এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বিধায়কের বাড়িতে ডেপুটেশন দিতে গিয়ে হেনস্থা, পাল্টা কালো পতাকা-নিগ্রহ তৃণমূল সমর্থকদের

বিধায়কের বাড়িতে ডেপুটেশন দিতে গিয়ে হেনস্থা, পাল্টা কালো পতাকা-নিগ্রহ তৃণমূল সমর্থকদের

মুখ্যমন্ত্রীর ঝাড়গ্রাম সফরকালীনই শাসকদলের মতানৈক্য ফের প্রকাশ্যে এল। বিধায়কের বাড়িতে ডেপুটেশন দিতে গিয়ে বেধড়ক মারধোরের শিকার হলেন দলীয় কর্মীরা,এমনটাই অভিযোগ। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই দফায় দফায় পথ অবরোধ এবং বিধায়ককে হেনস্থার ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি ঘাটালে। নিজের বাড়ির সামনেই সমর্থকদের নিগ্রহের শিকার হন ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই। কালো পতাকা হাতে দেখিয়েই বিধায়ককে মারধোর করেন তাঁরা।

অন্যদিকে,বিধায়ক এবং তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে গ্রামবাসীদের মারধোর করার। এই দুটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় দুটি রাস্তায় অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধরা। এর জেরে প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে যানজট সৃষ্টি হয়। সপ্তাহের কর্মব্যস্ত দিনেই ভোগান্তিতে পড়েন নিত্য অফিস যাত্রীরা। পরিস্থিতির সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসতে হয় পুলিশকে। তারপরই অবরোধ উঠে যায় এবং পরিস্থিতির স্বাভাবিকতা ফেরে। এই ঘটনায় তীব্র অস্বস্তিতে দলীয় নেতৃত্বরা।

দলীয় সূত্রের খবর, ঘাটাল ব্লকের মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তথা তৃণমূল নেতা আব্দুস সালাম, শিমুলিয়া গ্রাম কমিটির সম্পাদক তোফাজুল হোসন সহ প্রায় ২০০জন বাসিন্দা এদিন উন্নয়নের দাবি নিয়ে বিধায়কের বাড়িতে স্মারকলিপি দিতে আসেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলাও ছিলেন। হাতে তৃণমূলের দলীয় পতাকা নিয়েই স্মারকলিপি জমা দিতে বিধায়কের বাড়ি গিয়েছিলেন তাঁরা।

ঘাটাল-ক্ষীরপাই সড়কের শিমুলিয়া বাসস্টপ থেকে এক কিলোমিটার দূরে বিধায়কের বাড়ি। যে উন্নয়নের দাবীগুলো ছিল বাসিন্দাদের,তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল এলাকার পানীয় জল এবং কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সংস্কারের দাবী এমনটাই জানান শিমুলিয়ার বাসিন্দা তোফাজুল হোসেন এবং শেখ ইয়ার মহম্মদরা। এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে কোনো উন্নয়ন না হওয়ার কারণে তাঁরা এদিন স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়েছিলেন এমনটাই বক্তব্য তাঁদের।

কিন্তু এই স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। জমা নেওয়া দূরের কথা,উল্টে তাঁদের উপরই চড়াও হন বিধায়ক। এমনকি বিধায়কের শ্যালক তথা ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সন্তোষ দিয়াসী সহ তাঁর পরিজনরা বেধড়ক মারধোর শুরু করেন ডেপুটেশন দিতে যাওয়া বাসিন্দাদের। এর প্রতিবাদ জানাতেই বিধায়কের বাড়ির সামনের রাস্তার মুখে অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। বিধায়ক ঝাড়গ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার সময় বিক্ষোভের সামনে পড়েন।

রীতিমতো কালো পতাকা দেখিয়ে তাকে আটকে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ওইসময় নাকি বিধায়ক বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে জুতোও দেখান,এমনটাই অভিযোগ। এই প্রেক্ষিতে বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। এলাকায় কেন উন্নয়ন থমকে রয়েছে তার কৈফিয়ত চেয়ে বিক্ষোভ করা হয়,ধস্তাধস্তি হয় এর জেরে। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিধায়কের গাড়ি ছেড়ে দিয়ে নতুন করে শিমুলিয়ার ঘাটাল-ক্ষীরপসই সড়ক অবরোধ করেন। প্রায় ৪৫ মিনিট অবরোধ করার পর পুলিশি তৎপরতায় সেই অবরোধ ওঠে।

এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা টোটো মির্জা জানান যে তাঁরা সকলেই তৃণমূলের সমর্থক। তবে বিধায়ক এলাকায় একটুও উন্নয়ন করেননি এটাও সত্যিই। পিচ রাস্তা থেকে বিধায়কের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তায় রোজ বহু গাড়ি যায়। সেই রাস্তাটা আজও ঢালাই হয়নি। মোরামে বাধানো মাত্র। এছাড়া দুবছর ধরে পানীয় জলের সঙ্কট তো রয়েইছে। এই সব সমস্যা সমাধানে বিধায়কের কোনো উচ্চবাচ্যই নেই। আর সেই জন্যেই ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙেছে গ্রামবাসীদের। যার পরিনামে এই অবস্থান বিক্ষোভ হল।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

 

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

তবে বিধায়ক তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। বলেন এদিন গ্রামবাসীদের সমস্ত উন্নয়নের দাবী মেনে নিয়ে বলেছিলেন পর্যায়ক্রমে কাজগুলো করে দেওয়া হবে। কিন্তু তাতেই তাঁরা চড়াও হয়ে পড়ে। বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তিনি এবং তাঁর পরিজনরা কোনোরকম মারধোর করেননি বলেই দাবী তাঁর। এখন এই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় সংগঠনের ফাটল রুখতে কী পদক্ষেপ নেবেন সেটা নিয়েই তীব্র চর্চা শুরু হয়েছে দলীয় অন্দরে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!