এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সমর্থনে রাস্তায় গেরুয়া শিবির, জেনে নিন বিস্তারিত

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সমর্থনে রাস্তায় গেরুয়া শিবির, জেনে নিন বিস্তারিত

 

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে ইতিমধ্যে উত্তাল সারা ভারতবর্ষ সহ বঙ্গ রাজনীতি। একদিকে যেমন তৃণমূল নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই তিনদিন কলকাতা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পদযাত্রা করে সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন,

অন্যদিকে তেমনই জেলায় জেলায় সভা-সমিতি করে সাধারণ মানুষের মধ্যে এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিক আইন বিরোধী প্রচার চালাতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্বদেরকে। কিন্তু কেন্দ্রের শাসক দল তথা রাজ্যের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি যে নিজেদের অবস্থানে অনড়, তা ইতিমধ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

আর তাই এবার রাজ্য বিজেপির পাশাপাশি জেলা বিজেপি নেতৃত্বকেও এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিক আইনের স্বপক্ষে রালি এবং প্রচার অভিযান করার প্রস্তুতি নিতে দেখা যাচ্ছে। আর সেরকমই প্রস্তুতি চলছে শিলিগুড়ি শহর জুড়ে। জানা যাচ্ছে, আগামী 24 ডিসেম্বর শিলিগুড়ি শহর জুড়ে মেগা রালি করবে ভারতীয় জনতা পার্টি। এমনকি সেই রালিতে কেন্দ্র এবং রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে এনে বাঘাযতীন পার্ক থেকে মল্লাগুড়ি পর্যন্ত মিছিল করা হবে।

জানা গেছে, সেই মোতাবেক প্রস্তুতি পর্ব শুরু হয়ে গেছে শিলিগুড়ির বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। প্রচার অভিযানের মাধ্যমে মানুষকে একত্রিত করে আগামী 24 তারিখের মিছিলকে সফল করতে রীতিমত সর্বশক্তি লাগিয়ে দিচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য মনে করছেন, সারা দেশের পাশাপাশি বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূল কংগ্রেস যেভাবে প্রথম থেকেই সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের বিরোধিতা করে গণ আন্দোলন থেকে শুরু করে মিছিল-মিটিং ইত্যাদি সংগঠিত করেছে, তার তুলনায় অনেকটাই ধীরে চলছে রাজ্যের গেরুয়া শিবির।

তবে বিশ্লেষকদের একাংশ এটাও মনে করছেন, তৃণমূল কংগ্রেস যেভাবে এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিক আইনের বিপরীত দিকটি মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন, তাতে করে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রতি অনেক সাধারন মানুষ এবং বিজেপি কর্মীদের মোহভঙ্গ হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস যে নিজেদের প্রচার অভিযানে অনেকটাই সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেক্ষেত্রে বেশি পরিমাণ সাংগঠনিক শক্তি না থাকায় তৃণমূল কংগ্রেসকে দমাতে পারছে না ভারতীয় জনতা পার্টি।

তবে বিশ্লেষকরা যাই মনে করুক না কেন, নিজেদের দুর্বলতা অবশ্য স্বীকার করে নিতে চায় না শিলিগুড়ির ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্ব। তাঁদের মতে, রাজ্যে অস্থিরতা থাকায় তারা রাস্তায় নামতে পারছে না। তবে এইবার সময় এসেছে, যখন তারা রাস্তায় নেমে মানুষের মধ্যে এনআরসি এবং সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের স্বপক্ষে জনমত গড়ে তুলতে পারেন।

এই বিষয়ে শিলিগুড়ি বিজেপির সাংগঠনিক সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল বলেন, “তৃণমূল রাস্তায় নামলেই হল! ওদের অনেকে জানে না আসলে জিনিসটা কি! কি জন্য তারা রাস্তায় নেমেছে? আইন হয়েছে। দেশের ইতিহাসে এটা একটা যুগান্তকারী ঘটনা। যে উদ্বাস্তু শরণার্থীদের এতদিন দেশ নাগরিকত্ব দিতে পারেনি, এই আইন সেই কাজটা করছে। আমাদের দায়িত্ব মানুষকে আইন সম্পর্কে অবহিত করা।

এই নিয়ে বাজার গরম করা রাজনীতি আমরা চাই না।” শিলিগুড়ি সাংগঠনিক ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি আরও বলেন, “24 তারিখে আমাদের মিছিল হবে। তারপরেই কার্যকর্তারা বুথস্তরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে সংশোধিত নাগরিক আইন সম্পর্কে বোঝাবেন।” পাশাপাশি তৃণমূলকে কটাক্ষ করে তার দাবি, আমরা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল। সাংগঠনিক কোনো খামতি এখানে আমাদের নেই। একইরকম ভাবে নিজেদের আন্দোলন সম্পর্কে বলতে শোনা যায় দার্জিলিং জেলা ভারতীয় জনতা পার্টির মুখপাত্র কমল ঘোষকে।

এই বিষয়ে তিনি বলেন, “এনিয়ে রাজ্যে অস্থিরতা চলছিল। তাই আমরা তখন কর্মসূচি নিইনি। তৃণমূল এই নিয়ে বেশি লম্ফঝম্প করে জমি হারাচ্ছে। কারণ মানুষ বুঝেছে ওরা শুধুমাত্র তোষণের রাজনীতি করেছে।” তবে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্ব যাই বলুন না কেন, তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে অবশ্য তাদেরকে কটাক্ষ করতেও ছেড়ে দেওয়া হয়নি। এই বিষয়ে দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, “সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট ও এনআরসি নিয়ে আর পথে নেমে লাভ হবে না। মানুষ এই কালা আইন প্রত্যাখ্যান করেছে। ওদেরকেও প্রত্যাখ্যান করবে।”

তবে আগামী 24 তারিখের মহা মিছিলে 18000 কর্মী-সমর্থকদের জমায়েত করার লক্ষ্য নিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি বলে ইতিমধ্যেই বিজেপি সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ওই মিছিলে কেন্দ্র নেতৃত্বের তরফ থেকে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সহ একাধিক রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে খবর। তবে মূল সমস্যা প্রশাসনিক অনুমতি নিয়ে। এর আগেও দেখা গিয়েছে, একাধিক ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মসূচিতে অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। সেক্ষেত্রে আগামীদিনে প্রশাসনের কাছ থেকে 24 তারিখের মিছিলের অনুমতি না পেলে ভারতীয় জনতা পার্টি কি করবে!

এই প্রশ্নের উত্তরে জেলা বিজেপির মুখপাত্র কমলবাবু বলেন, “প্রশাসন যদি অনুমতি না দেয়, তবুও আমরা সেদিন রাস্তায় নামবো। যেখানে আটকাবে, সেখানে যা যা করার করব।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিক আইন প্রসঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টি এবং তৃণমূল কংগ্রেস কেউই কাউকে এক চুল জমি ছাড়তে রাজি নয়। এমতাবস্থায় আগামী দিনে এই দুই আইন নিয়ে দেশ তথা রাজ্যের রাজনীতি কোন দিকে গিয়ে পৌঁছয়! সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!