লোকসভার ভরাডুবি ভুলে নতুন করে সংগঠন সাজিয়ে এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে শাসকদল কলকাতা বিশেষ খবর মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য September 18, 2019 লোকসভায় সারা রাজ্যে তৃণমূলের ফলাফল ভালো হয়নি। কিন্তু সেই খারাপ ফলাফলের স্মৃতিকে ভুলে আগামী বিধানসভায় যাতে আরও ভালো করা যায়, তার জন্য প্রতিটি জেলা নেতৃত্বকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আর দলীয় নেতৃত্বের সেই নির্দেশ অনুসারে এবার লোকসভার পরাজয়ের গ্লানিকে ঘুচিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলায় আগামী দুই মাসের মধ্যে ব্লক স্তরের সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিচ্ছে তৃণমূল। বস্তুত, লোকসভা নির্বাচনের পরই উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি করা হয় রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের পরাজিত প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়ালকে। আর জেলা সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পরই জেলার সমস্ত স্তরের সংগঠনকে কিভাবে শক্তিশালী করা যায়, তার দিকে নজর দিয়েছিলেন কানাইয়ালাল আগরওয়াল। জানা যায়, প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে দলের কর্মী-সমর্থক এবং স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে বুথস্তরেও সংগঠনে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির লোকেদের তুলে আনার কৌশল নিয়েছেন। চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে বুথ কমিটিগুলি গঠনের কাজ শেষ করার টার্গেট রয়েছে। কিন্তু এতদিন ব্লকে ব্লক সভাপতিরাই সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করলেও এবারে প্রত্যেক ব্লকে সংগঠনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও নজরদারির জন্য তিন জন গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী নিয়োগ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিন এই প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, “প্রত্যেক ব্লকে একজন ব্লক সভাপতি, ব্লক চেয়ারম্যান ও ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট নিয়োগ করা হবে। সংগঠন পরিচালনায় ব্লক স্তরের তিন জন পদাধিকারীরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির জন্য তৃণমূলের ব্লক এবং জেলা স্তরের বেশকিছু নেতার কার্যকলাপ সাধারণ মানুষ যে মেনে নিতে পারেননি, সেকথা কানাইয়ালালবাবুও নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে টের পেয়েছেন। রায়গঞ্জে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “জনপ্রতিনিধি থেকে দলের নেতাদের একাংশের কার্যকলাপ নিয়ে সাধারণ কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। প্রত্যেকটি অঞ্চলে তিনি নিজে গিয়ে স্থানীয় কর্মী, নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা অনেকের সম্পর্কে আপত্তিজনক কথা বলছেন। যে নেতাদের গ্রহণযোগ্যতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে, তাঁদের দলের কর্মীদের মুখোমুখি করা হচ্ছে। ওই নেতাদের নিজেদের বুঝতে অসুবিধা হবে না, তাঁদের পদে থাকার অধিকার নেই।” পাশাপাশি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ থেকে ব্লক এবং জেলাস্তরেও সংগঠনের বড়সড় রদবদলের ইঙ্গিত দিয়েছেন কানাইয়ালাল আগরওয়াল। অন্যদিকে রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জ শহর ও গ্রামীণ এলাকায় বেশকিছু জনপ্রতিনিধি, ছাত্রনেতা থেকে যুবনেতার লাইফ স্টাইল গত কয়েক বছরে এতটাই বদলে গিয়েছে, তাদেরকে নিয়ে সাধারণ মানুষ প্রকাশ্যেই সমালোচনা করেন। শুধু তাই নয়, বেশকিছু নেতা জনপ্রতিনিধির নামে তাদের এলাকাতেই কাটমানি, চাকরি দেবার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতানোর অভিযোগ এনে পোস্টার পড়েছে। ফলে এই সমস্ত কিছু মিটিয়ে দিতে প্রতিটি ব্লকেই তিনজন করে পদাধিকারী দিয়ে একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিন এই প্রসঙ্গে কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, “ব্লকে ব্লকে তিনজন পদাধিকারীই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁরা যৌথভাবে নিজের নিজের এলাকায় সংগঠনের বিভিন্ন কাজকর্ম দেখভাল করবেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে দল ভালো জায়গায় যাবে।” সব মিলিয়ে এখন থেকেই বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে উত্তর দিনাজপুর জেলায় বুথস্তরের সংগঠনকে শক্তিশালী করে সাজাতে উদ্যোগী জেলা তৃণমূলের সভাপতি। আপনার মতামত জানান -