ঔদ্ধত্যের কারণেই বিজেপির শেষের শুরু হয়ে গেছে – পাঁচ রাজ্যের ফল দেখে ‘বিশ্লেষণ’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলকাতা জাতীয় রাজ্য December 12, 2018 লোকসভা নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত হওয়া পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত ধরাশায়ী বিজেপি। গোবলয়ের ৩ রাজ্য থেকে ক্ষমতা হারাতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে – যার মধ্যে রয়েছে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা দুই রাজ্য – মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়। এই শক্ত ঘাঁটি থেকে উৎখাত হয়ে একদিকে যেমন হতাশ বিজেপি নেতৃত্ব, অন্যদিকে ঠিক তেমনভাবেই যেন পুনর্জন্মের স্বাদ কংগ্রেস শিবিরে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই এই জয়কে – শুধুমাত্র কংগ্রেসের জয় নয়, বরং তার থেকেও বেশি কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধীর জয় বলে মনে করছেন। কিন্তু, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই জয়ের কৃতিত্ব মোটেই কংগ্রেস বা রাহুল গান্ধীকে দিতে নারাজ। তাঁর মতে এই জয়, আসলে সাধারণ মানুষের জয়। বর্তমানে, জাতীয় রাজনীতিতে বর্তমান কেন্দ্র সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সবথেকে বড় ঘোষিত বিরোধী নাম – মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। সুতরাং, যদিও এই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে কোথাও তাঁর দলের কোন প্রার্থী ছিল না – তবুও, এই প্রসঙ্গে তাঁর মতামত যে অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ন, তা বোঝা যায়, যখন বিকেলে তিনি ট্যুইটারে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানানোর সাথে সাথেই প্রায় সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলি ঝাঁপিয়ে পরে – তা ব্রেকিং নিউজ হিসাবে দেখাতে থাকে। এমনিতেই, আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী বৃহত্তর জোট নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি আপাতত দিল্লিতে। ফলে, গতকাল সকাল থেকেই ১৮৩, সাউথ অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে বসে টেলিভিশনের পর্দায় ভোটের ফলাফলের দিকে তীক্ষ্ন দৃষ্টি রেখেছিলেন তিনি। ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে বিজেপির এই পরাজয়ে তিনি স্বভাবতই উৎফুল্ল – তবে এই জয়ের সম্পূর্ণ কৃতিত্ব তিনি কংগ্রেসকে দিতে নারাজ। বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হার সুনিশ্চিত হবার পর তিনি ট্যুইট করে জানান, “মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। এই জয় দেশের মানুষের জয়”। প্রসঙ্গত, সংসদ মুলতবি হয়ে যাওয়ায় ঘরে বসেই তিনি সারাদিন পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফলের দিকে নজর রাখছিলেন। বেলা গড়ানোর সাথে সাথেই যখন বিজেপির পরাজয় ক্রমশ নিশ্চিত হয়েছে – ততই উৎফুল্ল লেগেছে তৃণমূলনেত্রীকে বলে তাঁর ঘনিষ্ঠমহল থেকে জানা গেছে। গোবলয়ের ৩ রাজ্য, যা কার্যত বিজেপির গড় হিসাবে ধরা হয় (বিগত লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ১০০%-এর কাছাকাছি আসন বিজেপি পেয়েছিল এই তিন রাজ্যে), রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে বিজেপির এই পরাজয়ে কৃষকদের প্রতিবাদ যেভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তা নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। অবিচার, অত্যাচার, প্রাতিষ্ঠানিক ধ্বস, সরকারি এজেন্সির অপব্যবহারের বিরুদ্ধে এই জয়। যুব, দলিত, কৃষক, তপশিলি জাতি-উপজাতি সহ সমস্ত পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের সংখ্যালঘু ও সাধারণ সম্প্রদায়ের জন্য সরকার কোনো কাজ করেনি – এটা তারই ফল”। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ফলকে সরাসরি সেমিফাইনালের রায় বলে উল্লেখ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, “সেমিফাইনাল প্রমাণ করে দিল বিজেপি আর কোথাও নেই। এটা প্রকৃত গণতন্ত্রের ইঙ্গিত। ২০১৯ এ হবে ফাইনাল ম্যাচ। সবশেষে মানুষই গণতন্ত্রের ম্যান অফ দ্য ম্যাচ”। বিজেপির এই পরাজয়ের কারণ বিজেপির ‘ঔদ্ধত্য’ বলে মনে করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনিতেই তিনি বারবার দাবী করে এসেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্ত্বে দেশে গণতন্ত্র বিপন্ন। আর, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে – বিজেপির এই পরাজয় নতুন করে উৎসাহিত করবে বিরোধীদের, তা মমতা বান্দ্যোপাধ্যায়ের ট্যুইটেই প্রমাণিত। আপনার মতামত জানান -