এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > রথের চাকাতেই জমি আন্দোলনের পীঠস্থান নন্দীগ্রামে গেরুয়া ঝড় তোলার প্রচেষ্টা, আমল দিতে রাজি নয় শাসকদল

রথের চাকাতেই জমি আন্দোলনের পীঠস্থান নন্দীগ্রামে গেরুয়া ঝড় তোলার প্রচেষ্টা, আমল দিতে রাজি নয় শাসকদল

আদালতের রায়ের চাপিয়ে এখন রাজ্যে বিজেপির রথযাত্রার সম্ভাবনা প্রায় বিশ বাঁও জলে। কিন্তু এবারে যে বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সারা রাজ্যের মধ্যে মেদিনীপুর জেলাটাকে কিছুটা হলেও টার্গেট করেছে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে সেইখানেও কি হবে না এই রথযাত্রা?

সূত্রের খবর, একদা জমি রক্ষা আন্দোলনের অন্যতম গড় বলে পরিচিত এই নন্দীগ্রামের মাটি থেকেই “গণতন্ত্র বাচাও” নামক কর্মসূচির মাধ্যমে নিজেদের রথযাত্রা কর্মসূচি নিতে চাইছে বিজেপি। তবে শুধু নন্দীগ্রামই নয়, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট ছয় দিন ধরে নিজেদের রথযাত্রা কর্মসূচি ও এক বড় জনসভার পরিকল্পনা নিচ্ছে গেরুয়া শিবির।

যদিওবা এই বিজেপির এই রথযাত্রার আদৌ তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতে কোনো রকম প্রভাব ফেলবে না বলে আশাবাদী এখানকার শাসকদলের নেতারা। তবে ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন বিজেপি নেতারাও। বিজেপি সূত্রের খবর, আইনের জটিলতা কেটে গেলে তারাপীঠ থেকে চালু এই রথ অন্যান্য জেলা ঘুরে দিঘাতে পৌঁছোবে। আর প্রথম দিন সেইখানে পৌঁছনোর পর এই কাঁথির নেতৃত্বকে নিয়ে একটি বড় জনসভা করা হবে।

পরবর্তীতে হেঁড়িয়া, খেজুরি, নন্দীগ্রাম হয়ে চন্ডিপুর, নন্দকুমার থেকে তা হলদিয়ায় পৌঁছোবে। আর এরপর সেই রথ হলদিয়ায় এক রাত কাটিয়ে সুতাহাটা, মহিষাদল, নন্দকুমার হয়ে নিমতৌড়িতে গিয়ে সেখানেও একরাত কাটিয়ে রাধামনি, তমলুক শহর, কাকটিয়া বাজার হয়ে মেচেদায় একটি বড় জনসভা মধ্যে দিয়ে তা কোলাঘাটে গিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে।

রাজনৈতিক মহলের মতে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে এই মেদিনীপুর জেলায় বিজেপির মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। কেননা গত 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর এই রাজ্যের সাথে সাথে এই পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতে কার্যত ভেঙে পড়ে বাম কংগ্রেস জোট। যার ফলে এই জেলায় সেই বাম কংগ্রেসকে বিরোধী আসন থেকে সরিয়ে সেখানে এগিয়ে আসে বিজেপি।

অন্যদিকে 2017 সালের এপ্রিল মাসে দক্ষিণ কাঁথির বিধানসভার উপনির্বাচনেও এখানে দ্বিতীয় স্থান দখল করে বিজেপি। পাশাপাশি তমলুক লোকসভা উপনির্বাচন এবং সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত নির্বাচনেও এখানে বামেদের পিছনে ফেলে শাসকদল তৃনমূলের বিরুদ্ধে প্রবল লড়াই দিতে সক্ষম হয় গেরুয়া শিবির।

তবে শাসকদলের অবশ্য দাবি, এইসব করে প্রথম স্থান থেকে তাদের কেউ সরাতে পারবে না। তাদের যুক্তি, সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই জেলার 223 টি পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূল এককভাবে 220 পঞ্চায়েত, জেলাপরিষদের সবকটি আসন এবং 25 টি পঞ্চায়েত সমিতি দখল করেছে। তবে এই রথযাত্রার মধ্যে দিয়ে তারা যে এই জেলায় শাসক দলকে প্রবল চাপে রাখতে তৈরি এদিন তার নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেনবিজেপির তমলুক জেলা সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জন অধিকারী।

তিনি বলেন, “2009 সাল থেকে এখানে তৃণমূলের রাজত্ব শুরু হয়েছে। মানুষকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। তাই পঞ্চায়েত স্তরের এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সঠিক রুপায়নের দাবিতে আমাদের গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা জেলার সমস্ত প্রান্তে পৌঁছবে।” অন্যদিকে বিজেপির এই রথযাত্রাকে রাবণ যাত্রা বলে কটাক্ষ করে নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের অন্যতম নেতা তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহকারি সভাপতি শেখ সুফিয়ান বলেন, “নন্দীগ্রামের মাটি দিয়ে রথ গেলেও মানুষ তার দিকে ফিরে তাকাবে না।”

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

সত্যিই কি বিজেপির এই রথ তাদের চাপে রাখবে? এদিন এই প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ শিশির অধিকারী বলেন, “রাজনীতির রথ এনে পূর্ব মেদিনীপুরে কোন উত্তেজনা তৈরি করা যাবে না। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা ও সাম্প্রদায়িক দলকে মানুষ চায় না। আর তাই এই জেলার মাটিতে রথ গড়লেও তাতে মানুষ থাকবে না।” সব মিলিয়ে এখন খোদ শাসক গড় পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপির রথযাত্রার নিয়ে তুমুল সরগরম রাজ্য রাজনীতি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!