এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > নেতা হওয়ার মরিয়া চেষ্টা, নাটক জিইয়ে রাখতে রাস্তাতেই রাত্রিবাস ভাইপোর! খোঁচা দিচ্ছে বিজেপি!

নেতা হওয়ার মরিয়া চেষ্টা, নাটক জিইয়ে রাখতে রাস্তাতেই রাত্রিবাস ভাইপোর! খোঁচা দিচ্ছে বিজেপি!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- যতই তিনি চেষ্টা করুন, তাকে নেতা হিসেবে মানতে পারছেন না বিরোধীরা। এমনকি নিজের দলের ভেতরেও যুবরাজ বুঝতে পারছেন যে, তাকে নিয়ে একটা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কেউ হয়তো ভয়ে প্রকাশ্যে সে কথা বলছেন না। সবাই হয়তো ক্রীতদাস হয়ে কাজ করছেন। কিন্তু যখন সুযোগ পাবেন তৃণমূল নেতারা, তখন ঠিক জবাবটা দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। তেমনটাই বলছেন বিরোধীরা। তবে জনতার সামনে তো হিরো সাজতে হবে, যে করেই হোক নাটকটা জিইয়ে রাখতে হবে, তাই পিসি যে কায়দায় আন্দোলন করে উঠে এসেছেন, সেই একই কায়দা প্রয়োগ করার চেষ্টা করলেন ভাইপো। তার নেতৃত্বে রাজভবন চলো অভিযান হয়েছে।

তবে রাজ্যপাল উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি দেখতে শিলিগুড়িতে ছিলেন। তাই তিনি দেখা করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ঝোপ বুঝে কোপ মারার চেষ্টা করলেন বাংলার যুবরাজের। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চ থেকে এই ঘোষণা করলেন যে, তিনি যতক্ষণ না রাজ্যপাল তাদের সঙ্গে দেখা করছেন, ততক্ষণ এই মঞ্চেই থাকবেন। অর্থাৎ এক কথায় রাত্রিবাস করবেন রাজপথেই। আর যুবরাজের মুখ থেকে এই কথা শুনে তৃণমূলের যারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন, তারা তো হাততালিতে এলাকা কাঁপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ কি এসব নিয়ে চিন্তিত নাকি? তারা তৃণমূলের যুবরাজের গোপন কথাটি বুঝতে পেরেছেন? তা নিয়ে নানা মহলে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে যে প্রচুর মানুষের অভাব অভিযোগ আছে, তা নিয়েই রাজভবন চলো অভিযানের ডাক দিল্লির মাটি থেকে দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো গতকাল তাদের সেই অভিযান হয়েছে। কিন্তু রাজ্যপালের কাছে রাজ্যের মানুষের বিপদ আগে। সেই কারণেই তিনি চলে গিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গে বন্যা বিপর্যয় দেখতে। আর সেটাও সহ্য হয়নি তৃণমূল নেতাদের। তাদের বক্তব্য, রাজ্যপাল নাকি তাদের ভয়ে উত্তরবঙ্গ চলে গিয়েছেন। যাই হোক, এসব পরের কথা। কিন্তু সেই মঞ্চ থেকেই বাংলার যুবরাজ ঘোষণা করে বুঝিয়ে দিলেন যে, তিনি আন্দোলনের লগ্নে জন্মগ্রহণ করেছেন। রাজ্যপাল তাদের সঙ্গে দেখা করছেন না। তাই যতক্ষণ না দেখা করবেন, ততক্ষণ তিনি মঞ্চেই বসে থাকবেন। অর্থাৎ এক কথায় তার পিসি যে কায়দায় ধর্না দিয়ে বারবার শিরোনামে উঠে এসেছেন, সেই একই কায়দা প্রয়োগ করার চেষ্টা শুরু করে দিলেন ভাইপো। বিরোধীদের তরফে অবশ্য তেমনটাই বলা হচ্ছে। এক কথায় তারা বলছেন যে, এটা নাটক ছাড়া আর কিছু নয়।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে বিজেপি কিন্তু খোঁচা দিতে শুরু করেছে তৃণমূলকে। তাদের দাবি, রাস্তা আটকে আন্দোলন করা তৃণমূলের ক্ষেত্রে তো নতুন কিছু নয়। তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেউ নেতা হিসেবে মানতে পারছেন না। তার পিসি আন্দোলন করে উঠে এসেছেন, এ কথা ঠিক। সেই আন্দোলনকে কুর্নিশ জানায় সকলেই। কিন্তু বাংলার যুবরাজের রাজনীতিতে কোনো ক্রেডিট নেই। তৃনমূল ক্ষমতায় আসার পর তিনি রাজনীতি শুরু করেছেন। তাই তাকে আন্দোলন করে উঠে না আসলে অনেক নেতাই মেনে নিতে পারছেন না। সেদিক থেকে একটা লড়াই, আন্দোলন করার সুযোগ খুঁজছিলেন বাংলার যুবরাজ। ফলে রাজ্যপালকে না পেয়ে তিনি সেখানেই রাত্রিবাস করবেন বলে নিজের লড়াকু ভাবমূর্তি সামনে আনার চেষ্টা করলেন। কিন্তু এসব করে লাভের লাভ কিছু হবে না। মানুষ অন্তত তার চালাকি ধরে ফেলেছে। যদি মানুষের দাবি নিয়েই তারা আন্দোলন করবেন, তাহলে রাস্তাতে এইভাবে রাত্রিবাস করার নাটক না করে বাড়িতে ফিরে গিয়ে রাজ্যপাল যেদিন আসবেন, সেদিনই তার সঙ্গে দেখা করতে পারতেন। মানুষের দাবি সামনে রেখে নিজেকে হিরো করার এই চেষ্টা, এই চালাকি সাধারণ মানুষ খুব ভালোই বুঝতে পারছে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এর ফলে তৃণমূল আরও চাপে পড়ে গেল। মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, তৃণমূল মানবদরদী দল নয়। কারণ রাজ্যপালকে তারা বলছে যে, রাজ্যপাল নাকি ভয়ে উত্তরবঙ্গ পালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু গোটা রাজ্যের মানুষ দেখছে, উত্তরবঙ্গের কি ভয়াবহ পরিস্থিতি বন্যায়। সেই জায়গায় তৃণমূলের নেতারা কলকাতায় ধর্না দিচ্ছেন, আর রাজ্যপাল মানুষের বিপদে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। ফলে সেই রাজ্যপালকে যেভাবে আক্রমণ করছে, তাতে তাদের ভাবমূর্তি নিয়েই প্রশ্ন উঠবে জনমানসে। আর তার মধ্যে বাংলার যুবরাজের এই ধরনের নাটক অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। দিনের শেষে তেমনটাই দাবি রাজনৈতিক সমালোচকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!