নারদ মামলায় যুক্ত হলেন মমতা, বড়সড় পদক্ষেপ সিবিআইয়ের! কলকাতা রাজনীতি রাজ্য May 19, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – নারদ মামলায় অভিযুক্ত রাজ্যের শাসক দলের নেতা, মন্ত্রীরা জেল হেফাজতে থাকবেন, নাকি তাদের জামিন হবে, তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে শুরু হয়েছে শুনানি। যার দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা রাজ্য। ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ভবিষ্যৎ কি, তা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে সিবিআইয়ের একটি পদক্ষেপ কার্যত ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। যেখানে শুনানি পর্বের আগে নারদ মামলায় যুক্ত করা হল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। স্বাভাবিক ভাবেই সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মলয় ঘটক এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। যার জেরে নয়া সমীকরণ তৈরি হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু হঠাৎ করে কেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্যের আইন মন্ত্রী এবং তৃণমূল সাংসদকে এই মামলায় যুক্ত করা হল? কেন সিবিআই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করল? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সোমবার রাজ্যের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক এবং এক প্রাক্তন মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে। আর তারপর থেকেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সিবিআই বিজেপির হয়ে কাজ করছে। তাই প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ করা হল। তবে শুধু এই প্রশ্ন তুলেই ক্ষান্ত থাকেননি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায় আটক হতে না হতেই তড়িঘড়ি সিবিআইয়ের দপ্তর নিজাম প্যালেসে উপস্থিত হতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যেখানে সরাসরি সিবিআই আধিকারিকদের কাছে গিয়ে তিনি দাবি করেন, তাকেও গ্রেপ্তার করতে হবে। দীর্ঘক্ষন সিবিআই দপ্তরে বসে থাকেন তিনি। কথা বলেন নানা আধিকারিকদের সঙ্গে। এমনকি তাদের এখানে এসি নেয় বলে চাইলে তিনি এসি লাগিয়ে দিতে পারেন বলেও এমন কথা বলতে দেখা যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। আর মমতা বন্দোপাধ্যায়ের এভাবে একটানা বসে থাকা এবং সেখানকার আধিকারিকদের সঙ্গে নানা কথা-বার্তা বলাকে খুব একটা ভালো চোখে নেয়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর ফলে যে তদন্ত প্রক্রিয়ায় প্রভাব সৃষ্টি করতে পারেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, সেই বিষয়টি তুলে ধরে ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সিবিআই আধিকারিকরা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অন্যদিকে সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে যখন শুনানি পর্ব শুরু হয়েছিল, তখন সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যের হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রীদের। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রাজ্যের আইন মন্ত্রী মলয় ঘটকের উপস্থিতি সেখানে নজর কেড়েছিল। আর একের পর এক প্রভাবশালী যখন উপস্থিত হতে শুরু করেছেন, তখন এই মামলায় যে নিঃসন্দেহে প্রভাব বিস্তার করতে তারা সক্ষম হবেন, তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এমনকি সিবিআই দপ্তরের ভেতরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন, তখন বাইরে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে ইট, পাথর ছোড়া ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করে। তাই এই অবস্থায় রাজ্যের এই মামলা চালানো হলে তা আয়ত্তের বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে বলে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল। সেই মত করে যাতে অন্য রাজ্যে সেই মামলা নিয়ে যাওয়া হয়, তার জন্য ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে সঠিক প্রমাণের জন্য অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ মলয় ঘটক এবং কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন এবং তারা যে উপস্থিত ছিলেন, তা তুলে ধরতেই এবার তাদেরকে এই মামলায় যুক্ত করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।একাংশ বলছেন, এর আগে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে প্রয়াত তাপস পালের ক্ষেত্রে অন্য রাজ্যে মামলা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আর তখন প্রভাব বিস্তার করার এই একই অভিযোগ তুলতে দেখা গিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। আর এবার সেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে নতুন করে অভিযোগ তুলে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীরা গ্রেফতার হতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহ একাধিক হেভিওয়েটদের উপস্থিতি রীতিমত প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। আর সেই বিষয়টিকে হাতিয়ার করেই কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি চলার আগের মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে মামলায় যুক্ত করে রীতিমত রাজ্যের শাসক দলকে চাপে রাখার রাস্তায় হাঁটল সিবিআই আধিকারিকরা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর ফলে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে প্রভাব বিস্তার করার যে অভিযোগ হাইকোর্টে তোলা হবে, তা অনেকটাই সহজে গ্রাহ্য হবে বলে আশা করছেন একাংশ। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -