আগামী লোকসভা নির্বাচনে টিকিট না পেলে কি করবেন জানিয়ে দিলেন সেলিব্রিটি তৃণমূল সাংসদ রাজ্য January 15, 2019 বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খাঁর বিজেপিতে যোগদানের পরই তীব্র জলের সৃষ্টি হয়েছিল যে তাহলে এর পরে শাসকদলের কোন নক্ষত্র তারকা গেরুয়া শিবিরের পতাকা নিজেদের হাতে তুলে নেবেন! এমনকি এই জল্পনাকে সত্যি বলে দাবি করে বিজেপির তরফ থেকেও বলা হয়েছে যে “সময় আসছে অপেক্ষা করুন।” আর এই সময়ে বিভিন্ন মহল থেকে কানাঘুষো খবর শুনতে পাওয়া যায় যে, শাসকদলের যে সমস্ত বর্তমান সাংসদেরা 2019 র লোকসভা নির্বাচনের টিকিট পাবেন না তাঁরাই এবার বিজেপিতে যোগদান করতে পারেন। এমনকি এই ব্যাপারে ঘাসফুল শিবিরের বেশ কয়েকজন সাংসদের নামও উঠে আসতে শুরু করে। আর এই সমস্ত জল্পনা কল্পনার মাঝেই এবার নিজের অবস্থান জানিয়ে দিলেন বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ তথা বিশিষ্ট অভিনেত্রী মুনমুন সেন। সূত্রের খবর, সোমবার বাঁকুড়ায় নিজের এলাকার উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচ সংক্রান্ত একটি বৈঠকের শেষে এই তৃণমূল সাংসদ বলেন, “আমি এদিক ওদিক করবো না। আগামী লোকসভা নির্বাচনে টিকিট না পেলেও আমি তৃণমূলেই থাকব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা মতো আগামী লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া কেন্দ্রে দলের প্রার্থীর হয়ে প্রচার করব।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্প্রতি সৌমিত্র খাঁ তৃণমূল থেকে বেরিয়ে বিজেপিতে যোগদানের পড়ে সেই বিজেপির সঙ্গে যোগ রয়েছে এমন অভিযোগ এবং দলকে নিয়ে বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বরখাস্ত করে দেওয়া হয় বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ অনুপম হাজরাকে। আর এদিন সেই সমস্ত বিতর্ক যাতে তাঁকে গ্রাস না করে সেইজন্য আগে থেকেই তিনি তৃণমূলের হয়েই কাজ করবেন বলে জানিয়ে দিলেন বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ মুনমুন সেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রত্যেক সাংসদ নিজের এলাকার উন্নয়নের জন্য প্রতিবছর 5 কোটি টাকা পেয়ে থাকেন। আর দুই কিস্তিতে পাওয়া ওই টাকা দ্বারা তিনি এলাকার কোন কোন কাজ করবেন সেই ব্যাপারে একটি তালিকা করে তা জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দেন। আর সেই টাকা খরচের দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন মুনমুন সেন। জানা গেছে, সম্প্রতি 60 লক্ষ টাকা দিয়ে বাঁকুড়া সারদামণি মহিলা মহাবিদ্যাপীঠের স্নাতকোত্তর শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ এবং হোস্টেল সংস্কারের কাজ করা হয়। আর আজ সেই বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ মুনমুন সেনের রায়পুর গ্রামীণ হাসপাতাল এবং ফুলকুসমা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সীমানার প্রাচীরসহ অন্যান্য প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এদিকে এত সব কাজ করেও সাংসদ তহবিলের আড়াই কোটি টাকা এখনও পড়ে রয়েছে মুনমুন সেনের। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সূত্রের খবর, এদিন সেই ব্যাপারে এই টাকা দিয়ে ঠিক কি কি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করা যায় তা নিয়ে জেলার সার্কিট হাউসে বাঁকুড়া জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস, অতিরিক্ত জেলা শাসক অঞ্জন চক্রবর্তী সহ অন্যান্য আধিকারিকদের সাথে একটি বৈঠক করেন মুনমুন দেবী। এদিকে বৈঠক শেষে খুব শীঘ্রই এই সমস্ত অর্থ দিয়ে প্রকল্পের তালিকা চূড়ান্ত করে কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে একই জেলার সাংসদ হয়ে মুনমুন সেন কাজ শেষ করতে পারলেও এখনও পর্যন্ত সদ্য তৃণমূলত্যাগী বিজেপির সৌমিত্র খাঁ তাঁর তহবিলের সাড়ে সাত কোটি টাকার কাজ করতে পারেননি। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। কেন তিনি এই অর্থ দিয়ে কাজ করতে পারলেন না? এদিন এই প্রসঙ্গে সেই সৌমিত্র খাঁ বলেন, “এলাকার উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচ নিয়ে জেলা প্রশাসন আমার সঙ্গে অসহযোগিতা করেছে। এই ব্যাপারে আমার কোনো গাফিলতি নেই। বিষয়টি আমি আমার লোকসভা কেন্দ্রের মানুষের কাছে তুলে ধরব।” অন্যদিকে সৌমিত্রবাবুর এই সমস্ত অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস। এদিন তিনি বলেন, “সংসদ সদস্যদের সুপারিশের ভিত্তিতেই আমরা প্রকল্প রূপায়ণ করি। কাজ শেষে যথাসময়ে ইউসি জমা দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে প্রশাসনিক আধিকারিকরা যত দ্রুত সম্ভব প্রকল্পের কাজ শেষ করার ওপর জোর দেন। তাই প্রশাসনের বিরুদ্ধে এই অসহযোগিতার অভিযোগ সঠিক নয়।” সবমিলিয়ে এবার লোকসভা নির্বাচনে টিকিট না পেলেও তিনি তৃণমূলের হয়েই কাজ করবেন বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের বর্তমান তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী মুনমুন সেন। আপনার মতামত জানান -