এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মুখ পুড়ছে রাজ্যের! বাধ্য হয়েই বামেদের ওপর দায় চাপালেন ফিরহাদ? কটাক্ষ বিরোধীদের!

মুখ পুড়ছে রাজ্যের! বাধ্য হয়েই বামেদের ওপর দায় চাপালেন ফিরহাদ? কটাক্ষ বিরোধীদের!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-এই রাজ্যের মানুষ অনেক আশা করে, অনেক ভরসা করে তৃণমূলকে ক্ষমতায় এনেছিল। রাজ্যে পরিবর্তনের প্রধান বিষয় ছিল যে, বিগত বাম আমলে যে অব্যবস্থাগুলো ছিল, সেগুলো তৃণমূল সরকার এসে কমানোর চেষ্টা করবে। রাজ্যে গণতন্ত্রকে স্বাস্থ্যকর রাখতে এবং মানুষকে ভালো রাখতে তারা জনহিতকর পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু এতদিনে মানুষের তৃণমূলের প্রতি যে বিরক্ত তৈরি হয়েছে, তাতে নতুন করে এটা বলতে হবে না যে, এই সরকারের বিদায়ের ঘন্টা বেজে গিয়েছে। বিরোধীদের দাবি, এই রাজ্য সরকার এখন সব ব্যর্থতার দায় চাপাতে শুরু করেছে তাদের ওপর। কোথাও তারা দেখছে বিজেপির চক্রান্ত, আবার কোথাও বা বিগত বাম আমলের ব্যর্থতার ভূত দেখতে শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার মন্ত্রীরা। বেআইনি নির্মাণ হোক বা সন্দেশখালির মত ঘটনা, সব ঘটনাতেই নিজেদের ব্যর্থতাকে না দেখে কি করে বিরোধীদের ঘাড়ে দোষ চাপানো যায়! সেই চেষ্টায় এই রাজ্য সরকার করছে। আর এবার সেই রকমই একটি কাজ ভোটের মুখে করলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বিরোধীদের দাবি কিন্তু তেমনটাই। কিন্তু কি করেছে রাজ্য? এদিন গার্ডেনরিচের একটি বহুতল ভেঙে পড়ার পরেই বিভিন্ন চর্চা শুরু হয়েছে। প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। আর তারপরেই গোটা ঘটনায় রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পৌরসভার মেয়র যে কথা বললেন, তারপর সোচ্চার হতে শুরু করেছে বিরোধীরা।

প্রসঙ্গত, গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনা নিয়ে উত্তাল গোটা রাজ্য। সকাল থেকেই সেখানে রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পৌরসভার মেয়র শ্রী ফিরহাদ হাকিম এবং দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলে আসেন এবং যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের হাসপাতালে দেখতে পৌঁছে যান। কিন্তু এত পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও, অন্য একটি বিষয় নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পৌরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম তিনি আবার গোটা ঘটনায় দায় চাপিয়েছেন বিগত বাম সরকারের দিকে। তার দাবি, বামা আমলে এই সমস্ত বেআইনি নির্মাণ তৈরি হয়েছে। আর এখানেই প্রশ্ন যে, এটা কি দোষারোপ করার সময়? তৃণমূল সরকারের আমলেও তো এমন অনেক কাজ হয়েছে, যেটা অত্যন্ত বিতর্কিত। মানুষ কিন্তু সন্দেশখালি থেকে শুরু করে বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনায় তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ফলে প্রত্যেকটি সরকার যে চিরজীবন ক্ষমতায় থাকবে, এমনটা নয়। একদিন তৃণমূলকেও বিদায় নিতে হবে এই রাজ্যের ক্ষমতা থেকে। আর তখন যদি তৃণমূলের এই অব্যবস্থা নিয়ে সেই সময় যারা শাসক দলে থাকবে, তারা প্রশ্ন করে, তখন তৃণমূল সেটা মেনে নিতে পারবে তো? আর সব থেকে বড় কথা, যে কোনো ঘটনা হোক বা দুর্ঘটনা, রাজ্যের শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা নিজেদের ব্যর্থতাকে ঢাকার জন্য, নিজেদের নজরদারি না থাকার জন্য বিরোধীদের দিকে দোষারোপ করতে শুরু করেন। এক্ষেত্রেও তেমনটাই হলো। সকাল থেকে সেখানে পড়ে থাকলেন রাজ্যের মন্ত্রীরা, তাদের যেটা কাজ, সেটা তারা করলেন ঠিকই। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এমন কিছু মন্তব্য করলেন ববি হাকিম, যেভাবে বিগত বাম সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন তিনি, তাতে এক বালতি দুধের মধ্যে একটু চোনা ফেলে দিলে যেভাবে গোটা দুধটা নষ্ট হয়ে যায়, ঠিক তেমনটাই হলো। তৃণমূল সরকারের হয়ে যারা গার্ডেনেরিচের ঘটনায় সমব্যথী বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন, তাদের সেই বিষয়টি রাজনীতি করণের মধ্যে পড়ে গেল বলেই মনে করছেন একাংশ।

পর্যবেক্ষকদের মতে, কি দরকার ছিল ববি হাকিমের এমন কথা বলার? তারা তো এখন সরকারে আছেন। তাদের তো দায়িত্ব যে ঘটনা ঘটেছে, সেই ঘটনায় আর্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। গোটা ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে যাতে ভবিষ্যতে এরকম কোনো ঘটনা না ঘটে, তার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কিন্তু সব ক্ষেত্রে বিরোধীদের ওপর দায় চাপানো কি এই সরকারের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে? তাহলে সব থেকে বড় প্রশ্ন যে, তৃণমূলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেন! তাদেরকে রাজ্যের মানুষ ক্ষমতায় এনেছে তো বিগত বাম সরকার ভুল করেছে, সেই কারণেই। সেক্ষেত্রে ক্ষমতায় বসে তারা এক ভুল করবেন, আবার বাম সরকারের দিকে আঙ্গুল তুলবেন, এটা কেমন কথা? তাহলে তো আবার একটা পরিবর্তন করতে হবে এই রাজ্যের মানুষকে। এটা কেন ভুলে যাচ্ছেন ববি হাকিমের মত ব্যক্তিরা? রাজ্যের ক্ষমতায় থাকলে, চেয়ারে থাকলে অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। সমালোচনা তো অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে হবে। কিন্তু সেটাকে গ্রহণ না করে যদি দমন করার চেষ্টা হয় এবং বারবার প্রমাণ করার চেষ্টা হয় যে, তারা কিছু করেনি, যা হয়েছে বিগত বাম আমলে হয়েছে, তাহলে এই রাজ্য সরকারের কাছে কিছু গঠনমূলক প্রত্যাশা করাই বৃথা। বিরোধীদের বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!