এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > নারদ মামলাতেও বাঙালি-অবাঙালি তরজা, উত্তপ্ত আদালতে প্রাসঙ্গিক বাংলার ভোটের ইস্যু!

নারদ মামলাতেও বাঙালি-অবাঙালি তরজা, উত্তপ্ত আদালতে প্রাসঙ্গিক বাংলার ভোটের ইস্যু!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  এবার নারদ মামলার শুনানি পর্বেও পশ্চিমবঙ্গে ভোটের মধ্যে যে ইস্যু সবথেকে বেশি মাথাচাড়া দিয়েছিল, সেই বাঙালি-অবাঙালি তরজা সামনে চলে এল। দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে সওয়াল পর্বে কেউ নিজেকে বাংলাপ্রেমী, আবার অন্যকে বাংলা বিরোধী বলে আক্রমণ করেন। যার জেরে নারদ মামলা নিয়ে হওয়া হাইকোর্টের শুনানিতে বাঙালি এবং ও বাঙালির মধ্যে প্রভেদের জেরে কার্যত উত্তপ্ত হয়ে উঠতে দেখা যায়।

প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে বারবার বহিরাগতদের দল বলে আক্রমণ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকি প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্যে আসলেও, তারা বাংলার সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছু জানে না বলে দাবি করতে দেখা গেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর ভোটের ফলাফলের পর তৃণমূল তৃতীয়বার রাজ্যের ক্ষমতা দখলের পরই নারদকান্ডে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল রাজ্যের দুই মন্ত্রী এবং এক তৃণমূল বিধায়ককে।

আর তারপরই বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণের অভিযোগ করে তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের রায়ের মধ্য দিয়ে জামিনে মুক্ত হয়েছেন অভিযুক্তরা। তবে ‌অন্য রাজ্যে এই নারদ মামলা সরিয়ে নেওয়া নিয়ে সিবিআইয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি চলছে হাইকোর্টে। আর সেই শুনানি পর্বেই বাঙালি বনাম বহিরাগত ইস্যু প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে দেখা গেল।

সূত্রের খবর, এদিন হাইকোর্টের শুনানি পর্ব চলার সময় হঠাৎ করেই তুষার মেহেতাকে “বাংলা বিরোধী” বলে আক্রমণ করেন তৃণমূলের আইনজীবী তথা সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মেহেতা তার বাঙালি বিরোধী মনোভাব দেখিয়েছেন। বিজেপি নেতারাও এটা করেন। 2012 সালে অমিত শাহকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তখন গুজরাটে কি হয়েছিল!” অর্থাৎ রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় নামা নিয়ে এই মামলায় প্রভাব সৃষ্টি হতে পারে বলে দাবি জানিয়ে অন্য রাজ্যে সেই মামলার সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষ নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই গুজরাটের কথা তুলে ধরে সিবিআইয়ের যুক্তি খন্ডন করার চেষ্টা করেছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে বাংলাবিরোধী বলে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেলকে আক্রমণ করার পরেই পাল্টা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নিয়েছেন তুষার মেহেতা। এদিন তিনি বলেন, “কল্যান আমাকে বাংলা বিরোধী বলছেন। এটা ইচ্ছাকৃত মন্তব্য। বাংলা সাংস্কৃতিক রাজধানী। আমি এবং অন্যরা বাংলা ও বাঙালির প্রশংসা করি। আমি শুধু তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সেদিনের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কথা বলছি। আমি আদালতের সম্মান নষ্ট করতে চাই না।”

এদিকে তুষার মেহেতা এই মন্তব্য করার সাথে সাথেই পাল্টা মন্তব্য করতে উদ্যত হন তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই সময় দুই পক্ষের বাঙালি-অবাঙালি ইস্যু নিয়ে যেভাবে চর্চা শুরু হয়েছে, তা থামাতে আসরে নামতে হয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে। এদিন এই প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল বলেন, “কোনো ব্যক্তিগত আক্রমণ করবেন না। এই প্লাটফর্মটিকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা উচিত না। এসব আলোচনা এখানে করবেন না। অন্য কোথাও করুন।”

আর এসব দেখেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে সব থেকে বেশি যে বিষয়টি উঠে এসেছে, তা হল বাঙালি-অবাঙালি ইস্যু। আর এবার হাইকোর্টে নারদ মামলার শুনানিতেও সেই ইস্যু প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আর শেষ পর্যন্ত যেভাবে দুই পক্ষ বাঙালি-অবাঙালি ইস্যু নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে তরজা এবং আক্রমণে জড়িয়ে পড়লেন, তাতে গোটা বিষয়টিকে থামাতে আসরে নামতে হল প্রধান বিচারপতিকে। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক ইস্যু এবার যে নারদকান্ডের শুনানি পর্বেও যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল, তা বলাই যায়।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!