এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মমতা কি দিশেহারা? দেওয়াল লিখন পড়তে পারছেন? শহীদ দিবসের পরিপ্রেক্ষিতে জল্পনা বাড়াল বাম-কং!

মমতা কি দিশেহারা? দেওয়াল লিখন পড়তে পারছেন? শহীদ দিবসের পরিপ্রেক্ষিতে জল্পনা বাড়াল বাম-কং!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গত লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে 18 টা আসন নিজেদের ঝুলিতে পুড়তে সক্ষম হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। যার ফলে 42 এ 42 এর স্লোগান তোলা তৃণমূল কংগ্রেসের চাপ অনেকটাই বেড়েছে। তবে ফলাফল পর্যালোচনায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সিপিএম এবং কংগ্রেস তাদের ভোট বিজেপিতে দিয়েছে। যার ফলে বিজেপি এতগুলো আসন পেয়েছে। পরবর্তীকালে এই ব্যাপারে সিপিএম এবং কংগ্রেসের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

বিভিন্ন সভা-সমিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই দুই দলের উদ্দেশ্যে বলেন, “সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে আপনারা এককাট্টা হন।” আর এবার সামনে যখন বিধানসভা নির্বাচন, ঠিক তার আগে তৃণমূলের শেষ একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে বাম এবং কংগ্রেসকে সেই একই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে তিনি বলেন, “বিজেপি টাকা দিয়ে ভোট কিনতে চাইছে। তাই বাম ও কংগ্রেসের উচিত গণতন্ত্রকে বাঁচাতে তৃণমূলের পাশে দাঁড়ানো‌।”

অর্থাৎ আগামীদিনে বিধানসভা নির্বাচনে যাতে বাম এবং কংগ্রেস তাদের ভোটব্যাঙ্ক বিজেপির দিকে সঁপে না দেয়, তার জন্যই এদিনের সভা থেকে এরকম মন্তব্য করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে তৃণমূল নেত্রী বাম এবং কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে এই বার্তা দিলেও, তাকে মান্যতা দিতে নারাজ সিপিএম এবং কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা মুখ খুলেছেন কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান এবং সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী। রাজ্যে গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসকেই দায়ী করেছেন তারা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিধানসভার কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝি দেওয়াল লিখন পড়তে পারছেন। তাই দিশেহারা দেখাচ্ছে। কোন গণতন্ত্রের কথা বলছেন উনি? বাংলার গণতন্ত্রকে খতম করে হিটলারের থেকে স্বৈরাচারী শাসন চালিয়েছেন। শহীদ দিবসের মঞ্চকে দলত্যাগের মঞ্চে পরিণত করেছেন। বিরোধী দলের বিধায়ক থেকে শুরু করে পৌরসভার কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত সদস্যদের অর্থের লোভ দেখিয়ে পুলিশের ভয় দেখিয়ে দলে নিয়ে গেছেন। তারা তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়েছে। কিন্তু উপনির্বাচনে মুখোমুখি হয়নি। এটা কিসের গণতন্ত্র?

তিনি এদিন বলেন, ‘বাম, কংগ্রেস কেন কেউই আর ওনাকে বাঁচাতে পারবেন না। তৃণমূল দলটাই আর থাকবে না। ঠিক যে রকম অগণতান্ত্রিক ভাবে তিনি বিরোধী দল ভেঙেছেন। তেমনই তৃণমূলও ভাঙবে। জানুয়ারি মাসেই একশ বিধায়ক আর ২০ জন মন্ত্রী দল ছাড়বেন’।লজ্জা হয় না? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে বিপদে পড়া বাঘের মত মনে হচ্ছে। কিন্তু বিপদ থেকে রক্ষা করে কি পুরস্কার পেয়েছিল গ্রামবাসীরা সকলেই জানে। বাংলার মানুষ এখন স্বৈরাচারীর আর্তনাদ শোনার অপেক্ষায় রয়েছে। স্বৈরাচারীর পতন অনিবার্য। কেউ ঠেকাতে পারবে না।”

একইভাবে বাংলায় বিজেপির বাড়বাড়ন্তের জন্য এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “বাংলায় বিজেপিকে কে নেমন্তন্ন করে এনেছে? কে বাংলার সাম্প্রদায়িকতার বীজ বুনেছে? মানুষ সব জানেন। একুশেই তার হিসাব হবে।”‌ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নিজের দলের ভোটব্যাঙ্ককে শক্ত করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে বাম এবং কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন। যাতে তারা নিজেদের ভোট নিজেরা ধরে রাখেন। তাহলে তৃণমূল কংগ্রেস কিছুটা হলেও ভালো ফলাফল করতে পারবে।

কিন্তু তৃণমূল নেত্রী বাম এবং কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে এই বার্তা দিলেও, পাল্টা আব্দুল মান্নান এবং সুজন চক্রবর্তী যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শেষের দিন চলে এসেছে বলে বুঝিয়ে দিলেন, তাতে তৃণমূলের অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। একাংশ বলছেন, প্রতিবার একুশে জুলাই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বক্তব্যের মধ্যে একটা উন্মাদনা লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু এবার তেমনটা ছিল না। তার বক্তব্যের পরোতে পরোতে ছিল সংশয়ের সুর।

সেদিক থেকে বিজেপি যে তার কাছে প্রধান ভয়ের কারণ, তা বাম এবং কংগ্রেসকে পাশে পাওয়ার বার্তাতেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এবার বাম এবং কংগ্রেস যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই আবেদনকে কার্যত খারিজ করে দিলেন, তাতে তৃণমূল নেত্রীর চাপ ক্রমশ বাড়বে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, 2021 এর রাজনৈতিক সমীকরণ ঠিক কি হয়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!