এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > “আমার ভুল হয়ে থাকলে আমাকে ক্ষমা করবেন” হেভিওয়েট তৃণমূল নেতার ভুল স্বীকার

“আমার ভুল হয়ে থাকলে আমাকে ক্ষমা করবেন” হেভিওয়েট তৃণমূল নেতার ভুল স্বীকার

সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের একটি আসনও দখল করতে পারেনি তৃণমূল। যার পেছনে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। যেমন, কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র। অতীতে এখানে তৃণমূলের তরফে পার্থপ্রতিম রায় জয়লাভ করলেও কোচবিহারের প্রাক্তন জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে সেই পার্থবাবুর সম্পর্ক ভালো না থাকার কারণে এবার তিনি প্রার্থী হতে পারেননি। যার ফলে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের তরফে প্রার্থী করা হয় বিগত বাম সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে।

যাকে জেতানোর প্রধান দায়িত্ব ছিল কোচবিহার জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কাঁধেই। কিন্তু তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নীশিথ প্রামানিকের কাছে হারতে হয়েছে সেই পরেশ অধিকারীকে। আর এরপরই পরেশবাবুকে জেতানোর মূল দায়িত্বে থাকা রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ভূমিকা নিয়ে উঠতে শুরু করে প্রশ্ন। যার জেরে সেই রবিবাবুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন দলের একাংশ।

পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছয় যে, জেলা তৃণমূলের সভাপতির পদ থেকে সেই রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সরিয়ে সেখানে বিনয়কৃষ্ণ বর্মন এবং রবি ঘোষের বিরোধী হিসেবে পরিচিত পার্থপ্রতিম রায়কে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি পদে বসান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এরপর থেকেই দলে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন সেই রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আর দলের কর্মী থেকে সাধারণ মানুষ যাতে তাকে আর খারাপ চোখে না দেখেন, তার জন্য এবার নিজের ভুলত্রুটি শুধরে নিতে দেখা গেল সেই রবিবাবুকে।

সূত্রের খবর, আগামী 21 জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে সোমবার দিনহাটার সাহেবগঞ্জ রোডে তৃনমূলের একটি কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। যে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য তৃনমূলের সভাপতি সুব্রত বক্সী, কোচবিহার জেলা তৃনমূল সভাপতি বিনয় কৃষ্ণ বর্মন, জেলা তৃণমূল কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, উদয়ন গুহ, মিহির গোস্বামী সহ অন্যান্যরা। আর সেখানেই রাজ্য সভাপতির সামনে নিজের ভুল ত্রুটি উল্লেখ করে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে দেখা যায় রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে।

তিনি বলেন, “নির্বাচনে হেরে গিয়েছি, এটা আমার দোষ হতে পারে। তাই আমার ভুল হয়ে থাকলে আমাকে ক্ষমা করবেন। কিন্তু এবার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে চলতে হবে। আর তাহলেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আমরা এই জেলার নয়টি আসন জয়লাভ করব।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে রবিবাবুকে সরিয়ে দেওয়ার পর তারই বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা পার্থ প্রতিম রায়ের উত্থানে রবি ঘোষ কিছুটা হলেও চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। আর তাই দলের ফোরফ্রন্টে থেকে তিনি যাতে লড়াই করতে পারেন, তার জন্য সকলের কাছে লোকসভা নির্বাচনের হারের কারণে ক্ষমা চেয়ে নিতে দেখা গেল তৃণমূলের কোচবিহার জেলার একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই নেতাকে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!