এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মৃত বিজেপি নেতার বাড়ি থেকেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ‘বোমারু মন্ত্রী’ বলে আক্রমন বিজেপি নেতাদের

মৃত বিজেপি নেতার বাড়ি থেকেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ‘বোমারু মন্ত্রী’ বলে আক্রমন বিজেপি নেতাদের


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলার বুকে নিয়মিত বেড়ে চলেছে তৃণমূল বিজেপির রাজনৈতিক সম্পর্কের উত্তাপ। একই সাথে পাল্লা দিয়ে রাজ্যজুড়ে দু’দলের মধ্যে চলছে হানাহানি, গন্ডগোল, হত্যার মতো ঘটনা। তবে দুই শিবিরের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে সম্প্রতি বিজেপি কর্মী রবীন্দ্রনাথ মন্ডলের হত্যার ঘটনায়। উত্তর 24 পরগনা জেলার হিঙ্গলগঞ্জ এর বিজেপি নেতা রবীন্দ্রনাথ মন্ডল কে সম্প্রতি খুন করা হয়েছে বলে দাবি তোলে বিজেপি। আর এই ঘটনাকে নিয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে এদিন তৃণমূলের হেভিওয়েট মন্ত্রীকে ‘বোমারু মন্ত্রী’ বলে অভিহিত করা হয়। বিজেপির দাবী, তৃণমূলের এই মন্ত্রীর নির্দেশেই শুরু হয়েছে এলাকায় খুনের রাজনীতি।

ঘটনার সূত্রপাত গত 12 ই অক্টোবর। কৃষি বিলের পক্ষে এবং রাজ্য সরকারের আম্ফান দুর্নীতির বিপক্ষে একটি পথসভা করার সিদ্ধান্ত নেয় গেরুয়া শিবির উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হিঙ্গলগঞ্জের যোগেশগঞ্জ এলাকায়। 12 ই অক্টোবর সেই অনুযায়ী উত্তর 24 পরগনা জেলার যোগেশগঞ্জ এলাকায় বিজেপির একটি পথসভা করার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ সেই সভার অনুমতি দেয়না। কিন্তু এই পথসভার আয়োজন উপলক্ষে হিঙ্গলগঞ্জ এর যোগেশগঞ্জ এলাকা গেরুয়া পতাকায় ঢেকে যায় বলে জানা গিয়েছে। আর সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন 234 নম্বর বুথ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ মন্ডল।

পরদিন অর্থাৎ13 ই অক্টোবর তৃণমূলের বেশকিছু সদস্য বিজেপির পতাকাগুলো খুলতে শুরু করে বলে অভিযোগ জানানো হয়েছে গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে। তাছাড়া ওইসময় বিজেপি সদস্যরা বাধা দিতে গেলে তাঁদের ওপর আক্রমণ করে তৃণমূল সদস্যরা বলে শোনা যাচ্ছে। বিজেপি অভিযোগ করেছে, তৃণমূলের লোকজন তাঁদের পতাকা ছিঁড়ে দেয় এবং বিজেপি সদস্যরা বাধা দিতে গেলে তাঁদের ওপর আক্রমণ চালায় লোহার রড, বাঁশ এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে। এবং এই আক্রমণের কারণেই অসুস্থ হয়ে পড়েন বুথ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ মন্ডল। অতর্কিত হামলায় তিনি আহত হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু ক্রমশ তাঁর অবস্থা অবনতির দিকে যেতে থাকে।

এক সময় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হলেও শেষ রক্ষা করা যায়নি। কিছুদিন ভর্তি থাকার পর গত সোমবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর খবর গ্রামে এসে পৌঁছাতেই শুরু হয় তুমুল উত্তেজনা। শেষ মুহূর্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। অন্যদিকে হিঙ্গলগঞ্জে মৃত বিজেপি কর্মী রবীন্দ্রনাথ মন্ডলের পরিবারের সঙ্গে বুধবার রাজ্য বিজেপির এক প্রতিনিধি দল দেখা করতে যান। এই প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন অর্জুন সিংহ, সৌমিত্র খাঁ, এবং সুভাষ সরকারসহ অন্যান্যরা। তাঁরা জানিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথ মন্ডলের পরিবারকে 5 লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। অন্যদিকে মৃতের ছেলে সৌরভ মন্ডল বিজেপি নেতাদের কাছে অনুরোধ করে ছেলে সৌরভ, বাবার খুনিরা যাতে ধরা পরে এবং পরিবার যাতে ভেসে না যায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে সৌমিত্র খাঁ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় জেলায় বোমারু মন্ত্রী তৈরি করেছেন। এবং উত্তর 24 পরগনার বোমারু মন্ত্রী হলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলে অভিযুক্ত করেছেন সৌমিত্র খাঁ। অন্যদিকে অর্জুন সিং রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে পুরো ঘটনায় উত্তর 24 পরগনার তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, পুলিশের ওপর নির্দেশ আছে এই খুনের ঘটনায় জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার করতে। অন্যদিকে এদিন বিজেপির পক্ষ থেকে রবীন্দ্রনাথ মন্ডলের পরিবারকে 5 লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়।

একইভাবে তৃণমূল নেতাও রবীন্দ্রনাথ মন্ডলের পরিবারের হাতে দু লক্ষ টাকা তুলে দেওয়া হবে বলে জানান। আপাতত হেমনগর কোস্টার থানার মঙ্গলচণ্ডী গ্রামে উত্তেজনা চরমে। এই ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব কে অভিযুক্ত করা হয়েছে বিজেপি নেতার পরিবারের পক্ষ থেকে। এবং অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিজেপি। যদিও তৃণমূল শিবিরের দাবি, তাদের দলের কেউ এই হত্যার সঙ্গে জড়িত নয়। এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি করছে বিজেপি।

আপাতত হেমনগরের ঘটনা নিয়ে আগামী বেশ কিছুদিন যে রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। আর একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলবে বিজেপি ও তৃণমূলের ভোট পর্বের লড়াই বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিজেপি নেতা রবীন্দ্রনাথ মন্ডলের হত্যার ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশ তদন্তে নেমেছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু পুলিশের হাতে অবশ্য এখনো পর্যন্ত হত্যাকারী ধরা পড়েনি। এই ঘটনার রেশ এখন কোন দিকে এগোয়, সে দিকে কড়া নজর রাখবে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!