প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চলছে। কিন্তু দুই একজন গ্রেপ্তার হলেও, বাকিরা কেন গ্রেফতার হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সকলেই। আদালতেও কার্যত প্রতিমুহূর্তে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। আর এইসবের মাঝেই প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের রহস্য ভেদ করতে বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করল সিবিআই। যেখানে ওএম আর শিটের বরাত যে কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে, সেই কোম্পানির একজন দায়িত্ব প্রাপ্তকে তলব করা হয়েছে। মূলত এই প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির রহস্য ভেদ করতেই ওএমআর শিট নিয়ে যে সমস্ত প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে, তার গভীরে পৌঁছতে চাইছে সিবিআই। সেই কারণেই এই তলব বলে খবর।

প্রসঙ্গত, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে সেই তদন্তের শেষ কোথায়, এটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। কেন সিবিআই এখনও পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারছে না? অনেকেই আবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ক্যালাসনে বলে দাবি করতে শুরু করেছেন। তবে এতসবের মাঝে সিবিআই ওএমআর শিটের বিষয়টি যে কোম্পানি দেখত, তার দায়িত্বপ্রাপ্ত কৌশিক মাঝিকে তলব করেছে। জানা গিয়েছে, সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে এই কৌশিক মাঝিকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মূলত কিভাবে এই ব্যাপারে বরাত হয়েছিল, কার কার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল, সেই সমস্ত বিষয়ে জানতে চাইবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শুধু তাই নয়, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি এবং বর্তমানে জেলে থাকা মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে কৌশিক মাঝির কতবার বৈঠক হয়েছে, সেই বিষয়টিও জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে রাখা হয়েছে বলে খবর।

বলা বাহুল্য, শিক্ষা ব্যবস্থায় যে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। বেকার যুবক-যুবতীরা রাস্তায় বসে রয়েছেন, যারা চাকরি পাওয়ার যোগ্য, তাদের চাকরি না দিয়ে টাকার বিনিময়ে অস্বচ্ছতা করে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মানুষের কাছে এই বিষয়টি কার্যত পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। তবে দুর্নীতি হওয়া সত্ত্বেও কেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ সেভাবে গ্রহণ করা হচ্ছে না? সেই প্রশ্ন যত দিন যাচ্ছে, ততই আরও বেশি করে উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই ভরসা হারিয়ে ফেলছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ওপরে। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা চাইছে, সমস্ত দিক গোছগাছ করে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে আসল রহস্য উদঘাটন করতে। আর সেই কারণেই এবার তারা কৌশিক মাঝিকে তলব করলো

পর্যবেক্ষকদের মতে, দুর্নীতির রহস্য ভেদ করতে আর এক মুহূর্তও বিলম্ব করা উচিত নয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। তারা যদি সময় বুঝে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চায়, তাহলে মানুষের মন থেকে ধীরে ধীরে মুছে যেতে শুরু করবে। প্রমাণ হয়ে যাবে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কোনো কাজের নয়। তাই তথ্য প্রমাণের জন্য কৌশিক মাঝিকে এবং তার মত ব্যক্তিদের হাজারবার তলড় করা যেতে পারে। কিন্তু মানুষ চাইছেন সুবিচার। তাই এই তলবের পাশাপাশি যারা যুক্ত বলে মনে হবে, তাদের অবিলম্বে হেফাজতে নিয়ে মানুষের মনে নিজেদের বিশ্বাসটুকু ফেরানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করুক সিবিআই। দিনের শেষে তেমনই দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।