ভোটার তালিকা যাচাইয়ের সঙ্গে এনআরসির কি সম্পর্ক? স্পষ্ট করলেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার কলকাতা রাজ্য October 17, 2019 অসমে এনআরসি চালুর পর বাংলাতেও এনআরসি হতে পারে বলে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন ছড়িয়ে ছিল। তবে প্রথম থেকেই এই ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মনের আতঙ্ক কাটাতে বাংলায় তিনি কোনোভাবেই এনআরসি হতে দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিজেপি নেতাদের একাংশের এনআরসির স্বপক্ষে দাবি এবং গোদের উপর বিষফোঁড়া হিসেবে স্বাভাবিক নিয়মে ভোটার যাচাই কর্মসূচি শুরু হলে তা নিয়ে তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয় সাধারণ মানুষের মধ্যে। অনেকেই উপলব্ধি করতে থাকেন, হয়ত বা এই ভোটার যাচাই কর্মসূচীর মধ্যে দিয়ে নাগরিকপঞ্জির তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু প্রথম থেকেই সেই আশঙ্কাকে দূরীভূত করে এই ব্যাপারে বার্তা দিতে দেখা যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়ে দেন, “স্বাভাবিক নিয়মেই নির্বাচন কমিশনের কথামত ভোটার কার্ড সংশোধনের অঙ্গ হিসেবে ভোট যাচাই কর্মসূচি করা হচ্ছে। এর সঙ্গে এনআরসির কোন সম্পর্ক নেই।” কিন্তু কে কার কথা শোনে! বাংলার মানুষের মনে প্রবল বিশ্বাস জন্ম নিয়েছিল যে, হয়ত বা এই ঘটনার সঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির মিল রয়েছে। আর তাইতো আতঙ্কে অনেকে সেই এনআরসির জন্য আত্মহত্যা করেছেন বলেও দাবি একাংশের। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা ঠিক কি! সত্যিই কি এই ভোটার যাচাই কর্মসূচির সঙ্গে এনআরসির কোনো সম্পর্ক রয়েছে! এদিন এই প্রসঙ্গে কলকাতায় এসে কেন্দ্রীয় ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন বলেন, “এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটার তালিকায় থাকা তথ্য ভোটাররা নিজেরাই মিলিয়ে নিতে পারছেন। ভোটার তালিকায় অনেকের ভুল ভ্রান্তি থাকে, ভোটাররা নিজেরাই তা সংশোধন করে নিতে পারবেন। তবে এটা বাধ্যতামূলক নয়। আর এর সঙ্গে এনআরসির কোনো সম্পর্ক নেই। কমিশন চাইছে, সব ভোটাররা তাদের তথ্য যাচাই করে নিন।” অর্থাৎ, এতদিন এই ভোটার যাচাই কর্মসূচিতে অনলাইনের মাধ্যমে নানা প্রক্রিয়া করার কথা বলা হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এনআরসি সম্পর্কে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল, তা কেন্দ্রীয় ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈনর কথায় অনেকটাই কেটে যাবে বলে মনে করছে একাংশ। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে এই ভোটার যাচাই কর্মসূচিতে অনলাইনের কিছু সমস্যা থাকায় অনেক ভোটারই তাদের সমস্ত তথ্য যাচাই করতে পারেননি। অনেক সময় দেখা গেছে, সার্ভার ডাউন রয়েছে। ফলে এদিন কলকাতায় মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরে বৈঠকে উপস্থিত কেন্দ্রীয় ডেপুটি নির্বাচন কমিশনারের কাছে এই ব্যাপারগুলো তুলে ধরেন রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা। ইতিমধ্যেই বহু ভোটারের তথ্য যাচাইয়ের কাজ না হওয়ায় 18 নভেম্বর পর্যন্ত এই দিন বৃদ্ধি করা হলেও সামনে দীপাবলীর ছুটি থাকায় এবং অনলাইন সার্ভারে কিছু ত্রুটি থাকায় অনেকেই এই কাজ করতে পারেননি। ফলে সেক্ষেত্রে কি দিন বাড়ানো হবে! এদিন এই প্রসঙ্গে সুদীপ জৈন বলেন, “মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আমাকে কিছু সমস্যার কথা বলেছেন। আমি তা দিল্লিতে জানাবো। প্রয়োজনে দিন আরও বাড়ানো হবে। তবে আশা করি নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যেই হয়ে যাবে। ভোটারদের নিজেদের প্রয়োজনে তথ্য যাচাই করা দরকার।” সব মিলিয়ে কলকাতায় এসে এনআরসি নিয়ে ভোটার যাচাই কর্মসূচির সঙ্গে একসাথে মিলিয়ে দিয়ে একশ্রেণীর মানুষ আতঙ্কে ভুগলে তা যেমন নিরসন করার চেষ্টা করলেন কেন্দ্রীয় ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার, ঠিক তেমনই ভোটার যাচাই কর্মসূচির দিন বাড়ানো যায় কিনা, তা নিয়েও আশ্বাস দিতে দেখা গেল তাঁকে। আপনার মতামত জানান -