এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বকেয়া ডিএ, কেন্দ্রীয়হারে বেতন ও ‘বদলি সন্ত্রাস’ নিয়ে নতুন পদক্ষেপ সরকারি কর্মচারীদের – জানুন বিস্তারিত

বকেয়া ডিএ, কেন্দ্রীয়হারে বেতন ও ‘বদলি সন্ত্রাস’ নিয়ে নতুন পদক্ষেপ সরকারি কর্মচারীদের – জানুন বিস্তারিত

দীর্ঘদিন ধরেই এই রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের একাংশ, বকেয়া ডিএ, কেন্দ্রীয়হারে বেতন সহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন। সেই প্রতিবাদ কখনো রাস্তায় নেমে তো কখনো আইনি লড়াইয়ের দরবারে হয়েছে। যদিও বা সরকারি কর্মচারীদের একাংশের এই প্রতিবাদকে গুরুত্ব দিতে নারাজ সরকার।

নিজেদের ন্যায্য পাওনা না পেয়ে যখন তীব্র যন্ত্রনায় ভুগছেন রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী, তখন রাজ্য সরকারের বক্তব্য – বাম আমলের বিপুল দেনার দায়ে ডুবে রাজ্য। তার মাঝেই উল্কার গতিতে উন্নয়নের কাজ করছেন মুখ্যমন্ত্রী – তারই মাঝে যতখানি সম্ভব মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি কর্মচারীদের জন্য দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। কিন্তু, সরকারি কর্মচারীরা ‘অহেতুক’ না পাওয়ার দিকটাকেই জোর দিচ্ছেন!

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ধারণা কেন্দ্র সরকার যেমন নির্দিষ্ট নিয়ম-নীতি মেনে নির্দিষ্ট সময়ে কর্মচারীদের প্রাপ্য মিটিয়ে দেন, এই রাজ্যে তা কিছুতেই হবে না – তা মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট। তাই এবার অগত্যা রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে তাঁদের সমস্ত অভিযোগ জানাতে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকারি কর্মীদের সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটি। সূত্রের খবর, গত শুক্রবারই এই ব্যাপারে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। আগামী ২ রা জানুয়ারী রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের সমস্ত দাবি-দাওয়ার কথা তাঁকে জানানোর জন্য সময় ভিক্ষা করা হয়েছে।

কিন্তু ঠিক কি কি অভিযোগ রয়েছে এই সরকারি কর্মচারীদের? জানা গেছে, গত ২৯ শে নভেম্বর সিপিএম প্রভাবিত সরকারি কর্মচারীদের এই সংগঠনটি টিফিন আওয়ারের সময় নবান্নে একটি বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। আর এরপরই বিক্ষোভকারীদের ধাক্কা দিয়ে, কলার ধরে সেখান থেকে বার করে দেওয়ার পাশাপাশি, তাঁদের বেশ কয়েকজন নেতা এবং সমর্থককে গ্রেপ্তার করে শিবপুর থানায় আটকে রাখে পুলিশ। পরে অবশ্য, রাজ্য জুড়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারীদের মিলিত প্রতিবাদের কাছে মাথা নত করে সসম্মানে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু এরপরেই, সিপিএম প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয় শঙ্কর সিনহা সহ একাধিক প্রথম সারির নেতাদের দুরের জেলাগুলোতে বদলি করে দেওয়া হয়। অভিযোগ, বিজয়বাবুকে কলকাতা থেকে একেবারে দার্জিলিংয়ের বিজনবাড়ি এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের কাউকে দার্জিলিং, কাউকে কালিম্পঙ তো কাউকে মুর্শিদাবাদে পাঠানো হয়েছে। এর আগেও, রাজ্যে বহুবার সরকারি কর্মচারী আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু, এইভাবে কোন প্রথমসারির সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সহ আন্দোলনকারীদের এইভাবে গন-বদলির কথা মনে করতে পারছেন না কেউই।

বদলির ভয়ে মুখ খুলতে না চাওয়া সরকারি কর্মচারীরা অবশ্য নিজেদের মধ্যে আলোচনায় জানাচ্ছেন, সরকার মুখে বলবে চাকরির শর্ত অনুযায়ী এই বদলি। কিন্তু যাঁরাই মুখ খুলছেন আর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বেছে বেছে বদলিটা তাঁদেরই হচ্ছে। সুতরাং, এ সরকারের প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাব ছাড়া আর কিছু নয়। ন্যায্য প্রতিবাদ ‘বদলি সন্ত্রাস’ দিয়ে স্তব্ধ করার চেষ্টা চলছে! আর তাই এবারে এই বদলির প্রতিবাদে এবং সরকারের প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ বন্ধ করতে এবার রাজ্যপালের দ্বারস্থ হচ্ছে কো-অর্ডিনেশন কমিটি।

এদিন এই প্রসঙ্গে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিজয় শঙ্কর সিনহা বলেন, “সরকার আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করেছে। আমরা তাই রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে সমস্ত কথা জানিয়েছি”। তবে, সরকারের এই ‘বঞ্চনা’ ও প্রতিবাদ করলেই বদলি – এই আচরণের জন্য ক্রমশ ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হচ্ছে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে। এই নিয়ে মুখ খুলছেন শাসকদলের সরকারি কর্মচারী নেতারাও। আর এখনও কো-অর্ডিনেশন কমিটির যতখানি সাংগঠনিক ক্ষমতা রয়েছে, তাতে ভবিষ্যতে তাঁরা আন্দোলনের ডাক দিলে দলমত নির্বিশেষে অন্যান্য সংগঠনেরও পূরণ সহযোগিতা ও সমর্থন পেয়ে যাবেন। আর তাই, বিজয়বাবুদের নতুন পদক্ষেপে আশার এল দেখছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!