এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরতে গিয়েই বড়সড় বিপাকে বিমল গুরুং, জানুন বিস্তারিত

মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরতে গিয়েই বড়সড় বিপাকে বিমল গুরুং, জানুন বিস্তারিত


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ফেরার ছিলেন বিমল গুরুং, রোশন গিরি প্রমুখরা। গত পঞ্চমীর দিন হঠাৎ কলকাতার রাজপথে উদয় হলেন তাঁরা। সেদিন প্রকাশ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন বিমল গুরুং। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। বিমল গুরুং জানান, বিজেপি তার কথা রাখেনি, তাই বিজেপির সঙ্গ ছাড়ছেন তিনি। এরপরই, বিমল গুরুং ফিরে আসেন পাহাড়ে। আবার প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠার তীব্র চেষ্টা চালাচ্ছেন পাহাড়ের রাজনীতিতে। কিন্তু, এবার, মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ নেয়ার কারণেই বড়সড় মাসুল দিতে হল বিমল গুরুংকে। ভাঙ্গন দেখা দিল বিমল গুরুংএর মোর্চা শিবিরে। মোর্চা ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন বহু মোর্চা নেতা, আগামীতে আরও মোর্চা নেতা বিজেপিতে যোগ দেবার জন্য তৈরি।

গতকাল শিলিগুড়িতে বড়সড় ভাঙ্গন দেখা দিল গুরুং পন্থী মোর্চা শিবিরে। একাধারে ২৫ জন নেতা গতকাল মোর্চা ছেড়ে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। বিজেপিতে যোগদানকারী নেতারা জানিয়েছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গাঁটছড়া হবার কারণেই মোর্চা ত্যাগ করলেন তাঁরা। তাঁরা আরও জানিয়েছেন যে, আরো বহু গুরুং পন্থী নেতা গুরুং সঙ্গ ত্যাগ করে বিজেপিতে আসতে চলেছেন। কিন্তু বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে একেবারেই নারাজ গুরুং পন্থী মোর্চা শিবির ও শাসকদল তৃণমূল।

বিমল গুরুংকে কাজে লাগিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যখন পাহাড়ের ঘাসফুলের প্রশস্ত জমি তৈরি করার কাজে ব্যস্ত, ঠিক তখনই বড়সড় ভাঙ্গন গুরুং পন্থী মোর্চা শিবিরে। সম্প্রতি, গুরুংএর বিরুদ্ধে যথেষ্ট ক্ষুব্দ হয়ে উঠেছেন তাঁর রাজনৈতিক পরামর্শদাতা স্বরাজ থাপা, দলের মুখপাত্র বিপি বাজগাই, গুরুং ঘনিষ্ঠ মোর্চা নেতা শঙ্কর অধিকারী প্রমুখরা। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জোট হওয়ার কারণেই বিমল গুরুং এর উপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন তাঁরা। বিমল গুরুংয়ের সঙ্গ ছেড়ে আগামী দিনে বিজেপিতে যোগদানের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তাঁরা। সবকিছুই নিয়ে তীব্র অস্বস্তিতে গুরুং পন্থী মোর্চা শিবির।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বিমল গুরুং এর রাজনৈতিক পরামর্শদাতা স্বরাজ থাপা জানিয়েছেন যে, গোর্খাল্যান্ডের স্বপ্ন নিয়ে বিমল গুরুংকে তিনি নেতা বলে মেনে নিয়েছিলেন। রাজ্য সরকারের পুলিশ পাহাড়ে জুলুমবাজি করেছে, পাহাড়ে হিংসা ছড়িয়েছে, এখনো মোর্চা কর্মীরা জেলে বন্দী আছেন। সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন বিমল গুরুং। এ কারণে বিজেপির নেতৃত্বে আগামী দিনে লড়াই চালিয়ে যাবার কথা জানালেন তিনি।

অন্যদিকে গতকাল বিমল গুরুং পন্থী মোর্চা শিবিরে ভাঙ্গন প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু জানালেন যে, এটা শুধুমাত্র ট্রেলার। কয়েকদিন পর পাহাড়ে আরো বড় যোগদান শিবির হতে চলেছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিমল গুরুং পাহাড়কে বিক্রি করে দিয়েছেন।

তবে, এ প্রসঙ্গে বিমল গুরুং ঘনিষ্ঠ রোশন গিরির বক্তব্য, এই নেতাদের সঙ্গে বহুদিন ধরেই দলের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। তাই, এরা যদি বিজেপিতে চলে যান, তাতে কোন ক্ষতি হবে না দলের। অন্যদিকে বিষয়টিকে তৃণমূল তেমন কোন গুরুত্ব দেয়নি। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব জানালেন যে, যারা বিজেপিতে চলে গেছেন, তাঁরা আগেই মোর্চা ছেড়ে দিয়েছিলেন, তাই এতে কোন প্রভাব পড়বে না।

তবে, ভাঙ্গনের বিষয়টিকে যতই খাটো করে দেখার চেষ্টা করা হোক না কেন? এরফলে যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে গুরুং পন্থী মোর্চা শিবির। এটা মেনে নিয়েছেন একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের বহু আসনে ভোট রয়েছে নেপালি ভোট, আবার আলিপুর লোকসভা কেন্দ্রেরও কিছু আসনে নেপালি ভোটের প্রভাব রয়েছে। অর্থাৎ, পাহাড় ও সমতলের বেশ কিছু বিধানসভা কেন্দ্রে বিমল গুরুংয়ের একটা বড়সড় প্রভাব পড়ার সম্ভাবনার কথা বলছেন বহু রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এই আবহে বিমল গুরুংকে কাছে টেনে বাজিমাত করার চেষ্টা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলে ভাঙ্গন দেখা দেয়ায়, মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রতিষ্ঠা কতটা সফল হবে? তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!