এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > নেতাদের বাড়িতে সিবিআই গেলেও প্রচন্ড খুশি অভিষেক? চমকে দেওয়া তথ্য ফাঁস! হাসছে বিরোধীরা!

নেতাদের বাড়িতে সিবিআই গেলেও প্রচন্ড খুশি অভিষেক? চমকে দেওয়া তথ্য ফাঁস! হাসছে বিরোধীরা!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-যত সময় যাচ্ছে, ততই একটা জিনিস স্পষ্ট হচ্ছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলে এবার ধীরে ধীরে তৃণমূলের সর্বেসর্বা হয়ে উঠছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরনো নেতাদের যেভাবেই হোক, তিনি সাইড করার চেষ্টা করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যারা ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি রয়েছেন, তাদের কিভাবে কাবু করা যায়, তার চেষ্টায় ব্যস্ত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামীরা। এতদিন ধরে সেই অভিযোগ করেছিল বিরোধীরা। আর আজ দলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দীর্ঘদিনের সৈনিক রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি শুরু হয়েছে সকাল থেকে। মদন মিত্রের বাড়িতেও পৌঁছে গিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা। কিন্তু প্রকাশ্যে ধর্না করলেও এই ব্যাপারে তেমন কোনো বক্তব্য রাখতে দেখা যাচ্ছে না তৃণমূলের যুবরাজকে। যা দেখে বিরোধীরা বলছেন, যত বেশি এই সমস্ত নেতাদের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি হয়, ততই বেশি খুশি হবেন তৃণমূলের যুবরাজ। কারণ তিনি চাইছেন, এই সমস্ত পুরনো নেতাদের যেভাবেই হোক সাইড করতে। যত তারা দল থেকে সরে যান বা তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়, ততই তার সুবিধা বলেই দাবি একাংশের। আর এসবের মাঝেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যে বক্তব্য রাখলেন, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

প্রসঙ্গত, এদিন একের পর এক তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমি তো শুনলাম, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই মদন মিত্র, এবং ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি হওয়া নিয়ে খুশিই রয়েছেন। তিনি তেমনভাবে অসন্তুষ্ট নন। এটা কি তৃণমূলের নতুন এবং পুরনো নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব! আপনারা একটু খোঁজ নিয়ে দেখুন। আমার কাছে খবর রয়েছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু এটা নিয়ে খুশিই হয়েছেন।” একাংশ বলছেন, এ কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, দলের পুরনো নেতাদের ধীরে ধীরে পদ থেকে সরিয়ে দিতে শুরু করেছেন তৃণমূলের যুবরাজ। তিনি চাইছেন, তার অনুগামীদের দিয়ে সমস্ত দলকে কন্ট্রোল করতে। তাই বিভিন্ন জেলাতেও দেখা যায়, প্রবীণ নেতাদের সভাপতি না করে অত্যাধিক নবীন মুখদের সামনে আনা হচ্ছে। সেদিক থেকে দলের শীর্ষস্তরের এমন কিছু নেতা রয়েছেন, যাদেরকে সাইড করতে চাইলেও নিজের পিসির কারণে তা করা সম্ভব হচ্ছে না ভাইপোর। স্বাভাবিকভাবেই সেই সমস্ত নেতা, মন্ত্রীর বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি হওয়ার কারণে ভাইপো মনে মনে খুশি হয়েছেন। তিনি চাইছেন, যেভাবেই হোক, এই সমস্ত নেতারা গ্রেফতার হয়ে যান। তাহলে অন্তত তার পথের কাটারা দূরে সরবেন। তিনি ধীরে ধীরে দলের রাশ আরও নিজের হাতে নিতে শুরু করবেন বলেই দাবি সমালোচকদের।

বিরোধীদের দাবি, নিজের বেলায় আটিসুটি, পরের বেলায় চিমটি কাটি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বা তার ঘনিষ্ঠ নেতাদের যদি সিবিআই তলব করে বা তাদের বাড়িতে তল্লাশি হয়, তাহলে তা নিয়ে সাথে সাথেই মুখ খুলতে দেখা যায় তৃণমূলের যুবরাজকে। কত বড় বড় ভাষণ দেখা যায় তাকে। কিন্তু দলের এত বড় নেতা, রাজ্যের মন্ত্রী, বর্তমান বিধায়ক তাদের বাড়িতে তল্লাশি চলছে। অথচ তিনি ধর্না মঞ্চে কার্যত নীরব। এখন তিনি একবারের জন্যও বলছেন না যে, তাদের দলের নেতাদের প্রতি প্রতিহিংসা পরায়ন আচরণ হচ্ছে। হয়ত তিনি পরবর্তী বলবেন। কিন্তু সেটা লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই নয়। আসলে ভাইপো নিজেও জানেন যে, এই সমস্ত নেতারা যদি থাকে, তাহলে তার পক্ষে দলের মাতব্বরি করা সম্ভব হবে না। তাই কার্যত পিসির চারপাশে থাকা নিয়ে তাদের কিভাবে জব্দ করা যায়, তার সুযোগ খুঁজছেন ভাইপো। তাই যখন সিবিআই তল্লাশি শুরু হয়েছে দলের বর্ষীয়ান গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বাড়িতে, তখন তিনি মনে মনে খুশি এবং হয়ত এটাও প্রার্থনা করছেন, যত তাড়াতাড়ি সিবিআই এই সমস্ত নেতাদেরকে তুলে নিয়ে যাক, তাহলে তার পক্ষে দলে ছড়ি ঘোরানোর কাজটা আরও বেশি সহজ হয়ে যাবে বলেই কটাক্ষ বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, সুকান্ত মজুমদারের এদিনের বক্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে বর্তমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি একেবারে তৃণমূলের যুবরাজের মুখোশটা টেনে খুলে দিলেন। বুঝিয়ে দিলেন, তৃণমূলে নতুন এবং পুরনোর যে দ্বন্দ্ব চলছে, তা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, দলের নেতাদের বাড়িতে তল্লাশি চললেও তা নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যাচ্ছে না যুবরাজকে। আজকে বরঞ্চ তিনি মনে মনে এই বিষয় নিয়ে প্রবল খুশি। আসলে এই যে বর্তমানে ধর্না আন্দোলন করছেন যুবরাজ, এটা আর কিছুই নয়, নিজেকে হিরো বানানোর চেষ্টা। তিনি বোঝাতে চাইছেন যে, তিনিই এবার দলে শেষ কথা বলবেন। তার পিসি অতীত, এখন তার রাজত্ব চলবে সর্বত্র। অর্থাৎ নিজেকে নিজেই নেতা বানিয়ে সকলের কাছে নিজের নির্দেশ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বাংলার যুবরাজ। যারা তার বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তাদেরকে যেভাবেই হোক, বিপদে ফেলতে আপ্রাণ প্রার্থনা শুরু করেছেন ভাইপো মনি। তাই এদিন মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি হওয়ার সময় কার্যত খুশিই হয়েছেন আঞ্চলিক দলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!