এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > বহিরাগত দুষ্কৃতী এনে মইদুল ইসলামকে খুনের প্রচেষ্টা? সামনে এল বিস্ফোরক অভিযোগ

বহিরাগত দুষ্কৃতী এনে মইদুল ইসলামকে খুনের প্রচেষ্টা? সামনে এল বিস্ফোরক অভিযোগ


মইদুল ইসলাম – বর্তমানে রাজ্যে এই নামটি শোনেন নি বা জানেন না, এমন ব্যক্তি বোধ হয় কষ্ট করে খুঁজতে হবে। মইদুলবাবুর লড়াইটা শুরু হয়েছিল সেই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দূর্নীতি ‘টেট কেলেঙ্কারি’ প্রকাশ্যে আনা দিয়ে আর তারপর গঙ্গা দিয়ে জল যত গড়িয়েছে ততই সুদীর্ঘ হয়েছে তাঁর লড়াইয়ের ইতিহাস। ক্রমাগত, জনগনের স্বার্থে সরকার বা শাসকের জনবিরোধী কার্যকলাপ ও মানুষের জ্বলন্ত ইস্যু নিয়ে আন্দোলন সংগঠিত করেছেন তিনি বলে তাঁর শুভানুধ্যায়ীরা দাবি করেন। যাতে, সর্বশেষ নিয়োজন – প্রাথমিক শিক্ষকদের দিয়ে প্রশাসন যে ডিও বা বিএলও ডিউটি করাচ্ছে তা ‘বেআইনি’ অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে তার উপর স্থগিতাদেশ আনার প্রচেষ্টা।

আর এবার সেই মইদুল সাহেবকেই নাকি খুনের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে! নাম না করে শাসকদলের এক শীর্ষনেতার দিকে এমনই এক বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল এবং মইদুলবাবু নিজে সেই অভিযোগ তোলেন তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার পেজে। সেখানে তাঁর পোস্টে তিনি যা লেখেন তার সারমর্ম হল, আজ সকাল ৮.৪০ মিনিটে কলকাতা থেকে আমার ডায়মন্ড হারবার বাড়িতে ২ জন শুভানুধ্যায়ী এসেছিলেন শুধু এটুকু বলতে যে, “যাঁর নির্দেশে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের সময় পুলিশের সাহায্যে বহিরাগত অস্ত্রধারীরা বিডিও বা এসডিও অফিস দখল করে বিরোধীদের নমিনেশনে বাধা দিয়েছিলেন, তিনি পরিকল্পনা করেছেন আমাকে বহিরাগত শুটার দিয়ে শুট করবেন”।

মইদুলবাবু আরো লিখেছেন, এর পিছনে মূল কারণ হল, তিনি ক্রমাগত জনগনের স্বার্থে সরকার বা শাসকের জনবিরোধী কার্যকলাপ ও মানুষের জ্বলন্ত ইস্যু নিয়ে আন্দোলন সংগঠিত করে চলেছেন। কখনো আক্রান্ত মানুষের দ্বারা, আবার কখনো বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের সাহায্যে – আর সর্বোপরি, ভোটের ডিউটি যে ‘অন্যায়ভাবে’ প্রশাসন শিক্ষকদের দিয়ে করাচ্ছে তার বিরুদ্ধে “শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ” গঠন করে হাইকোর্টে মামলা করার জন্য! এর সাথেই তাঁর আরো দাবি, আমার শুভানুধ্যায়ীরা আমাকে বলেছেন, যেহেতু আমাকে প্রলোভন দিয়ে থামানো সম্ভব নয় তাই তাদের এই সিদ্ধান্ত। আমি যেন অতিরিক্ত সতর্কতা নিয়ে চলি।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

মইদুলবাবুর সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্ট ঘিরে রীতিমত উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা রাজ্য। তাঁর এই পোস্ট শেয়ার হওয়ার পাশাপাশি কমেন্টের বন্যা – তাঁর শুভানুধ্যায়ীদের ও অনুগামীদের। সকলেই ধিক্কার জানানোর পাশাপাশি – এই লড়াইয়ে তাঁর পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। এই প্রসঙ্গে টেলিফোনে মইদুলবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অনেকেই লিখেছেন, তাঁর সাথে পরিচয় না থাকলেও – এই ঘৃণ্য চক্রান্ত কার হতে পারে তার একটা আন্দাজ পাওয়া যাচ্ছে, সুতরাং এই লড়াইয়ে তাঁর পাশে তাঁরা সর্বোতভাবে আছেন। আর তাই, এইভাবে প্রাণের ভয় দেখিয়ে তাঁকে দমিয়ে রাখা যাবে না – তিনি তাঁর লড়াই চালিয়ে যাবেনই।

এর সঙ্গেই মইদুলবাবু জানান, যে দুই শুভানুধ্যায়ী আমাকে আজ একথা জানাতে কলকাতা থেকে এত দূরে ছুটে এসেছিলেন তাঁদের আমার ধন্যবাদ। তবে তাঁরা যেন সেইসব বহিরাগত দুষ্কৃতী ও তাঁদের নির্দেশকারীকে বলে দেন, যদি আমাকে গুলি করা হয় তাহলে যেন তার পরে আমার গলা কেটে দেয় – না হলে শুধু কাপুরুষের মতো গুলি করে পালালে মানুষের আশির্বাদে আমি ঠিক বেঁচে যাব। আর আমার পরিবারকে আজ সকালে বলে বেরিয়েছি, যদি ওদের অসৎ উদ্দেশ্য সফল হয়, তাহলে যেন আমার মৃতদেহ নিয়ে শাসকের শীর্ষস্তরের সামনে রেখে মানুষের স্বার্থে আন্দোলন সংগঠিত করে।

এর পাশাপাশিই, মইদুলবাবু জানান, তবে এই ঘটনা আমার কাছে নতুন নয়। আমি জানি আমি মানুষের স্বার্থে সঠিক পদক্ষেপ নিচ্ছি – আর তাই যাঁদের স্বার্থে ঘা লাগছে তাঁরা তো আমাকে সরিয়ে দিতে চাইবেনই! তবে মৃত্যুভয় আমি করি না – করলে সাধারণ মানুষের স্বার্থে এইভাবে জনবিরোধী সিদ্ধান্তে আমি ঝাঁপিয়ে পড়তে পারতাম না। ‘টেট কেলেঙ্কারি’, ‘আক্রান্ত আমরা’, ‘শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ’ – যত দুর্নীতি, যত অন্যায় – তত সাধারণ মানুষের স্বার্থে আমাদের আন্দোলন, আর তা যে বর্তমান শাসকদলকে ভীত করছে, তা এইসব ঘটনায় প্রমাণিত। আমি নিজের প্রাণের ভয় করি না – কিন্তু এই ঘটনায় প্রমাণিত, পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্র আজ কতটা ভুলুন্ঠিত! নানা কারণে বর্তমান রাজ্য সরকারের উপর আমার আস্থা নেই, তাই এই ঘটনা আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে জানিয়ে রাখতে চাই। তবে লড়াই-আন্দোলন থেকে আমি পিছিয়ে আসব না, যতই আমাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হোক।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!