এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > রেশনে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগে নিজেদের পঞ্চায়েতেই তালা ঝোলালেন তৃণমূল কর্মীরা

রেশনে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগে নিজেদের পঞ্চায়েতেই তালা ঝোলালেন তৃণমূল কর্মীরা

কিছুদিন আগেই দুর্নীতি বন্ধের ব্যাপারে কড়া হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গিয়েছিল তৃনমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু তারপরেও অবস্থার যে কোনরূপ উন্নতি হয়নি, তা ফের আরও একবার রেশন দূর্নীতির মধ্য দিয়েই প্রমান হয়ে গেল।

সূত্রের খবর, এবার রেশনকার্ড দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েতের গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূলেরই একাংশ। যেখানে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধানের অপসারণ সহ গ্রেপ্তারের দাবিতেও সরব হতেও দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। জানা যায়, ভাঙড়ের ভগবানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রেজিনা বিবি ও তার স্বামী স্থানীয় তৃণমূল নেতা ইব্রাহিম মোল্লা নিয়মবহির্ভূতভাবে পঞ্চায়েত অফিস থেকে রেশন কার্ড বিলি না করে তাঁদেরই এক আত্মীয়ের মাধ্যমে টাকার বিনিময় কার্ড বিলি করতেন।

অভিযোগ, কেউ রেশন কার্ড নিতে গেলে তাদের থেকে ১০০-২০০ টাকা করে নেওয়া হত। দীর্ঘদিন ধরে এই রেশন কার্ড বিলি না করে প্রধানের আত্মীয় জামাত আলি মোল্লা তার বাড়িতে তা আটকে রেখেছিলেন। সাধারণ মানুষ রেশন কার্ডের জন্য পঞ্চায়েত অফিস গেলে প্রধান তাদের সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করতেন বলেও অভিযোগ ওঠে। অন্যদিকে যাঁরা রেশন কার্ডের জন্য টাকা দিতেন না, তাঁদের কার্ডও আটকে রাখা হত।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

শুধু তাই নয়, সাধারণ মানুষের ডিজিটাল রেশন কার্ড, অন্ত্যোদয় অন্নযোজনা কার্ড সহ অন্যান্য কার্ড আটকে রেখে তা দিয়ে তারা রেশন ডিলারের থেকে তিনি মালপত্র তুলে নিতেন। আর এদিন সেই রেশন কার্ড বিলির দুর্নীতি নিয়েই সরব হতে দেখা যায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য খয়রুল ইসলামকে। সূত্রের খবর, সোমবার সকাল থেকে ওই পঞ্চায়েত অফিসের গেটে তালা ঝুলিয়ে, রাস্তা অবরোধ করে রীতিমতো মাইকে পঞ্চায়েত প্রধান ও অঞ্চল সভাপতি ইব্রাহিম মোল্লার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে ওই পঞ্চায়েতের সদস্য তথা আরাবুল ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা খয়রুল ইসলাম এই গোটা ঘটনার নেতৃত্ব দিয়ে সেই অভিযুক্ত ওই পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে সরব হন। পঞ্চায়েতের অন্যান্য সদস্যদেরও পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এদিন এই পঞ্চায়েতের প্রধানের দুর্নীতি প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত সদস্য খয়রুল ইসলাম বলেন, “রেশনকার্ড সহ পাট্টা এবং ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা কাটমানি নিয়েছে পঞ্চায়েত প্রধান এবং অঞ্চল সভাপতি ইব্রাহিম মোল্লা। তাদের অপসারণ এবং গ্রেপ্তারের দাবিতে আমাদের বিক্ষোভ।”

তবে পঞ্চায়েত সদস্যরা এই ব্যাপারে অভিযোগ করলেও তা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন অঞ্চল সভাপতি ইব্রাহিম মোল্লা। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ, চক্রান্ত করে আমার ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার জন্য করছে। পঞ্চায়েতে সবার সঙ্গে আলোচনা করেই জামাত আলির মাধ্যমে কার্ড বিতরণ করা হচ্ছিল। অধিকাংশ কার্ড বিতরণ করা হয়ে গিয়েছে। কিছু কার্ডে নামের বানান ভুল ছিল। সেই জন্য ওই কার্ডগুলো বিতরণ করা যায়নি। এখন ওরা সেই নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করছে।”

অন্যদিকে এই বিষয়ে ভাঙড় ২ নং ব্লকের বিডিও কৌশিককুমার মাইতি বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রধানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে আপাতত রেশন কার্ডগুলি ব্লক অফিস থেকে বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে এবার রেশনে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগে দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যেভাবে তৃণমূলের পঞ্চায়েতের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখালেন, তাতে যে শাসকদল বড়সড় অস্বস্তিতে, তা বলাই যায়।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!