এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > দলে কোনঠাসা হতেই কি দলবদলের ভাবনায় প্রাক্তন হেভিওয়েট তৃণমূল মন্ত্রী? নতুন পদক্ষেপে জল্পনা

দলে কোনঠাসা হতেই কি দলবদলের ভাবনায় প্রাক্তন হেভিওয়েট তৃণমূল মন্ত্রী? নতুন পদক্ষেপে জল্পনা

রাজ্য রাজনীতিতে কৃষ্ণেন্দু নারায়ন চৌধুরী সবসময়ই হেভিওয়েটের তকমা পেয়ে এসেছেন। এতটাই প্রতাপশালী এই নেতা, যে প্রবল বাম জমানাতেও তাঁকে ইংলিশবাজার থেকে হারানো যায় নি। কিন্তু, রাজ্যে বাম জামানার পরিবর্তন হতেই, মন্ত্রীত্বের টানে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন। উপনির্বাচনে জিতে এসে রাজ্যের মন্ত্রীও হন। কিন্তু, তারপরেই দ্রুত পরিবর্তন হতে থাকে রাজনৈতিক পটচিত্রের।

সহকর্মী তথা আরেক দলীয় মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের সঙ্গে তাঁর বিবাদ নিয়ে এমনিতেই প্রমাদ গুনছিল শাসকদল। আর বাস্তবেও দেখা যায়, দুই হেভিওয়েট মন্ত্রীর ‘ব্যক্তিগত লড়াইয়ের’ জেরে দুজনকেই ২০১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে হারতে হয়। কৃষ্ণেন্দুবাবুকে হারিয়ে দেন বাম-কংগ্রেসের সমর্থনে দাঁড়ানো নির্দল প্রার্থী নীহাররঞ্জন ঘোষ। আর এরফলে, শুধু বিধায়ক পদই নয়, কৃষ্ণেন্দুবাবুকে হারাতে হয় ইংলিশবাজার পুরসভার চেয়ারম্যানের পদও।

ক্রমশ দলের মধ্যে কোনঠাসা হতে থাকা কৃষ্ণেন্দুবাবু, আশা করেছিলেন দল অন্তত তাঁকে লোকসভায় মালদা-দক্ষিণ থেকে টিকিট দেবে, বলে অভিমত তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের। কিন্তু, তৎকালীন মালদা জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন নিজে সেখানে প্রার্থী হয়ে যাওয়ায়, তাঁর সেই আশাতেও জল পরে যায়। ফলে, আপাতত তৃণমূলে থাকলেও, তাঁর হাতে ‘পেন্সিল’ ছাড়া কিছুই নেই! এই অবস্থায় কি তিনি দলবদলের কথা ভাবছেন? অন্তত তাঁর নতুন পদক্ষেপে গোটা মালদা জুড়ে এমনই জল্পনা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত, মালদার রাজনীতি এখনও আবর্তিত হয় প্রয়াত কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী বরকত গনি খান চৌধুরীর নামে। বিগত ২০০৬ সালে তাঁর মৃত্যু হওয়ার পর কৃষ্ণেন্দুবাবু কোনোদিনই তাঁর বাসভবন কোতোয়ালি ভবনে এসে শ্রদ্ধা জানান নি – তা সে গনি খানের জন্মদিন হোক বা মৃত্যুদিন। উল্টে, তিনি নিজের উদ্যোগে ২০০৮ সালে মালদহের বৃন্দাবনী ময়দান সংলগ্ন মুক্তমঞ্চে গনিখানের মূর্তি নির্মাণ করেছিলেন – আর সেখানে গিয়েই এতদিন শ্রদ্ধা জানাতেন। কিন্তু, এবার সব হিসেব-নিকেশ উল্টে দিয়ে তিনি একেবারে সটান হাজির কোতোয়ালি ভবনে!

শুধু হাজির হওয়াই নয়, সেখানে তাঁকে খোশগল্প করতে দেখা কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী, তাঁর বিধায়ক পুত্র ঈশা খান চৌধুরী সহ অন্যান্য কংগ্রেস বিধায়ক ও নেতাদের সঙ্গে। এমনকি, একসাথে প্রাতঃরাশও সারেন তাঁরা। আর এখানেই, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে – কেননা, তৃণমূল নেতৃত্ব বারেবারেই দাবি করে এসেছেন, বরকত গনি খানের আদর্শ নাকি বর্তমান কংগ্রেস নেতৃত্ব এগিয়ে নিয়ে চলতে পারছেন না। তা কার্যত তৃণমূল কংগ্রেসই বহন করছে।

আর তাই নাকি, ইতিমধ্যেই গনিখানের ভাই আবু নাসের খান চৌধুরী ও ভাগ্নী মৌসম বেনজির নূর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এমনকি গনিখানের জন্মদিন বা মৃত্যুদিন আলাদা করেই পালন করে তৃণমূল। এবারেও রথবাড়িতে গনিখানের মূর্তিতে মালা দিয়ে, কেক কেটে আলাদা করে পালন করা হল। কিন্তু, তৃণমূলে থেকেও সেই অনুষ্ঠানে না গিয়ে কৃষ্ণেন্দুবাবু হাজির কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে! যদিও এ প্রসঙ্গে তিনি নিজে জানিয়েছেন, বরকতদা রাজনীতির ঊর্ধ্বে, তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে কোতোয়ালিতে আসা।

এমনকি তাঁর সুরেই সুর মিলিয়ে বর্তমান জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর জানিয়েছেন, বরকত মামা সব সময়ই রাজনীতির ঊর্ধ্বে, তাই সকলেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন। কিন্তু, রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, কোতোয়ালি ভবনে গিয়ে কৃষ্ণেন্দুবাবুর এত বছর সময় লেগে গেল কেন? রাজ্যের হেভিওয়েট প্রাক্তন মন্ত্রীর ছোট্ট জবাব, বিবেকের তাড়নায় এবারে এসেছি! কিন্তু কেন বিবেকের তাড়না? সেই বিবেক আর কি করতে বলছে? এই সব প্রশ্নই ক্রমশ জল্পনার আকার নিচ্ছে মালদহের রাজনীতিতে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!