তৃণমূলে না থেকেও মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ফের একসাথে মুকুল রায়; জল্পনা তুঙ্গে রাজ্য January 20, 2018 তৃণমূল ছেড়েছেন অনেকদিন হলো। আর তার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর অভিষেক বান্ধোপাধ্যায়কে ক্রমাগত আক্রমণ করে চলেছেন।তৃণমূলে না থেকেও মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ফের একসাথে মুকুল রায়।না সশরীরে নয় ছবি আর নামে। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। যে মুকুল রায়কে মীরজাফর বলে প্রচার করছেন তৃণমূল এবার সেই মির্জাফরকেই নিজেদের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বলে আমন্ত্রণ পত্র ছাপালো তৃণমূল। এদিন দলনেত্রীর ছবির সঙ্গে প্রধান অতিথি হিসেবে মুকুল রায়ের নাম দেখা গেছে আসানসোলের জামুড়িয়ার তৃণমূলেরই একটি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পত্রে।বিষয়টি হলো তৃণমূলের আমন্ত্রনপত্রে দলনেত্রীর ছবি ছাপিয়ে তাতে লেখা হয়েছে- ‘‘আগামী ২১ জানুয়ারী ২০১৮ পড়াশিয়া সাউথ কলোনিতে একটি কম্বল বিতরণ সভা অনুষ্ঠিত হইবে৷ উক্ত সভায় আপনি উপস্থিত হইয়া সভাটি সফল করতে সহযোগিতা করবেন৷’’ এরপরই কার্ডের মাঝখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বড়বড় করে মুকুল রায়ের নাম লেখা আছে। ফলে অনেক প্রশ্ন উঠছে সেগুলি হলো তবে কি মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিলেও ভেতরে ভেতরে তৃনমূল করছেন ?নাকি বিজেপির কাছেও মুকুল রায়কে মীরজাফর বানাতে তৃণমূল এই কৌশল নিয়েছে ? নাকি তাদের প্রিয় “দাদা” কে ভুলতে পারছেন না সমর্থকরা? পাশাপাশি আরো প্রশ্ন উঠেছে যে তৃণমূলীরা কি বাইরে তৃণমূল হলেও ভেতরে ভেতরে মুকুল পন্থী হয়ে গেছেন আর তাই ভুল করে হলেও এই কাজ করেছেন?নাকি শুধু এতদিনের অভ্যাসবশতই এই কাজ?যদিও বিজেপির অনেক নেতা নেত্রী মনে করছেন মুকুল যে বিজেপিতে যোগ দেবার পর থেকেই রাজ্যে একটা বিজেপির হাওয়া শুরু হয়েছে ফলে তৃণমূল বা অভিন্ন দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেবার হিড়িক পরে গেছে আর তাতেই তৃণমূল ভয় পেয়েছে আর তাই মুকুল রায়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই ভুল নিমন্ত্রণপত্র ছাপিয়েছে তৃণমূল। আসানসোলের জেলা সহসভাপতি প্রমোদ পাঠক সরাসরি বলেন যে,২১জানুয়ারি রানিগঞ্জে আমাদের দলের প্রকাশ্য জনসভা রয়েছে৷ প্রধান বক্তা মুকুল রায়৷ তাই মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্যই তৃণমূল পরিকল্পিতভাবে এমন চিঠি ছাপিয়েছে। এর ফলে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে হয়তো ভাববেন মুকুলদা ফের তৃণমূলে ফিরেছে।আসলে তৃণমূল ভয় পাচ্ছে৷ তাই দলের ভাঙন রুখতে ইচ্ছাকৃতভাবে দলের কার্ডে ওরা মুকুল রায়ের নাম ছেপেছে৷ মহিলা সংগঠনের ব্লক সভাপতি পলি বাগচি বলেন, “শুক্রবার আমাদের মহিলা সংগঠনের কর্মী সম্মেলন হয়েছে। সেখানে সুমিত্রা আমাকে আমন্ত্রণপত্রটি দেয়। তাতে দেখি মুকুল রায়ের নাম ও আমার নামের পরে পদবি বাগচির জায়গায় বাগদি ছাপা হয়েছে। সুমিত্রাকে এই কার্ড বিলি করতে বারণ করেছিলাম।”তৃণমূলের মহিলা সম্পাদিকা সুমিত্রা নুনিয়া বলেন, ”আমি বুঝতে পারিনি। ভুল হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু কার্ড বিলি করা হয়ে গিয়েছে। সকলকে ফোন করে বিষয়টি জানাব।”জামুড়িয়া ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার জন্য সাউথ কলোনির মহিলা তৃণমূল সম্পাদক সুমিত্রা নুনিয়া আমন্ত্রণ জানাতে এসেছিলেন। তাঁকে আমি ২৫ জানুয়ারি আমাদের দলের পঞ্চায়েতরাজ সম্মেলনের পরে যে কোনও ধরণের অনুষ্ঠান করার জন্য জানিয়েছিলাম। তারপর কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখে জেলা নেতৃত্বকে জানাব।কিন্তু যায় হোক এই বিষয়টিকে এত ছোট করে দেখতে নারাজ রাজনৈতিকমহল থেকে বিজেপি।বিজেপি এই অপপ্রচারকেই হাতিয়ার করে তৃণমূল বধে নামতে চলেছে বলে জানা গেছে।রাজনৈতিকমহলে অবশ্য তৃণমূলের সংঘঠন নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন মুকুল রায় এই নামটি এখন তৃণমূলের কাছে অতীত। যে মানুষটি ক্রমাগত অন্য দলে গিয়ে তৃণমূলকে বিধছেন। নেত্রীকে আক্রমণ করছেন তার নাম আমন্ত্রণ পত্রে ভুলবশত মুকুল রায়ের নাম লেখাও হয়ে থাকে তবুও এতগুলো লোকের চোখ এড়ালো কি করে ? তবে কি মুকুল প্রেম থেকেই এমন কাজ ?নাকি নেত্রীকে এই বার্তাই দিচ্ছেন তৃণমূল কর্মীসমর্থকরা যে মুকুলকে ছেড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি।তারা মুকুলের সাথেই আছেন ? আপনার মতামত জানান -