এতদিন পর্যন্ত বিরোধীদলের নেতাকর্মীরা তৃণমূলের নানা দুর্নীতির বিষয়ে তুলে এনে রাজ্যের শাসক দলকে কটাক্ষ করেছেন। কিন্তু সম্প্রতি কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিস্ফোরক তথ্য সোশ্যাল দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। জানা গেছে এই ভিডিও ক্লিপে তিনি রাজ্যের শাসক দলের বিশেষ করে এলাকার পঞ্চায়েত গুলোর দুর্নীতির কথা তুলে ধরেছেন। ওই ভিডিওতে তিনি সমগ্র হিসেব দিয়ে জানিয়েছেন প্রতিবছর পঞ্চায়েত গুলিকে প্রায় ৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়। ডিসেম্বরের মধ্যে সেই টাকার ৬০ শতাংশ খরচ করার নির্দেশ থাকে।

এদিন তিনি জানিয়েছেন পঞ্চায়েত গুলির কাছে টাকা পৌঁছালেও এখনো পর্যন্ত ছোট ছোট রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করা হয়নি। সূত্রের খবর বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের অন্দরে যথেষ্ট জল্পনা ঝড় উঠেছিল। বিরোধীদের সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় মহুয়া মৈত্রকে। কিন্তু এখানেই ইতি টানেননি সাংসদ মহুয়া মৈত্র। গত শনিবার ফের পঞ্চায়েত কর্মীদের অনিয়মের ইঙ্গিত করে মহুয়া মৈত্র একটি ভিডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন।

সোশ্যাল মিডিয়া সূত্রে খবর নদীয়াতে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর নিয়মিতভাবে মহুয়া মৈত্র সোশ্যাল মিডিয়াতে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র এবং করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অধীনস্থ এলাকার করোনা আক্রান্তের আপডেট দিয়েছেন। সেখানেও তিনি বারংবার প্রশাসনের দিকে প্রশ্ন তুলেছেন নানা ক্ষেত্রে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

মহুয়া মৈত্র -এর ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর অনুযায়ী, তিনি কেবল মাত্র দলের মধ্যে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য সমস্ত রকম দুর্নীতি কাটিয়ে মানুষের সহায়তা করতে চান। তা ভবিষ্যতে দলের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করতে অনেকটাই সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গত শনিবার মহুয়া মৈত্র যে ভিডিও ক্লিপটি পোস্ট করেছেন তাতে সম্পূর্ণভাবে পঞ্চায়েত কর্মীদের অসতর্কতার ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

ভিডিও ক্লিপটিতে তিনি জানিয়েছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে আগত এক ব্যক্তি সরকারি কোয়ারেন্টাইনে না গিয়ে বাড়িতেই দীর্ঘদিন লুকিয়েছিলেন। তেহট্ট ব্লকের বেতাই দু’নম্বর পঞ্চায়েতের কর্মীরা এবং স্থানীয় বাসিন্দারা এ বিষয়ে জেনে থাকলেও সম্পূর্ণ বিষয়টি লুকিয়ে গেছিলেন। এমনকি প্রশাসনকে কোনভাবে জানানো হয়নি। তিনি আরোও বলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরা সতর্ক না হলে নিজেরাই বিপদে পড়বেন কারণ প্রত্যেকটি বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে পঞ্চায়েত নেতাকর্মীদের আরো সতর্ক হওয়ার উপদেশ দিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে ফের এই ভিডিও ক্লিপটি প্রকাশ্যে আসার পর শাসকদলের ভিতরে মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে বেশ সমালোচনার ঝড় উঠেছে। যদিও সূত্রের খবর মহুয়া মৈত্রের দাবি দলের মধ্যে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্যই দলের কথা ভেবে তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে প্রকাশ্যে পঞ্চায়েত কর্মীদের অসতর্কতার ইঙ্গিত দেওয়াতে পঞ্চায়েত নেতাকর্মীরা যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছেন বলে সূত্রের খবর।