এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > খোদ কলকাতার বুকে ৬ করোনা রোগী সেরে ওঠার এক সপ্তাহের মধ্যেই পুনঃসংক্রমিত! ঘুম উড়ছে প্রশাসনের

খোদ কলকাতার বুকে ৬ করোনা রোগী সেরে ওঠার এক সপ্তাহের মধ্যেই পুনঃসংক্রমিত! ঘুম উড়ছে প্রশাসনের


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  পশ্চিমবঙ্গে করোনা সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলেছে ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মোট করোণা সংক্রমণ ১ লাখ ৬০ এর কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। অন্যদিকে করোণায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৩২ হাজারের কাছাকাছি। প্রতিদিনের করোনা আক্রান্ত প্রায় তিন হাজারের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। তবে করোনা নিয়ে নিশ্চিন্তির খবর একটাই যে, একবার করোনা হয়ে সেরে গেলে পুনরায় করোনা আক্রান্ত হওয়ার আর কোন সম্ভাবনা থাকে না। শরীরে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু এবার করোনা সম্পর্কে এই ধারণা চুরমার হয়ে গেল কলকাতার একটি ঘটনায়। দেখা যাচ্ছে করোনা সেরে যাবার পরেও পুনরায় দেখা যাচ্ছে করোনা সংক্রমণ।

করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আবার ৭ দিনের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হলেন এক মহিলা। এই খবরে চিন্তার ভাজ পড়েছে সকলের কপালে। একবার করোনা মুক্ত হতে পারলে আর তা হবে না এই বিশ্বাস সকলের মনে সকলের মনে বদ্ধমূল। মুর্শিদাবাদ, বীরভূম সহ বেশ কয়েকটি জেলায় করোনা যোদ্ধা ক্লাব তৈরি হয়েছে করোনা মুক্তদের নিয়ে। বেলেঘাটা আইডি, কলকাতা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে করোনা জয়ীদের। সেই পরিস্থিতিতে করোনা মুক্ত রোগীর পুনরায় করোনা আক্রান্ত হবার খবর যে কতটা ভয়ানক তা বলাই বাহুল্য।

কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে পরপর ৬ জনের শরীরে করোনা মুক্ত হওয়ার পর পুনরায় করোনা সংক্রমণ দেখা গেল। কলকাতার মধ্যে এরকম ধরনের ঘটনা যেমন ঘটেনি, তেমনি ঘটেনি পশ্চিমবঙ্গে, ভারতের কাছেও এই ঘটনা অভুতপূর্ব এমনটাই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। তাঁরা এক্ষেত্রে ওই ৬ জন আক্রান্তকে ভালো করে পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন, সেইসঙ্গে বাড়তি সতর্কতার নিদান দিয়েছেন।

করোনা মুক্ত হয়ে যাবার পর পুনরায় করোনা সংক্রমনের ৬ ঘটনা ঘটলো কলকাতার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে। তার মধ্যে ৩ টি ঘটনাই ঘটেছে কলকাতার রবীন্দ্রপল্লী এলাকায়। এক সংবাদপত্রের প্রতিনিধি এই পরিবার গুলির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন, সম্প্রতি ৩ টি পরিবারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই তারা যোগাযোগ করতে পেরেছেন। করোনা সংক্রমনের ঘটনা পরিবার গুলির সদস্যদের মনে আতঙ্কের ছাপ ফেলেছে।

তাদের প্রশ্ন, করোণা আক্রান্ত হলেও তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে পারেনি? নাকি করোনা টেস্ট রিপোর্ট ভুল এসেছে ? একবার করোনা থেকে মুক্ত হয়ে পুনরায় আক্রান্ত হলেন কিভাবে? এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রপল্লী ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত জানালেন, “ পুনঃসংক্রমণের ঘটনা নিয়ে আমরা চিন্তিত। এটা টেস্টের গরমিল না অন্য কিছু তা খতিয়ে দেখা উচিত। আমরা ছ’জনকেই পর্যবেক্ষণে রেখেছি। নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছি। ”

রবীন্দ্রপল্লী এলাকার জনৈক বাসিন্দা হলেন সীমা মন্ডল (নাম পরিবর্তিত)। গত ২ রা আগষ্ট যিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। ১৫ ই আগস্ট তিনি করোনামুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু ২০ সে আগস্ট পুনরায় জ্বর এলো তার। চিন্তিত পরিবারের সদস্যরা স্বাস্থ্য দপ্তরের দেওয়া একটি টেলি মেডিসিন নাম্বারে ফোন করেন। এবার স্বাস্থ্য পরামর্শ অনুযায়ী সীমা মন্ডলকে গত ২১ সে আগস্ট যাদবপুর কেপিসি মেডিকেল কলেজে করোনা পরীক্ষা করানো। ২২ সে অবস্থা রিপোর্ট এলে দেখা যায়, করোনা নেই কিন্তু তিনি ডেঙ্গু আক্রান্ত।

চিকিৎসার জন্য মুকুন্দপুরের মেডিকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ৩০ সে আগস্ট তার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পুনরায় তাকে নিয়ে আসা হয় যাদবপুরের কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তার পরিবারের কার কথা, ” কার কথা বিশ্বাস করব? কেপিসি না মেডিকা? ” এভাবে ৭ দিনের মধ্যেই করোণা থেকে সুস্থ হয়ে পুনরায় করোনা আক্রান্ত হলেন তিনি। আর তার তিনটি রিপোর্ট RT-PCR এর। তিনটি কলকাতার যথেষ্ট নামজাদা হাসপাতাল থেকে করানো। সে ক্ষেত্রে যে রিপোর্টগুলো ভুল হবার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই রবীন্দ্রপল্লী এলাকার বাসিন্দা সতেরো বছর বয়স্ক এক কিশোর। গত ১৩ ই আগস্ট কলকাতার বাইপাসের ধারে অ্যাপেক্স হাসপাতালে সে করোনা টেস্ট করায়। তার রিপোর্ট পজিটিভ এলে তাকে হোম আইসোলেশন এর ব্যবস্থা করা হয়। তারপর ১৪ দিন বাদে ডাক্তার তাকে ফিট সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন। এরপরেও আবার তার করোনা টেস্ট করানো হয়েছিল। সেই টেস্টের রিপোর্ট পজেটিভ আসে।

আবার থেকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। কিন্তু করোনার কোনো উপসর্গ তার কিন্তু ছিল না। একজন উপসর্গহীন এরকম শরীরে করণা এভাবে এতদিন ধরে থেকে যাওয়াটা কিন্তু যথেষ্ঠ উদ্বেগজনক । যা পুনঃ সংক্রমনও হতে পারে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, পুনরায় আইসোলেশন করে তার করোনা টেস্ট করতে।

রবীন্দ্র পল্লীর এক মহিলা করোনা মুক্ত হয়ে আবার করোনা আক্রান্ত হয়ে উঠেছেন। করোনা মুক্ত হয়ে তিনি কাজে যোগদান করেছিলেন। প্রথমে ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজের করোনা টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। কিন্তু আবার RT-PCR এর রিপোর্ট পজিটিভ আসায় তাকে পুনরায় আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে।

তবে পুনের ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি পুনরায় করোনা সংক্রমনের বিষয়টি প্রমান হীন ও অসম্ভব বলে জানিয়েছিল। কিন্তু হংকং থেকে করোনার পুনরায় সংক্রমনের খবর পাওয়া গিয়েছে, পাওয়া গেছে আমেরিকা, বৃটেন থেকেও। টালিগঞ্জের এম আর বাঙ্গুর কোভিড হাসপাতালে আরো দুটি এমন কেস পাওয়া গেছে। কলকাতা মেডিকেল কলেজের জনৈক সহকারী সুপার পরপর ২ বার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু কলকাতার রবীন্দ্র পল্লীর মতো একসঙ্গে এতজনের পুনঃ সংক্রমণ আর কোথাও ঘটেনি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!