এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > অনুব্রত এখন অতীত, বীরভূম নিয়ে আরও সমস্যায় মমতা! চিন্তিত তৃনমূলও!

অনুব্রত এখন অতীত, বীরভূম নিয়ে আরও সমস্যায় মমতা! চিন্তিত তৃনমূলও!


 

 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বীরভূম জেলায় শুধু তৃণমূল নয়, রাজনীতি বলতে শেষ কথা ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তার ভয়ে বাঘে গরুতে কার্যত এক ঘাটে জল খেত। বিরোধীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার মতো ক্ষমতা হতো না তার দাপটে, এমনটাই অভিযোগ ছিল সকলের। তবে এবার সেই অনুব্রত মণ্ডলের কার্যত সঙ্গীহীন দশা। গরু পাচার মামলায় অনেকদিন আগে থেকেই তিনি জেলে। এখনও পর্যন্ত তার জামিনে মুক্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে বর্তমান সময় পর্যন্ত তিনি বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে থাকলেও, বিকল্প রাস্তা খুঁজতে চাইছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে অনুব্রত মণ্ডলকে হয়তো সরাতে পারছেন না তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু কাজল শেখের মতো নেতার উত্থান বীরভূমে তৈরি করেছে অন্য রাজনৈতিক সমীকরণ। আর এবার সেই বীরভূম জেলাতেই, যা অনুব্রত মণ্ডলের গড় বলে পরিচিত, সেখানেই ঘটে গেল এক বড়সড় ঘটনা‌। যেখানে নানুরের এক পার্টি অফিসে অনুব্রত মণ্ডলের ছবি উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

প্রসঙ্গত, এদিন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা সোশ্যাল মিডিয়া একটি পোস্ট করেন। যেখানে দেখা যায়, নানুরের হোসেনপুর পার্টি অফিসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর এক পাশে অনুব্রত মণ্ডলের ছবি থাকলেও, সেই ছবি সাদা রং দিয়ে মুছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এখনও পর্যন্ত অনুব্রত মণ্ডলকে দল জেলা সভাপতি পদে রাখলেও, তার নাম পর্যন্ত সেখানে নেই। আর এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই নানা মহলে মলে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

অনেকে বলছেন, কর্মীদের মধ্যে এই ধারণা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, অনুব্রত মণ্ডলের ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব কম। তাই ধীরে ধীরে কর্মীরা কাজল শেখের মত ব্যক্তিকেই সর্বেসর্বা বলে মনে করতে শুরু করেছেন। যার ফলে একদিকে অনুব্রত মণ্ডলের রাশ যে বীরভূমে হালকা হচ্ছে, তা স্পষ্ট। আবার অন্যদিকে কাজল শেখের মত নেতার নির্দেশেই যে আগামী দিনে জেলার কর্মীরা চলতে চাইছেন, তাও স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বিরোধীদের মতে, অনুব্রত মণ্ডলের রাশ বীরভূম জেলায় যে ধীরে ধীরে হালকা হচ্ছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। যে যাই বলে বলুক, এই অনুব্রত মণ্ডলের দাপটে হয়তো এতদিন তৃণমূলের অনেকেই কথা বলতে পারতেন না। কিন্তু তাকে অনেকেই সহ্য করতে পারছিলেন না। তাই তিনি এখন জেলে থাকার কারণে কাজল শেখের মতো নেতার ওপর অনেকে ভরসা করছেন তাই অনুব্রত মণ্ডলকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সভাপতি করে রাখলেও, হোসেনপুর পার্টি অফিসের এই চিত্র অন্য কথা বলছে। স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, অনুব্রত মণ্ডলের হাত থেকে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে এই বীরভূম জেলা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এর ফলে চরম সমস্যার মুখে পড়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা দীর্ঘদিনের। তাকে ভাই হিসেবে স্নেহ করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই দীর্ঘদিনের সতীর্থ পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে দলের সব পদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডল গ্রেপ্তার হলেও তাকে এখনও পর্যন্ত বীরভূম জেলার সভাপতি করে রাখা হয়েছে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অনুব্রত মণ্ডল সফট কর্নার হলেও, সেই বীরভূম জেলার হোসেনপুরের পার্টি অফিসে অনুব্রতবাবুর ছবি মুছে দেওয়ার ঘটনা চাপে ফেলে দিল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বকে। নেতৃত্বের কাছে কর্মীরা এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাইল যে, তারা আর অনুব্রত মণ্ডল নয়, বিকল্প নেতার সন্ধানে তৎপর। তাহলে কি অনুব্রত মণ্ডলের বিকল্প মুখ কাজল শেখ! তা নিয়ে নানা মহলে মোলে তৈরি হয়েছে জল্পনা। তবে কর্মীদের মনের এই কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিকে নাড়া দেয় কিনা, তা অবশ্যই নজর রাখার মত বিষয়। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!