এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > অপরাজিতা > মৃণালিনীর প্রেম -(লাভ স্টোরি)- কলমে অপরাজিতা – পর্ব ৭

মৃণালিনীর প্রেম -(লাভ স্টোরি)- কলমে অপরাজিতা – পর্ব ৭


হ্যাঁ অভি ভালোবাসে একজনকে শ্রেয়সী , যদিও সে একটু খেপি টাইপের, সব সময় অভিকে সন্দেহ করে, কারণটাও অদ্ভুত। শ্রেয়সীর মনে হয় যেহেতু অভিকে দেখতে সুন্দর তাই সব মেয়েরা নাকি অভিকে পেতে চায় আর সেই সুযোগটাই অভি নেয়। অনেকবার এই নিয়ে ঝগড়া ঝাটি, অশান্তি হয়েছে। কখনো অভি রেগে ব্রেক আপ করে করে নিয়েছে ফের ক্ষমা চেয়ে মানিয়ে নিয়েছে। শ্রেয়সীকে দেখতেও খুব সুন্দর। কিন্তু অভির তো সন্দেহ হয় না শ্রেয়সীকে নিয়ে। তবে কেন শ্রেয়সী অভিকে নিয়ে এত সন্দেহ করে। কেন অভি -শ্রেয়াসীর সাথে একসঙ্গে থাকে না ? তাতে সন্দেহ ! অভির বাড়ি থেকে মানবে না। ওরা পুরোনো দিনের ভাবধারার মানুষ. অভি নিজেও খানিকটা তাই। আর তাতে সন্দেহ তাহলো শ্রেয়সী একসঙ্গে থাকলে অভি নিজের মতো উৎশৃঙ্খল জীবনযাপন করতে পারবে না।

এই বিয়ে বাড়িতে অভি আসে সেটাও পছন্দ ছিল না শ্রেয়াসীর। ওর ধারণা ছিল এখানে ভালো সুন্দর মেয়ে দেখে তাকে নিয়ে ফ্লাটিং করবে অভি। হাজার বুঝিয়ে তবে মেনেছে। অভির বন্ধু সৌরভ হাজারবার বুঝিয়েছে অভিকে বলেছে এই সম্পর্কটা থেকে বেরিয়ে আসতে, সৌরভের বক্তব্য – যদি শ্রেয়সী ভালোবাসবে তবে এত সন্দেহ কিসের? সব কিছুতে সন্দেহ করে শ্রেয়সী।বিয়ে করলে অভির জীবনটা কয়লা হয়ে যাবে। কিন্তু অভি পারেনি। কি করে পারবে অভি যে খুব ভালোবাসে শ্রেয়সীকে।

বিয়ের আগের দিন কল করেছিল শ্রেয়সী। অনেক্ষন কথা হয়েছে। তবে বেশিরভাগটাই ওই। কেন গেলো অভি? মেয়ে দেখবে বলেই গেছে। কনের বোন আছে কিনা? কেমন দেখতে ? অভি বলেছে জানে না,আগ্রহ নেই। বিশ্বাস করেনি শ্রেয়সী। তার ধারণা অভি লুকাচ্ছে ওকে। এক প্রস্থ ঝামেলা হয়েছে দুজনের। রাতটা বেজার হয়েই কেটেছে অভির। বিয়ে বাড়ির আনন্দটাই মাটি মনে হচ্ছে। ভালো লাগে না এই অশান্তিগুলো কেন যে আসতে গেলো। শ্রেয়সী তো এই কদিন আগেই ঘুরে এলো বিয়েবাড়ি. বিয়েবাড়িতে এত বিজি যে অভিকে কল করতেও মনে ছিল না। অভি তো কিছু মনে করেনি। তারপর কে বৌদির কোন দাদার সাথে সেলফি তুলে পোস্ট করলো তাতেও কিছু বলেনি অভি। কিন্তু যখন কলকাতায় আলাদা করে ডিনারে গেছে শ্রেয়সী তখন অভি প্রশ্ন করে বেজায় চটেছে শ্রেয়সী। কেন অভি তাকে এসব প্রশ্ন করছে ? এই তো দুদিন পরেই শ্রেয়সী ফিরে যাবে পুনেতে। তবে অভি এসব বলছে কেন? অভি সন্দেহ করছে তাকে ?এই ভালোবাসে অভি। ঘুরিয়ে বলার সাহস হয়নি অভির যে কথায় কথায় যখন শ্রেয়সী অভিকে সন্দেহ করে ঠিক এমনি কষ্ট হয় অভির। কথা বলেনি দুদিন। অভি ক্ষমা চেয়েছে ফের কথা হয়েছে। কোনো মতে টিকে আছে সম্পর্কটা। না অভি মানে না সেটা। তার ধারণা শ্রেয়সী যতই বলুক সেও অভিকে খুব ভালোবাসে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই দুদিন টুকটাক কথা হয়েছে অভির সাথে শ্রেয়াসীর। অভি কথা বলতে চেয়েছে শ্রেয়সী ব্যাস্ত বলে ফোন কেটে দিয়েছে। ইচ্ছা করছিলো খুব অভির ওর সাথে বিয়েবাড়ির গল্প করতে কিন্তু না কথা হয়নি। সময় কোথায় শ্রেয়াসীর? বেশিরভাগ সময়টাই পার্টি, বন্ধুবান্ধ নিয়েই কেটে যায়। অনেকবার অভি বলেছে এবার বিয়েটা সেরে ফেলাই ভালো , কিন্তু না শ্রেয়সী এখনই বিয়ে করতে রাজি নয়। ও এখনই এসবে জড়াতে চায় না। অভি বলছে ঠিক আছে কিন্তু বাড়িতে জানানো তো দরকার , না তাতেও আপত্তি। আর সেই কারণেই বাড়িতে কেউই জানে না শ্রেয়াসীর কথা। বলতে গিয়েও বলতে পারে নি শ্রেয়সীর কথা।

সন্ধেবেলায় শ্রেয়সী ফোন করে অভিকে বলেছে সে আর কোনো সম্পর্ক রাখতে চায় না অভির সাথে কেননা অভি ওকে চিট করেছে।কি চিট করেছে? না অভি এখানে অন্য একটা মেয়ের সাথে ফটো তুলছে, বৃষ্টিতে ভিজছে, নাগরদোলা চাপছে ,সেই মেয়ে অভিকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে। সে সব ছবি অভিকে ট্যাগ করে আপাতত ফেসবুকে শেয়ারও হয়ে গেছে।

 

ও একটা কথা বলা হয়নি তা হোলো – এখানে একটা ছোটোখাটো মেলা বসেছে, কিছু একটা পুজো উপলক্ষে, বিকালের দিকে কয়েকজন গিয়েছিলো মেলা দেখতে। ছিল মৃণালিনী আর অভি, নন্দিনী, ওর বর সবাই। কথা ছিল একটু পরেই ফিরে আসবে। কিন্তু তাড়াতাড়ি ফেরা হয়নি। মেলায় জিলাপি ,বাদাম খাওয়া হয়েছে , ছোট গুলো সব বেলুন কিনেছে। মৃণালিনী কিছু কেনেনি , ওখানে মাটির কটা জিনিস বিক্রি হচ্ছিলো , তার মধ্যে ছিল একটা মাটির মূর্তি, মীরা বাই একতারা হাতে বসে মগ্ন। বেশ লেগেছিলো কিন্তু টাকা আনেনি। মূর্তিটা হাতে নিয়ে দেখে রেখে দিয়েছে। চাওয়ার স্বভাব ওর নেই, বিভাসদা, অরূপদা নন্দিনীদির বর অনেকবার বলেছে কি চাই? মৃণালিনী বলেছে শুধু জিলাবি খাবে, দুটো তিনটে খেয়েছে।

একটা ছোট নাগরদোলা বসেছে। নন্দিনী চাপবে, সঙ্গে সবাই , একা মৃণালিনী না বলেছে ,সে নাগরদোলায় ভয় পায়। নন্দিনী বলেছে শুনবে না কিছু, বৃষ্টির জলে সে ভিজতে চায়নি কিন্তু জোর করে টেনে মৃণালিনী ভিজিয়েছে এবার নাগরদোলা চাপতেই হবে। মৃণালিনী ছুটেছে পিছনে নন্দিনী। পারেনি ধরতে, শেষে হাল ধরেছে অভি। সে মৃণালিনীকে ধরে এনেছে। সে সব মুহূর্ত ভিডিও আর পিকচারে বন্দি। নন্দিনী, পূজা অভি আর মৃণালিনী একটাতে। নন্দিনীর পাশে অভি বসতে গিয়েছিলো, নন্দিনী পূজাকে টেনে নিয়ে অভিকে মৃণালিনীর পাশে বসিয়েছে, বুঝেছে অভি। মৃণালিনী বোঝেনি কেননা তার এদিকে কোনো মন নেই , সে খুব ভয় পাচ্ছে। মুখ দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। নাগরদোলা নিজের মতো ঘুরতে শুরু হলো, একটু পরেই মৃণালিনী অভির হাতটা খপ করে ধরলো, নন্দিনী দেখেও না দেখার ভান করেছে। মৃণালিনীর পাশে যে প্ল্যান করে তাকে বসানো হয়েছে সেটা অভি বুঝেছে, কেননা সে জামাইবাবুদের সাথেই উঠছিলো কিন্তু সেখানে নন্দিনী স্নেহাকে পাঠিয়ে দিয়েছে। আর অভিকে ডেকে নিয়েছে। বাকিদেরকেও এইভাবেই নাগরদোলায় বসিয়েছে।

 

মৃণালিনী খুব  ভয় পায়, একবার পড়তে পড়তে বেঁচে গিয়েছিলো আর তার পর থেকে আরো বেশি ভয়, আর চাপেনা নাগরদোলায়।অভি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বললো – এই এত ভয় পাচ্ছ কেন? নাগরদোলা জোরে ঘোরা শুরু হলো এবার আর সামলাতে পারেনি মৃণালিনী অভিকে জড়িয়ে ধরলো। বেশ অস্বস্তিকর পরিবেশ। নন্দিনী হেসে ফেলেছে, অভি রীতিমতো কড়া চোখে তাকাচ্ছে। কিন্তু নন্দিনী তবুও হাসছে। আর ওদিকে স্নেহও জামাইবাবুকে জড়িয়ে বসে আছে সেই মুহূর্তও ক্যামেরাবন্দি।

আর সেই কথাই বলছে শ্রেয়সী, সেই ছবিই শেয়ার হয়েছে ফেসবুকে। শেয়ার করেছে মৃণালিনী নিজেই। না ভেবেই একটা ছোট কিন্তু অনেক বড় ভুল করে ফেলেছে মৃণালিনী। সে সবার পিকচার একটা একটা করে শেয়ার করেছে। তাতে যার সাথে পিকচার শেয়ার করেছে তাকে ট্যাগ করে উইথ লাভ। সেখানে যেমন অভি আছে ঠিক তেমন বাকিরাও আছে। কিসের কি মানে হয় না বোঝেনা মৃণালিনী। সে সবাইকেই খুব ভালোবাসে আর তাই উইথ লাভ, ফিলিংস লাভ,এই সব লিখে পোস্ট করেছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!