এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বর্ধমান > মুখ্যমন্ত্রীর টুইটের পাল্টা কটাক্ষ টুইট কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সপ্রিয়র,

মুখ্যমন্ত্রীর টুইটের পাল্টা কটাক্ষ টুইট কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সপ্রিয়র,


রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মুহূর্তে ভুবনেশ্বরে উপস্থিত রয়েছেন। সেখানে জাতীয় নিরাপত্তা এবং সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে একটি বৈঠকে যোগদান করতে তিনি গেছেন। তবে বৈঠকে যোগদান করার আগে তিনি পুরীর মন্দিরে আজকে পুজো দেন। পূজা দেওয়ার পরেই মুখ্যমন্ত্রী একটি টুইট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং তাতেই ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এদিন বাবুল সুপ্রিয় অভিযোগ জানান, তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের হাতে প্রায় প্রতিদিনই বিজেপি শিবিরের কেউ না কেউ মার খাচ্ছে। ঘটনার প্রমাণ দিতে তিনি আসানসোলের এক প্রবীণ বিজেপি কর্মীর তৃণমূলের হাতে মার খাওয়ার দাবি করেন।

ভুবনেশ্বরে গিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরীর মন্দিরে পুজো দিতে যান। পুজো দিয়ে বেরিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌আমার দেশ ভাল থাকুক। মানুষে মানুষে বিভেদ, ভেদাভেদ নয়। সবাই শান্তিতে থাকুন। আমরা খুন চাই না। আমরা শান্তি চাই।’‌ দিল্লী সংঘর্ষের ঘটনার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘‌আমার হৃদয় আজ খুব কাঁদছিল। চারদিকে যা হচ্ছে আমি এসেছি শান্তির জন্য, আমার সব ভাইবোনেরা যেন ভাল থাকে। আমি তাঁদের হয়ে প্রার্থনা করার জন্য এসেছি। আমার দেশের জন্য শান্তি কামনা করে বাংলা, ওডিশা-সহ সকল পরিবারের জন্য আমি এখানে পুজো দিতে এসেছিলাম। জগন্নাথদেবের কাছে এই প্রার্থনাই করলাম।’‌

আর মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরেই রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। পাল্টা জবাবে বাবুল সুপ্রিয় এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর প্রতি তীব্র কটাক্ষ প্রকাশ করেন। সম্প্রতি রবিবার আসানসোলে একটি রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিজেপি শিবিরের দাবি, তাঁদের দলের এক বিজেপি কর্মীর ওপর আক্রমণ করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। জানা গেছে, রবিবারই আক্রান্ত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন বিজেপি যুব মোর্চার জেলা সভাপতি অরিজিৎ রায়। ঘটনায় অভিযোগ করা হয়েছে তৃণমূলের ব্লক সম্পাদক ভোলা সিংয়ের বিরুদ্ধে।

এই ঘটনার উল্লেখ করে এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, তৃণমূল সুপ্রিমো যেখানে মানুষের শান্তি কামনা করে পুজো দিচ্ছেন সেখানে তার দলের দুষ্কৃতিরাই আক্রমণ করছে নিরীহ মানুষদের। এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার বাবুল সুপ্রিয় টুইট করে লেখেন, ”দিদি পূজা দিয়ে উঠে যা লিখেছেন, তার ক্যাপশন দেওয়ার মতো আমার কিছু নেই।” আর এরপর তিনি আসানসোলের ঘটনাটির উল্লেখ করে বলেন, “কাল যাবো এই প্রবীণ বিজেপি সমর্থকের বাড়িতে-বলবো যে ওঁর মতো আরও যে শত শত বিজেপি কর্মী দিনের পর দিন অত্যাচারিত ও খুন হয়েছে/হচ্ছে দিদির #TMchhi গুন্ডাদের হাতে, তার বিহীত দিদির পুলিশ না করলেও, মানুষ করবে”।

আসানসোলের ঘটনায় তৃণমূলের ব্লক সম্পাদক ভোলা সিং অবশ্য সম্পূর্ণ অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন। তাঁর দাবি, তৃণমূল এধরনের ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নয়। তবে প্রবীণ ওই বিজেপি কর্মী ইতিমধ্যে পুলিশে এফআইআর দাখিল করেছেন। ঘটনার তদন্তে নেমেছে স্থানীয় পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। অন্যদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে বিজেপি শিবির ও তৃণমূল শিবিরের মধ্যে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ এর পালা চলছে। রাজনৈতিক মহলের অভিযোগ, গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই এই দুই রাজনৈতিক দল ক্রমাগত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে থাকে যা বাড়তে বাড়তে ইতিমধ্যে প্রাণহানিকর হয়ে উঠেছে।

সমস্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, রাজনৈতিক সংঘর্ষ সব সময়ই সমাজের পক্ষে ক্ষতিকারক। রাজনৈতিক দলের অনেক ঊর্ধ্বে যে মানুষ, তা আজকাল সমস্ত রাজনৈতিক দল প্রায় ভুলতে বসেছে। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলিকে নজর দিতে হবে। তবে এই মুহূর্তে আসানসোলে বিজেপি কর্মীর আহত হওয়ার ঘটনায় এলাকায় রীতিমতো উত্তপ্ত পরিস্থিতি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সদাসর্বদা সতর্ক রয়েছে এলাকার পুলিশ প্রশাসন। তবে এখন দেখার সন্দেহজনক তালিকায় থাকা তৃণমূল কর্মী দোষী সাব্যস্ত হন কিনা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!