কপাল ফাটল মমতার, তদন্তের দাবি দিলীপের! ভোটের মরসুমে সরগরম রাজ্য! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য March 15, 2024 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-রাজনৈতিকভাবে যতই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করুন না কেন, দিনের শেষে তো বিরোধী নেতাদের কাছেও তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তাই রাজনৈতিক শত্রুতা থাকলেও, ব্যক্তিগত শত্রুতা কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কারওর নেই। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি প্রকাশিত হয়। যেখানে দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর কপাল ফেটে রক্ত ঝরছে। আর তারপরেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তার শুভাকাঙ্ক্ষী থেকে শুরু করে বিরোধী দলের নেতা নেত্রীরা। সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছেন। কিন্তু তিনি যখন বাড়িতে ছিলেন, সেই সময় কিভাবে তার ধাক্কা লাগলো? কিভাবে তিনি পড়ে গেলেন! কিভাবে তার মাথা ফাটলো এবং বাড়িতে কেন চিকিৎসা করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো না? এই সমস্ত প্রশ্ন উঠছে এবং উঠবে। আর সেই রকমই একটি প্রশ্ন করে সাত সকালে পুলিশের দায়িত্ব এবং কর্তব্য অনেকটাই বাড়িয়ে দিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তার বক্তব্যের পরে সত্যিই এই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিচ্ছে যে, যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজের বাড়িতেই সুরক্ষিত নয়, সেখানে রাজ্যের সাধারণ মানুষ এই পুলিশের অধীনে সুরক্ষিত থাকবেন কি করে? এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তো আর একা একা ঘোরেন না। তার তো জেট ক্যাটাগরির নিরাপত্তা। তার পরিবারের সদস্যরাও তো বাড়িতে ছিলেন। ফলে সেই সময় তিনি কি করে পড়ে গেলেন? আর সব থেকে বড় কথা যে, দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে না। কিন্তু বাড়িতে তো তাকে প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু করা হবে! তুলো দিয়ে তো সেই রক্তটুকু মুছে দেওয়া হবে! কিন্তু সেটা করার মতো লোক কেন পাওয়া গেল না? কেন তাকে ওই কপালে রক্ত লাগা অবস্থাতেই হাসপাতালে নিয়ে নিয়ে আসতে হলো? বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ এদিন যে কথা বললেন, তারপর তদন্ত না করলে এবং গোটা ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটিত না হলে কিন্তু এই পুলিশের উপর মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে এই প্রশ্ন তুলে আরও বেশি করে সোচ্চার হবে বিরোধীরা, সেটা বোঝাই যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, এদিন এই ব্যাপারে দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি প্রথমেই মুখ্যমন্ত্রীর দ্রুত সুস্থতা এবং আরোগ্য কামনা করেন। আর তারপর তিনিও একটি বড় প্রশ্ন তুলে দেন। দিলীপ ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এই রাজ্যের এক নম্বর ব্যক্তি। তিনি কি করে চোট পেলেন? অবশ্যই এই ঘটনার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।” বলা বাহুল্য, মুখ্যমন্ত্রীর চোট লাগার পর, চিকিৎসা হওয়ার পর তিনি বাড়ি চলে গেলেও, মেডিকেল বুলেটিনে থাকা তথ্য কিন্তু অন্য কথা বলছে। সেখানে আবার জানা যাচ্ছে যে, মুখ্যমন্ত্রীর নাকি ধাক্কা লেগেছে! তাহলে যদি ধাক্কা লেগে থাকে, এক্ষেত্রে কে তাকে ধাক্কা দিল, আর যদি এটা সঠিক হয়ে থাকে, তাহলে তো নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত গাফিলতি ছিল। তাই আহত মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন, এটা সকলেরই প্রার্থনা। কারণ দিনের শেষে তিনি আমাদের সকলের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তার নিরাপত্তায় এত বড় গাফিলতি মোটেই বরদাস্ত করা যায় না। তাই তার নিরাপত্তায় থাকা কর্মী থেকে শুরু করে তার পরিবার পরিজন, সকলের ভূমিকা নিয়েই একটা খটকা তৈরি হচ্ছে সমালোচকদের মধ্যে। পর্যবেক্ষকদের মতে, মুখ্যমন্ত্রীকে যে অবস্থায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল, যেভাবে তার কপাল ফেটে রক্ত পড়ছিল, তা সত্যিই অনেকের কাছে এখনও আতঙ্কের কারণ। তার প্রকট বিরোধীরাও এই ছবি গ্রহণ করতে পারেননি। তাই প্রশ্ন জাগছে, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে। প্রশ্ন উঠছে, পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। প্রশ্ন উঠছে, যখন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে এত সদস্য ছিলেন, তখন কি করে তার এই ধরনের ঘটনা ঘটলো? ফলে মুখ্যমন্ত্রীর শুভাকাঙ্ক্ষী থেকে শুরু করে বিরোধী দল, সকলেই যখন তার এই অসুস্থতা নিয়ে উদ্বিগ্ন, তখন দ্রুত এর একটা সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। যে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনে এই রাজ্য প্রশাসনের ঠিক কি হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে, সেই ব্যাপারে একটা তথ্য সকলের সামনে প্রকাশ করা উচিত। তা না হলে মুখ্যমন্ত্রী বাড়িতে থাকা অবস্থায় যেভাবে পড়ে গেলেন, যেভাবে তার মাথা ফাটলো, তাতে কিন্তু বিভিন্ন প্রশ্ন উঠতে থাকবেই। দিলীপ ঘোষের বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা। আপনার মতামত জানান -