এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মুখ্যমন্ত্রী গালভরা নাম দিয়ে প্রকল্প চালু করলেও টাকার জন্য তাকিয়ে সেই কেন্দ্রের দিকেই?

মুখ্যমন্ত্রী গালভরা নাম দিয়ে প্রকল্প চালু করলেও টাকার জন্য তাকিয়ে সেই কেন্দ্রের দিকেই?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তৃণমূলের শাসনকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছেন। তাই নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। অন্যদিকে এই প্রকল্প নিয়ে প্রায়শই কেন্দ্র-রাজ্য টানাটানি হয়েছে বহু সময়। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বোধন করেন রাজ্যজুড়ে পথশ্রী অভিযান প্রকল্পের। কিন্তু এই প্রকল্প রূপায়ণের টাকা কিভাবে আসবে, তা নিয়ে শুরু থেকেই ছিল প্রশ্ন। এই প্রকল্প অনুযায়ী রাজ্যজুড়ে 12 হাজার কিলোমিটার রাস্তা নতুন করে তৈরি করার জন্য পথশ্রী অভিযান প্রকল্প শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু সেই প্রকল্পের জন্য অর্থ দপ্তরের পক্ষ থেকে কোনরকম টাকা বরাদ্দ হয়নি।

তাহলে সেই টাকা আসবে কোথা থেকে? রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্যে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ ছাঁটাই অব্যাহত থাকবে সারা বছর জুড়ে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে পথশ্রী অভিযানের টাকা আসছে কোথা থেকে? আর এই প্রসঙ্গে আলোকপাত করেছেন পঞ্চায়েত কর্তাদের একাংশ। তাঁরা জানিয়েছেন, প্রতি কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা সারাই করতে গড়ে খরচ দাঁড়ায় 10 লক্ষ টাকা। 12 হাজার কিলোমিটার রাস্তা সারাই করতে গেলে খুব স্বাভাবিকভাবেই খরচার পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াবে বারোশো কোটি টাকায়। এবং গ্রামের ভিতরে যদি কংক্রিটের রাস্তা তৈরি হয় তাহলে প্রতি কিলোমিটার পিছু খরচ হবে 35 লক্ষ টাকা।

প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় 5 মিটার চওড়া রাস্তার জন্য খরচ হয় প্রতি কিলোমিটারে 80 লক্ষ টাকা। সবমিলিয়ে পথশ্রী অভিযান প্রকল্পে খরচ হতে চলেছে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, পথশ্রী অভিযান প্রকল্প রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপিত হলেও তার টাকা কিন্তু পুরোটাই আসছে কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে। গ্রামীণ উন্নয়ন পরিকাঠামো প্রকল্প, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা ছাড়াও একশো দিনের প্রকল্পকেও এই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে রাস্তা সারানোর কাজে কিন্তু যে টাকা মিলছে, তা দিয়ে 12 হাজার কিলোমিটার রাস্তা কিভাবে সারানো হবে সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানায়নি পঞ্চায়েত দপ্তর।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে অর্থ দপ্তর জানিয়েছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের 34 কোটি টাকা প্রতিটি জেলা পরিষদকে বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়াও 2020-21 অর্থবর্ষে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় 333 টি ব্লকে 230 কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে খবর। এছাড়াও গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পেও কিছু টাকা দেওয়া হবে। বাকি টাকা ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে অর্থ দপ্তরের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকেই আসলে রাস্তা খরচ সারানোর খরচ বার করা হচ্ছে। পথশ্রী অভিযান প্রকল্পের জন্য এখনো পর্যন্ত কোন ‘হেড অফ অ্যাকাউন্ট’ তৈরি হয়নি বলে খবর।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্প কর্তাদের বক্তব্য, সরকার ঘোষিত 12 হাজার কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে 700-800 কিলোমিটার রাস্তা কিন্তু প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মধ্যেই পড়ছে। বাকি রাস্তা গ্রামের সাধারণ রাস্তা। সেই রাস্তাগুলি সারানোর জন্য ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী দপ্তর থেকে পঞ্চায়েত দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ তীব্র কটাক্ষ করে জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার কেন্দ্রের টাকায় রাস্তা সারিয়ে নিজেদের নাম কিনছে। 12 হাজার কিলোমিটার রাস্তা সারানো বা তৈরীর জন্য কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে রাজ্যে টাকা দেওয়া হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।

অন্যদিকে তারই পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় পাল্টা কটাক্ষ করে জানিয়েছেন, 12 হাজার কিলোমিটার রাস্তা কিভাবে সারানো হবে, সে ব্যাপারে বিজেপিকে মাথা না ঘামালেও চলবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পথশ্রী অভিযান প্রকল্প রাজ্য সরকারের কাছে যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য। তবে সে ক্ষেত্রে এই প্রকল্পের টাকা খুব স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্র-রাজ্য বিভিন্ন প্রকল্প থেকে উঠে আসছে বলে জানা যাচ্ছে। আর তাতেই পাল্টা গেরুয়া শিবির রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ করতে শুরু করেছে। গালভরা নাম দিয়ে প্রকল্প চালু হলেও যখন কেন্দ্রের টাকা দিয়েই সেই প্রকল্পের সূত্রপাত হবে, তখন খুব স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্য সরকারের দিকে প্রশ্ন উঠছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!