এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > জেলাশাসক বনাম সভাধিপতির তরজা তুঙ্গে, নজিরবিহীন ঘটনা, জোর চাঞ্চল্য

জেলাশাসক বনাম সভাধিপতির তরজা তুঙ্গে, নজিরবিহীন ঘটনা, জোর চাঞ্চল্য

 

লোকসভা ভোটের পরেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের বিপ্লব মিত্র দলবদল করেন। দিল্লিতে গিয়ে গেরুয়া শিবিরের পতাকা নিজের হাতে তুলে নেওয়ার পাশাপাশি জেলা পরিষদের সভাধিপতি সহ 10 জন সদস্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখান তারপরেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ তৃণমূল থেকে বিজেপির দখলে চলে যায় তবে এরপর কিছুটা হলেও অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও বেশকিছু সদস্য বিজেপি না ছাড়লেও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া অনেক জেলা পরিষদ সদস্য ফের ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেন।

যার ফলে বর্তমানে বিজেপির দিকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি লিপিকা রায় সহ 5 জন সদস্য রয়েছেন। অন্যদিকে তৃণমূলের দিকে 13 জন সদস্য রয়েছেন। আর সংখ্যাগরিষ্টের দিক থেকে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও আইন অনুসারে জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিজেপির হওয়ায় সেইভাবে তৃণমূল এখানে কোনো কাজ করতে পারছে না বলে অভিযোগ।

আর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের কাজ এইভাবে আটকে থাকায় সম্প্রতি জেলার প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই ব্যাপারে উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।যেখানে জেলাশাসক নিখিল নির্মল বলেন যে, “সভাধিপতি কো৬ন কাজ করছেন না। তাই তার কারণেই এই কাজ আটকে আছে।” তবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জেলাশাসক এই দাবি করলেও এবার সেই দাবি সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সদস্য বিজেপির লিপিকা রায়।

-সূত্রের খবর, শুক্রবার জেলা পরিষদের সভাধিপতি ললিতা ঠিগ্গার ঘরে জেলা তৃণমূল সভাপতি অর্পিতা ঘোষ সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা উন্নয়নের ব্যাপারে একটি বৈঠক করেন। তিনি সভাধিপতি থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে ডাকা হল না, এদিন সেই ব্যাপারে পাল্টা প্রশ্ন তুলে দেন লিপিকা রায়। এদিন জেলাশাসক নিখিল নির্মলকে আক্রমণ করে লিপিকা রায় বলেন, “জেলাশাসক মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যে দাবি করছেন, তা একেবারেই ভিত্তিহীন। আমি নিজে একাধিকবার বৈঠক ডাকলেও জেলাশাসক তা বাতিল করেন। আমাদের করা টেন্ডার বাতিল করেছেন জেলাশাসক। যেখানে স্তব্ধ হয়ে থাকা উন্নয়ন আমরা চালু করার চেষ্টা করছি, সেখানে শাসকদলের জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে প্রশাসন উন্নয়ন বন্ধ রেখে আমাদের বদনাম করার চেষ্টা করছে।”

এদিকে মুখ্যমন্ত্রী বলার পর বুধবারের বৈঠকে সবাইকেই ডাকা হয়েছিল বলে জেলাশাসক নিখিল নির্মল জানালে তার পাল্টা জেলাশাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিজেপির লিপিকা রায়। তিনি বলেন, “জেলাশাসক আমাদের বৈঠকে আমন্ত্রণ করেছেন, তা তিনি প্রমাণ করতে পারবেন না। মুখ্যমন্ত্রীর সভায় আমাদের ডাকা হয়নি। বুধবার যে বৈঠক হয়েছে, সেখানেও ডাকা হয়নি। জেলাশাসক সম্পূর্ণ অসত্য কথা বলছেন। চক্রান্ত করে জেলাবাসীর কাছে আমাদের বদনাম করার চেষ্টা করছেন। আমরা উন্নয়ন করতে চাইলেও বেআইনিভাবে আমাদের করা কোটি কোটি টাকার টেন্ডার বাতিল করে দিয়েছেন। সম্পূর্ণরূপে আমাদের অন্ধকারে রেখে কাজ করা হচ্ছে। আমরা দ্রুত আইনের দ্বারস্থ হব।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং জেলাশাসকের তরজা যে আকার ধারণ করেছে, তাতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার উন্নয়ন কার্যত বিশবাও জলে চলে যেতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পরও যদি বিজেপির জেলা পরিষদের সদস্য বনাম জেলাশাসকের তরজা চলতে থাকে, তাহলে তা সাধারন মানুষের উন্নয়নের পক্ষে অত্যন্ত বিপদজনক হবে বলেই মত একাংশের।

তবে যদি জেলা পরিষদের সভাধিপতির অভিযোগ সত্যি হয়, তাহলে শুধুমাত্র বিরোধীদলের বলেই কি তাকে বৈঠকে ডাকলেন না জেলাশাসক নিখিল নির্মল! এখন প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে বিশেষজ্ঞদের মনে। উন্নয়নই যদি মূল ব্যাপার হয়, তাহলে কেন উন্নয়নের জন্য জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে ডাকা হল না! এক্ষেত্রে কেন রং দেখছেন জেলাশাসক! তা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন একাংশ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!