স্কুলক্রীড়ার নামে আদতে চলছে শাসকদলের ভোটপ্রচার, সঙ্গে চরম অব্যবস্থা – ক্ষোভে ফুঁসছেন শিক্ষকসমাজ ও সুধীজন সমাজ নদীয়া-২৪ পরগনা বিশেষ খবর রাজ্য December 9, 2018 রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন জেলা জুড়ে চলছে বিভিন্ন স্কুলের বিভিন্ন স্তরের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। আর সেই স্কুলক্রীড়া কার্যত শিক্ষকদের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে সেখানে চলছে রাজনৈতিক প্রচার – এই অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন রাজ্যের শিক্ষকমহল ও সুধীজন সমাজ। রীতিমত নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দিয়ে ও ঘটনার বিবরণ দিয়ে চলছে তুমুল প্রতিবাদ। রাজ্যজুড়ে শিক্ষাঙ্গনে ও শিক্ষকদের প্রতি অন্যায় হলেই ছুটে গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতিকারের প্রচেষ্টা করে শিক্ষকদের যে সংগঠন , সেই শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের শীর্ষনেতা ও রাজ্যের অন্যতম প্রতিবাদী শিক্ষক মইদুল ইসলামও নিজের ফেসবুক পোস্টে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘটনার কথা জানিয়েছেন। ‘চরম নির্লজ্জতা’ নামে একটি ফেসবুক পোস্টে মইদুলবাবু জানিয়েছেন, গতকাল ও আজ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিদ্যালয়ের “জেলা বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা” অনুষ্ঠিত হল বজবজ ও বজবজ দক্ষিন চক্রের উদ্যোগে, বজবজের নিশ্চিন্তপুরের বিবিটিআই কলেজ মাঠে। সেখানে অবাক করার মতো বিষয় হল – ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে ১. চারদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ও তাঁর ভাইপো তথা লোকসভার সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি ও স্থানীয় তৃনমুল নেতাদের ছবিতে ছেয়ে গেছে। ২. গতকাল রাতে জেলার দূর-দূরান্ত থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা ও অভিভাবক সহ শিক্ষক-শিক্ষিকারা এসেছিলেন। তাঁদের খাওয়ার কোন ব্যবস্থা ছিল না, এমনকি রাতে থাকার ব্যবস্থা পর্যন্ত ছিল না। রাত ১০.৩০ পর্যন্ত ঠান্ডা কুয়াশায় ছোট ছোট ছাত্রছাত্রীরা মাঠেই থাকতে বাধ্য হয়েছিল। অধিকাংশ কর্মচারী ও শিক্ষক কাছাকাছি অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। যাঁরা অগত্যা থেকে যেতে বাধ্য হয়েছেন রাতে – তাঁদের শেষপর্যন্ত কোনোরকমে মুড়ি খেয়ে কাটাতে হয়েছে। সাংসদের কর্মচারীদের অবস্থা আরো খারাপ – তাঁরা রীতিমতো ক্ষুব্ধ। কিন্তু, নিরুপায় – আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। ৩. আজ সকালে আমি গিয়ে দেখলাম মঞ্চটা এতো বড়ো যে কোনো ক্যামেরার ফ্রেমে আসবে না – একসাথে ১২০ জন নেতা বসতে পারবেন। ৪. (ছবিতে দিয়েছি) ফ্লেক্সে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীচে কবিগুরুর ছবি – আর তাঁর ভাইপো তথা সাংসদের পাশে। হায় রে! কি শিক্ষায় দিচ্ছি আমরা আগামী প্রজন্মকে! ৫. কুপন নিয়ে যখন দুপুরে খেতে যাই দেখি চারজন ‘অশিক্ষিত’ ছেলে, যাদের মাথার চুল লাল, গালে গূটকা – শিক্ষকদের বলছে “এই তোর কুপুন দাও”!! ৬. জেলার খেলাটা শিক্ষক সংগঠনের থেকে কেড়ে নিয়ে শাসকদলের নেতারা মেলার মতো চালাচ্ছেন। চারদিকে কোটি কোটি টাকা তোলা তুলেছে – অথচ ব্যবস্থাপনা এতো খারাপ যে সমস্ত শিক্ষকরা অবাক। যদিও বর্তমানে এটারই ট্রেন্ড চলছে! ৭. দুপুরের খাবারের মান অতি নিম্ন – মাংসটা কিসের বোঝার উপায় নেই! অনেকে সন্দেহ করছিলেন- “ভাগাড়ের মাংস” নয় তো? ৮. আসলে খেলা বা শিক্ষক-ছাত্র বড়ো বিষয় নয়, এটা এখন ব্যবসা হয়েছে! টাকা উর্পাজনের! এরপরেই মইদুলবাবু প্রশ্ন তুলেছেন – আপনাদের কাছে প্রশ্ন, একজন শিক্ষক হিসাবে – এরূপ ব্যবস্থাপনায় খেলার আসল উদ্দেশ্য কি পূরণ হচ্ছে? আধিকারিকরা তাঁদের মেরুদন্ড বাঁকাতে বাঁকাতে এমন জায়গায় নিয়ে গেছেন যে, নিজের বাক-স্বাধীনতা বিসর্জন দিয়েছেন!আর তাই শেয়ার করে মানুষকে সত্যটা জানান। মইদুলবাবুর এহেন বিস্ফোরক ফেসবুক পোস্ট দেখে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হলে, তিনি স্বীকার করে নেন – এই পোস্ট তাঁরই করা এবং বর্তমানে শিক্ষাঙ্গনে যেভাবে রাজনীতি ঢুকে গেছে তার প্রতিবাদ জানাতেই তিনি রীতিমত ছবি দিয়ে এহেন পোস্ট করেছেন। তিনি আরও জানান, এই ঘটনা তিনি সুশীল সমাজের অনেককেই জানিয়েছেন এবং তাঁরাও এই ঘটনায় যার পর নাই ক্ষুব্ধ। তাই, তিনি এই ঘটনা তিনি সামগ্রিকভাবে সমাজকে জানাতে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেছেন। এই খবরের সূত্র হল শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের শীর্ষনেতা মইদুল ইসলামের ফেসবুক পোস্ট ও তাঁর সঙ্গে টেলিফোনে কথোপকথন। এখানে ব্যবহৃত শব্দ ও ভাব সম্পূর্ণভাবে মইদুলবাবুর, আমরা শুধুমাত্র তাঁর কথা প্রকাশ করেছি। এই প্রবন্ধ সম্পূর্ণরূপে ওই ফেসবুক পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে করা, কোনোভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয় বা কোনো ব্যক্তি বা দলের সম্মানহানির উদ্দেশ্যে রচিত নয়। মুখ্যমন্ত্রীর ও সাংসদের পাশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি দেয় নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বার্ষিক স্কুলক্রীড়ার অনুষ্ঠান স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের ছবি দেওয়া ফ্লেক্সে মুড়ে দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। আপনার মতামত জানান -