অনলাইনে প্লেসমেন্টের নামে রাজ্যজুড়ে প্রতারণা সংস্থার রমরমা,হাজার হাজার টাকা খোয়াচ্ছেন বেকাররা রাজ্য August 13, 2018 চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার খবর নতুন নয়। তবে বর্তমান ডিজিট্যাল যুগে অনলাইন প্লেসমেন্টের নামে প্রতারণা সংস্থাগুলো যেন জাকিয়ে ব্যবসা শুরু করেছে। সম্প্রতি ভালো কোনো সংস্থায় চাকরির আশায় অনলাইনে একটি প্লেসমেন্ট কোম্পানিতে সিভি আপলোড করেছিলেন বীরভূমের এক যুবক। এক সপ্তাহ পুরতে না পুরতেই তার কাছে একটা বেসরকারি সংস্থা থেকে ফোন আসে। বলা হয় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে লোক নেওয়া হচ্ছে, তিনি আগ্রহী কিনা। অভাবের এই পরিস্থিতিতে কোনোরকম বিবেচনা না করেই হ্যাঁ বলে দেয় যুবক। তারপরই জাল বিছাতে থাকে প্রতারকরা। ইন্টারভিউ নেওয়ার আগে রেজিস্ট্রেশান ফি বাবাদ মোটা টাকা নেওয়া হয় যুবকটির কাছ থেকে। তারপরও রেহাই মেলেনি তার। নানারকম ছলচাতুরি করে তার কাছ থেকে টাকা আদায় চলতে থাকে। এভাবে কয়েক হাজার টাকা খোয়ানোর পর যুবকটি বুঝতে পারে যে সে ঠকবাজদের হাতে পড়েছে। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে ——————————————————————————————- এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে। এটা শুধু একটা ঘটনা। এরকম হাজার হাজার উদাহরণ দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তবে এরকম কায়দায় যে প্রতারণা হতে পারে বিষয়টি প্রথম নজরে আসে দিল্লি পুলিশের। বছর চারেক আগে একজন গ্রেফতার হয়েছিল রাজধানীতে। তার সূত্র ধরেই পরে দেখা যায় এর জাল বিন্যাস ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন রাজ্যে। এর থেকে বাদ পড়েনি বাংলাও। এরপর এ রাজ্য থেকেও এরকম ভুরি ভুরি অভিযোগ আসতে শুরু করে। কিন্তু চাকরি দেওয়ার নাম করে এইসব প্রতারণা দিন দিন বাড়ার কারণ কী? জবাবে রাজ পুলিশের এক অফিসার জানাচ্ছেন,চাকরি দেওয়ার নাম করে আগেও টাকা নেওয়া হত। অনলাইন জামানার আগে বিষয়টা হাতে হাতে মেটানো হত। বড় অংশের চাকরিপ্রার্থীদের ঠকিয়ে চম্পট দিতে প্রতারকরা। তারপর শুরু হল অফিস খুলে বেসরকারি সংস্থায় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ঠকবাজি। এই দুই ক্ষেত্রেই প্রতারকাদের চিহ্নিত করা এবং গ্রেফতার করা সহজ ছিল। কিন্তু এখনকার ইন্টারনেটের জামানায় প্রতারণার ধরণ বদলাতে শুরু করেছে। জটিল হয়েছে সবকিছু। এখন অনলাইনে প্রচুর নামীদামী কোম্পানির পাশে বেনামী, ছোটখাটো সংস্থাও রয়েছে,যারা দাবী করে ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে নানান নামী দামী মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি পাইয়ে দেবে। বিজ্ঞাপনী চমকে বিভ্রান্ত হয়ে বেকার ছেলে মেয়েরা এদের শিকার হচ্ছে। তারপরই শুরু হচ্ছে টাকা নেওয়ার একই প্রক্রিয়া। হাজার হাজার টাকা খোয়াচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এরপর যখন ঠকবাজরা ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে,তখন ঝাঁপ বন্ধ করে চম্পট দিচ্ছে এইসব প্লেসমেন্ট সংস্থা। বেকার ছেলেমেয়েদের ব্যক্তিগত তথ্য অর্থাৎ আঁধার কার্ড,ভোটার কার্ড জেনে নিয়েও বিভিন্ন অসৎ কাজে ব্যবহার করছে ওই সব প্লেসমেন্ট সংস্থা, এমনটাও অভিযোগ রয়েছে। এই ধরনের প্রতারণার হাত থেকে কীভাবে বাঁচা চায়? এ প্রসঙ্গে পুলিশের পরামর্শ,অনলাইনে কোনো চাকরির জন্য অ্যাপ্লাই করার আগে ভালো করে তাঁদের সংস্থার ব্যাপারে খবরাখবর নিতে হবে। অনামী বা অখ্যাত কোনো কোম্পানীর জন্য সিভি আপলোভ না করতেই পরামর্শ দিচ্ছেন পুলিশ প্রশাসন। চাকরির ইন্টারভিউ বা পরীক্ষার জন্য কোনো প্রসেসিং ফি লাগে না। এ ব্যাপারেও সচেতন হতে বললেন তিনি চাকরিপ্রার্থীদের। পাশাপাশি দুম করে নিজেদের ব্যাক্তিগত তথ্য বিশেষ করে ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড শেয়ার না করতেও নিষেধ করলেন। এবং কোনোরকম সন্দেহ হলেই পুলিশকে অবিলম্বে জানানোর কথা বললেন। একইসঙ্গে, নামী প্লেসমেন্ট সংস্থাগুলির প্রতিও পুলিশের পরামর্শ, তাঁদের সংস্থা যাতে নথি চুরি না করে সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। সাইবার সিকিওরিটির উপরও জোর দেওয়ার কথা বললেন পুলিশ প্রশাসন। আপনার মতামত জানান -