দুধের বদলে আদতে বিক্রি হচ্ছে ‘রাসায়নিক বিষ’, পুলিশি তৎপরতায় বাজেয়াপ্ত সাড়ে ছশো লিটার, গ্রেপ্তার ৩ নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য December 8, 2018 ভেজাল দুধের কারবারির অভিযোগে শান্তিপুরের মুরুটিয়া থানা এলাকা থেকে এদিন তিনজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানা এলাকার একটি পিকভ্যান থেকে ৬৪০ লিটার দুধ উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকার বহুদিন ধরেই ভেজাল দুধের ব্যবসা চলছে এমনটা অভিযোগ তুলে গত আগষ্ট মাসে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন ক্রেতারা। রাসায়নিক মিশিয়ে দুধ তৈরি হচ্ছে – যা আসলে বিষ। সেই বিষদুধই না বুঝে পান করছে সাধারণ মানুষ, এমনটাই বক্তব্য ছিল তাদের। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করলেন দুধ কারবারিরা। তারা দাবী করেন, দুধে কোনো রাসায়নিক মিশিয়ে ব্যবসা করেননা তারা। কিছু অসাধু মানুষ এই চক্রে জড়িত। তাদের জন্যেই যারা সৎভাবে ব্যবসা করছে তাদের ক্ষতি হচ্ছে। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, এদিন গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ১৬ টি কন্টেনারে ভেজাল দুধ নিয়ে যাওয়া পিকআপ ভ্যান আটক করে পুলিশ। তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় ৬৪০ লিটার ভেজাল দুধ। ঘটনায় গ্রেফতার হন গৌরাঙ্গ ঘোষ, প্রকাশ ঘোষ এবং বলরাম ঘোষ নামের ব্যক্তিরা। তারা সকলেই খানপুরের বাসিন্দা। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব অসৎ কারবারিরা দুধ থেকে ক্রীম বের করে নেওয়ার পর তাতে ডালডা, পাম তেল এবং ছানার জল মিশিয়ে ভেজাল দুধ বানায়। তারপর সেই দুধ বিভিন্ন ডেয়ারি ফার্মে সরবরাহ করা হয়। সাধারণত বিভিন্ন ফার্মে দুধের ফ্যাট পরীক্ষা করে দাম নির্ধারণ করা হয়। এখানের ফার্মগুলোতে দুধে কোনো ভেজাল মেশানো হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করার কোনো পরিকাঠামোই নেই। ফলত ফ্যাট টেস্টে পাশ হয়ে যায় ভেজাল দুধ। এই দুধ পানের অযোগ্য, শুধু তাই নয় এটি মানুষের শরীরের পক্ষেও মারাত্মক ক্ষতিকারক। এছাড়া অনেক জায়গায় আরো খারাে জিনিস ব্যবহার করে দুধ তৈরি হয় বলেও অভিযোগে জানান বাসিন্দারা। ব্যবসায়ীদের সূত্র থেকে জানা গিয়েছে,শান্তিপুর ও ফুলিয়া এলাকায় বহু মানুষ এই দুধের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। প্রতিদিন তারা ট্রেনে করে কলকাতা, নৈহাটি, ব্যারাকপুরে গিয়ে সেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দুধ দিয়ে আসেন। পাশাপাশি ছানাও সরবরাহ করেন মিষ্টির দোকানে। ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে প্রসঙ্গত, এই ব্যবসায়ীরাই অনেকে অসাধু চক্রের সঙ্গে জড়িত এমন অভিযোগ তুলে গত আগষ্টেই বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন শান্তিপুরের বাসিন্দারা। ঢাকাপাড়ার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা শান্তিপুর স্টেশান চত্বর থেকে দুধ কিনে কিছু অংশ দিগনগরের রাঘবেশ্বর মন্দিরে শিবের মাথায় ঢালেন এবং বাড়ি এসে দুধের বাকি অংশ গরম করেন। এই দুধ গরম করার সময়ই চোখ চড়ক গাছ হয় তাদের। অপ্রত্যাশিতভাবে দুধ গরম করতেই তা প্লাস্টিকের আঠার মতো হয়ে যায়। এটা যে ভেজাল দুধ, তা আর বুঝতে বাকি থাকে না ক্রেতাদের। বিক্ষুব্ধরা ফের শান্তিপুর স্টেশামে এসে ওই দুধ কারবারিদের আটকান। এবং তাঁদের ২৫ টি ড্রাম বাজেয়াপ্ত করা হয়। কয়েকঘন্টা বিক্ষোভ করার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সেসময় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করা না হওয়ায় আরপিএফ ছেড়ে দেয় দুধ কারবারিদের। তবে জেলা জুড়ে বাড়তে থাকা ভেজাল দুধ কারবারি বন্ধ করতে প্রশাসনকে তৎপর হতে হবে,এমন দাবী করতে থাকেন ভুক্তভোগীরা। যার জেরে প্রশাসনকে নজরদারি কড়া করতে হয়। এবং এদিন অভিযান চালিয়ে ভেজাল দুধ ব্যবসায়ীদের তিনজনকে বাগে আনতে সফল হয়েছে পুলিশ। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের উপ অধিকর্তা অসিত ঘোষ জানান, ভেজাল দুধ নিয়ে নিয়মিতই অভিযান চলে তাদের। সম্প্রতি কালীগঞ্জ এলাকাতেও এর আগে ভেজাল দুধের কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মুরুটিয়ার ঘটনাটি বিস্তারে জানেন না তিনি। তবে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে বলেই জানান তিনি। জেলা পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার জানান, ধৃতদের সূত্র ধরেই ভেজাল দুধ কান্ডের অসাধু ব্যবসায়ীদের মূল চক্রে পৌছানো যাবে বলেই আশ্বাস দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার। আপনার মতামত জানান -