবুও নিজের শক্তিবৃদ্ধি করার জন্যে ঘনিষ্টমহলকে নিয়ে জোট বাধার চেষ্টায় রয়েছেন। এই কারণে লোকসভা ভোটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে জেলা তৃণমূলের সংগঠন পোক্ত হওয়ার বদলে ফাটল স্পষ্ট হচ্ছে ক্রমশ। এই নিয়ে শাসকদলের অন্দরেই কানাঘুষো চলছে বর্তমানে,এমনটাই অভিমত অভিজ্ঞমহলের। আপনার মতামত জানান -