এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পিকের মস্তিষ্ক ও প্রদীপের পঞ্চ প্রতিজ্ঞা ভর করে খড়্গপুরে বাজিমাত চায় তৃণমূল, হাসছে বিজেপি

পিকের মস্তিষ্ক ও প্রদীপের পঞ্চ প্রতিজ্ঞা ভর করে খড়্গপুরে বাজিমাত চায় তৃণমূল, হাসছে বিজেপি


 

আগামী 25 তারিখ রাজ্যের যে তিনটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে, তার মধ্যে হেভিওয়েট কেন্দ্র বলেই পরিচিত খড়গপুর। 2016 সালে এই কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তার পর যতদিন গিয়েছে, ততই সেখানে বিজেপির দাপট বাড়তে শুরু করেছিল।

তবে দীলিপবাবু সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে সাংসদ হয়ে যাওয়ায় এবার এই খড়গপুর বিধানসভা উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যেখানে তৃণমূল বিজেপির কাছ থেকে এই কেন্দ্রটি নিজেদের দখলে আনতে ইতিমধ্যেই মরিয়া হয়ে উঠেছে। খড়গপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারকে প্রার্থী করে ইতিমধ্যেই মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যেতে শুরু করেছে তৃনমূলের কর্মী-সমর্থকরা।

তবে এবারের এই তিন বিধানসভা উপনির্বাচনে সমস্ত কেন্দ্র যাতে তৃণমূল দখল করতে পারে, তার জন্য ইশতেহারে চমক দেওয়ার কথা শোনা গেছে তৃণমূলের অন্দরমহল থেকে। যেখানে প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ মত স্থানীয় সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ইশতেহার প্রকাশ করা হবে বলে জানা গিয়েছিল।

আর সেইমতই এদিন খড়্গপুরের দলীয় প্রার্থী প্রদীপ সরকারকে জয়যুক্ত করবার জন্য সেই ইশতেহার প্রকাশ করলেন জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে গুরুত্ব দেওয়া হল, বিদ্যুৎ, নিকাশি, পানীয় জল, আবাসন এবং স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নে। আর পাঁচটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে তৃণমূলের ইশতেহার প্রকাশ আসলে বিজেপিকে চাপে রাখা বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।

সূত্রের খবর, শুক্রবার দুপুরে “প্রদীপের পঞ্চ প্রতিজ্ঞা” নামে এই ইশতেহার প্রকাশ করেন তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন শহর তৃণমূলের সভাপতি রবিশংকর পান্ডে, কাউন্সিলর দেবাশীষ চৌধুরী, জওহরলাল পাল, বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো সহ অন্যান্যরা। এদিন এই ইশতেহার প্রকাশ নিয়ে গর্ব করে সাধারণ মানুষের কাছে আরও বেশি করে উন্নয়ন পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার।

তিনি বলেন, “এই শহরে উন্নয়ন অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা বলছি, আমাদের দলের বিধায়ক হলে আইআইটির সহযোগিতা নিয়ে নিকাশি ব্যবস্থার সার্বিক পুনর্গঠন, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের আবাস যোজনায় 10000 স্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করা, গোলবাজারে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা, প্রতিটি ওয়ার্ডে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ, কংসাবতী নদীতটে বিনোদন পার্ক, অপরাধের হার কমাতে রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা, হাসপাতাল নির্মাণ, প্রতি ওয়ার্ডে শৌচালয় নির্মাণ, নর্দমা পরিস্কার সহ অনেক উন্নয়ন করা হবে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

একইভাবে 2016 সাল থেকে এই কেন্দ্রের বিধায়ক থাকা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও এদিন একহাত নেন প্রদীপ সরকার। তিনি বলেন, “আগের বিধায়ক কিছু ভাবেননি। নিজ এলাকার উন্নয়নের প্রশ্নে আন্দোলনের পাশাপাশি রেলের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা সমস্যা সমাধানের পক্ষে রয়েছি।” একইভাবে তাদের বিধায়ক হলে তারা এলাকার অনেক উন্নয়ন করবেন বলে জানিয়েছেন শহর তৃণমূলের সভাপতি রবিশংকর পান্ডে।

তবে “প্রদীপের পঞ্চ প্রতিজ্ঞা” বলে পাঁচটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ইশতেহার প্রকাশ করা হলেও তাকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিজেপি কংগ্রেস এবং সিপিএমের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের এই ইশতেহার সম্পর্কে কড়া জবাব দেওয়া হয়েছে। এদিন এই প্রসঙ্গে সিপিএম কাউন্সিলর স্মৃতিকণা দেবনাথ বলেন, “ইশতেহারে পানীয় জলের কথা বলা হয়েছে। 87 কোটি টাকার প্রকল্পের তাহলে কি হল! মন্ত্রী তো সেই প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। আসলে কোনও কাজই পুরসভা করেনি। এখন ভোটের মুখে পৌরসভার যে কাজ করা দরকার, সেই কাজের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। খড়্গপুরের মানুষ এর যোগ্য জবাব দেবেন।”

একইভাবে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে খড়গপুর পৌরসভা কংগ্রেস কাউন্সিলর রিতা শর্মা বলেন, “শহরে যে কোনো উন্নয়ন হয়নি তা ওদের ইশতেহার প্রকাশ করাতেই বোঝা যাচ্ছে। রাজ্যে ওদের সরকার। পাঁচ বছরের সংসদ সদস্য ছিলেন, পৌরসভায় ওনারা চার বছর ক্ষমতায় আছেন। তাহলে ইশতেহারের এই কাজগুলো হল না কেন! তার জবাব তো প্রদীপবাবুকেই দিতে হবে। আমরা ভোট প্রচারে গিয়ে মানুষের কাছে এসব তুলে ধরব।” কিন্তু এই ব্যাপারে ঠিক কি বলছেন এই খড়গপুর পৌরসভায় বিরোধীদের মধ্যে তৃণমূলকে মূল টক্কর দেওয়া গেরুয়া শিবির!

এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপি কাউন্সিলার অনুশ্রী বেহারা বলেন, “ওনাদের প্রার্থী পৌরসভার চেয়ারম্যান। তিনি প্রচারে বলছেন, অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আবার ইশতেহারে শহরে উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। এতো স্ববিরোধী। তাহলে কি উন্নয়ন হয়েছে, তা তো বোঝাই যাচ্ছে।”

এদিকে এই প্রসঙ্গে তৃণমূলেরকে কটাক্ষ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “ওদের সরকার আছে। তবু কোনো কাজ হয়নি। কিছু করেনি বলেই ইশতেহার প্রকাশ করেছে।” তবে বিরোধী দল বিজেপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর তরফে তৃণমূলের ইশতেহার নিয়ে যতই কটাক্ষ করা হোক না কেন, তৃণমূল অবশ্য খড়গপুর বিধানসভায় ভালো ফল করার ব্যাপারে প্রবল আশাবাদী। তবে “প্রদীপের পঞ্চ প্রতিজ্ঞার” ইশতেহার শেষ পর্যন্ত কতটা সাফল্য পায়, তা ভোটবাক্স খোলার পরেই প্রমাণ হয়ে যাবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। যার দিকেই এখন তাকিয়ে রয়েছেন সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!