এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > ভাইপোর গুগলি খাচ্ছে না জনতা? শেষমেষ কি নিজেই ময়দানে মমতা! জোর কটাক্ষ বিজেপির!

ভাইপোর গুগলি খাচ্ছে না জনতা? শেষমেষ কি নিজেই ময়দানে মমতা! জোর কটাক্ষ বিজেপির!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- দিল্লিতে নাটক করার পর বাংলায় এসে রাজভবনের অদূরে মঞ্চ করে বকেয়া কেন দেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে বহু প্রশ্ন তুলেছিলেন বাংলার যুবরাজ। যাকে নাটক বলেই আখ্যায়িত করেছে বিরোধীরা। বিজেপির পক্ষ থেকে যুক্তি দিয়ে বারবার করে বলা হয়েছে, এত আন্দোলন, ধর্না কিছুই করতে হবে না। শুধু নিজের পিসিকে হিসাবটা দিতে বলুন বাংলার যুবরাজ। তাহলেই টাকা কেন্দ্রীয় সরকার দিতে তৈরি। কিন্তু সেই হিসাব না দিয়ে বাংলার মানুষের সামনে নিজেকে হিরো সাজাতে আন্দোলনের প্রতিভূ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন আঞ্চলিক দলের সর্বভারতীয় নেতা। তবে কোনোভাবেই তিনি যখন হিরো হয়ে উঠতে পারছেন না, তখন এবার কি শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি বুঝে ময়দানে নামতে বাধ্য হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? ভাইপোকে দিয়ে কোনোমতেই হচ্ছে না বুঝেই কি এবার নিজের মুখ থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার বিষয়টি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাইলেন তৃণমূল নেত্রী? ইতিমধ্যেই সেই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধী শিবির।

প্রসঙ্গত, এদিন দেবীপক্ষ পড়ার আগেই নিজের বাড়ি থেকে বিভিন্ন জেলার পুজোর ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করতে থাকেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়েও বিরোধীদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। তবে সেই কর্মসূচির শেষেই একশো দিনের কাজ নিয়ে সরব হন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একশো দিনের কাজের টাকা আমাদের প্রাপ্য। যদি আমাদের তা না দেওয়া হয়, তাহলে আগামী দিনে আরও বড় আন্দোলন হবে।” আর মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য শুনে নানা মহলের পক্ষ থেকে নানা প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে।

অনেকে বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভেবেছিলেন, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তিনি ভাইপোকে লড়াইয়ের প্রথম সারিতে রেখে নেতা তৈরি করবেন। কিন্তু আর যাই হোক, তিনি এই কয়েকদিনের চিত্র দেখে বুঝে গিয়েছেন, তার ভাইপোর আন্দোলন ধর্নার নাটক সাধারণ মানুষ ধরে ফেলেছে। বিরোধীরা অন্তত তেমনটাই বলছেন। তাই এবার সেটাকে মেকআপ দেওয়ার জন্য নিজেই ময়দানে নামতে বাধ্য হলেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু কোনো আন্দোলন তাকে করতে হবে না। তিনি কেন্দ্রের মুখোমুখি হয়ে শুধু এতদিন যে টাকা রাজ্য সরকার পেয়েছে, তার হিসাবটা দিয়ে দিন। তাহলেই কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত দিক বুঝে যদি দুর্নীতি না হয়, তাহলে রাজ্যকে তাদের প্রাপ্য মিটিয়ে দেবে বলেই দাবি বিরোধীদের।

বিজেপির দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে অসুস্থ। তার দ্রুত সুস্থতা সকলেই কামনা করছে। তবে তিনি সুস্থ হয়ে এবার সত্যিই ময়দানে নামুন। কেন্দ্রের কাছে বকেয়া চাওয়ার লড়াইতে তিনিও সামিল হন। তাহলেই তো কেন্দ্রীয় সরকার তাকে যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দেবে যে, কেন টাকা দেওয়া হচ্ছে না! আর তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সমস্ত দুর্নীতির তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে। ফলে সেই সময় তিনি যে চাপে পড়বেন, তাতে তার আন্দোলন করা তো দূরের কথা, লেজ গুটিয়ে পালাতে বাধ্য হবেন তৃণমূল নেতারা। কারণ পিসি ভাইপো সকলেই জানেন যে, এই রাজ্যে একশো দিনের কাজে দুর্নীতি হয়েছে। তাই ধর্না, আন্দোলন, নাটক, যার হুঁশিয়ারিই দিন না কেন, কেন্দ্র এত সহজে গলবে না। মানুষের টাকা নয়ছয় করলে তার শাস্তি পেতেই হবে। আগে হিসাব দেবে রাজ্য, তারপরেই তাদের তাদের টাকা দেওয়া হবে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটা আন্দোলন হোক। যে আন্দোলনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের কাছে নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। কিন্তু এমন একটা বিষয়কে সামনে রেখে অভিষেকবাবুর নেতৃত্বে আন্দোলন হলো, যাকে সাধারণ মানুষও বিশ্বাস করতে চাইছেন না। সকলেই বলছেন, পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজভবনের মত গুরুত্বপূর্ণ জায়গার সামনে এভাবে কোনো ধর্না করা যায় না। আর চুরি করে তৃণমূল কিভাবে এই আন্দোলন করছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। ফলে সবদিক থেকেই মানুষের মনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করলেও তা গ্রহণ করছেন না সাধারণ মানুষ। যার ফলে এবার নিজেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ময়দানে নামার ইঙ্গিত দিয়ে মানুষের মন গলানোর চেষ্টা করলেন। কিন্তু তাতে চিড়ে কতটা ভিজবে, তা সময়ই বলবে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!