এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মুকুলের পথেই কি হাটতে চলেছেন তৃণমূলের বিধায়করা! প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরেই

মুকুলের পথেই কি হাটতে চলেছেন তৃণমূলের বিধায়করা! প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরেই


প্রায় চার বছর আগে তৃণমূলের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংসর্গ ত্যাগ করে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মুকুল রায়। যা দেখে অনেকেই মনে করেছিল, এবার তৃণমূলের বড়সড় নক্ষত্র পতন ঘটল। এমনকি অনেকের সেই কথা কিছুটা হলেও সত্যি হয়েছিল। মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদান করার পর থেকেই, তার হাত ধরে অনেকেই ভারতীয় জনতা পার্টিতে নাম লেখাতে শুরু করেন। যা নিঃসন্দেহে ঘাসফুল শিবিরের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আর মুকুল রায়ের মত সূক্ষ্ম মস্তিষ্কের অধিকারী গত লোকসভা নির্বাচনের নিজের মস্তিষ্ক খাটিয়ে বিজেপির দখলে 18 টি আসন আনতে সক্ষম হন। এদিকে বাংলা থেকে বিজেপি এত আসন পাওয়ার পর, দলের সুদিন ফেরাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রননীতিকার হিসেবে নিয়োগ করেন ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরকে। আর প্রশান্ত কিশোর দলের রননীতিকার হওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের ছোট, বড়, মেজো সমস্ত নেতাদের সমঝে চলার বার্তা দিয়েছেন। নেতারা যাতে বিলাসবহুল জীবনযাপন না করেন, মানুষের সাথে দুর্ব্যবহার না করেন, তার জন্য প্রশান্তবাবুর পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে কড়া বার্তা। যা নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়েও করতে বাধ্য হচ্ছেন তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রী বিধায়করা।

জানা গেছে, সম্প্রতি তপনের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদার প্রাসাদোতম বাড়ি দেখে প্রশ্ন তুলেছেন প্রশান্ত কিশোর। কি করে হল ওই বাড়ি! কোথা থেকে এত টাকা হল! তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে তৃণমূলের একাংশ। আর দলের বিধায়করা নিজেদের বিলাসবহুল জীবন যাপনের অধিকারে রননীতিকারের কাছ থেকে বাধা পাওয়ায়, অনেকেই মনে করতে শুরু করেছেন অনেক কথা। একাংশের মতে, প্রশান্ত কিশোরের কড়া নির্দেশের ফলে এবং বাধ্যবাধকতার জন্য তৃণমূলের অনেক বিধায়ক অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তাই অনেকেই চাইছেন, দলবদল করতে। তবে তাদের একটাই ভয়, তারা মুকুল রায়ের মতো শক্তিশালী নয়। সেদিক থেকে তাদের বেশি অর্থবল নেই। তাই যদি তারা দল ছাড়ার পর তাদেরকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয় বা অন্য কোনোভাবে ফাসিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তাদের বাঁচার মত জায়গা থাকবে না। তাই অনেকেই ইচ্ছে থাকলেও দলবদল করতে পারছেন না। তবে তাদের জীবনযাপন নিয়ে যেভাবে প্রশান্ত কিশোর অভিযোগের আঙুল তুলতে শুরু করেছেন, তাতে রীতিমত ক্ষুব্ধ দলের অনেক বিধায়ক।

একাংশের মতে, বাচ্চু হাসদার প্রাসাদোতম বাড়ি দেখে প্রশান্ত কিশোর প্রশ্ন তুললেন। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত বিলাসবহুল বাড়ি নিয়ে কেন তিনি প্রশ্ন তুললেন না! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাচ্চু হাসদাকে সতর্ক করে দিয়ে পরোক্ষে অভিষেকবাবুকেও সতর্ক করে দিলেন তৃণমূলের রননীতিকার‌। আর এসব দেখে এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উভয় সংকটে পড়েছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অনেকে বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সৎ। কিন্তু দলের অনেক কর্মীরা অসৎ হওয়ার কারণেই তাঁর ভাবমূর্তি দিনকে দিন ক্ষুন্ন হচ্ছে।

এমনকি সেদিক থেকে তার ভাইপোর বিলাসবহুল বাড়ি নিয়ে যদি প্রশান্ত কিশোর প্রশ্ন তোলেন, তাহলে তৃণমূল নেত্রী কি করবেন! যদি বিধায়করা এরপর প্রশান্ত কিশোরের এই সতর্কবার্তা নিয়ে আপত্তি জানান এবং দল ছেড়ে দেন, তাহলে তো চরম সমস্যার মুখে পড়বেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! সেক্ষেত্রে দলের বিধায়কদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে ধরে রাখবেন, নাকি দলের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে যে যেখানে যাচ্ছে, সেদিকে ডোন্ট কেয়ার না করে দলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখবেন! এখন এটাই লাখ টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে। গোটা পরিস্থিতি এখন কোন দিকে যায়, দলের শৃঙ্খলারক্ষা, নাকি দল ধরে রাখতে চুপচাপ দুর্নীতিকে সহ্য করে যাওয়া, কোনটা করবেন তৃণমূল নেত্রী! সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!