এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কি বললেন মমতা! জেনে নিন

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কি বললেন মমতা! জেনে নিন

 

সমগ্র দেশের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরোধিতায় চলতে থাকা বিক্ষোভের মধ্যেই রাজভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসতে দেখা গেল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসকে রাজনৈতিকভাবে আক্রমণ করতে শুরু করে দিয়েছে বামফ্রন্ট শিবির। বস্তুত, সমগ্র দেশে বর্তমানে ভারতীয় জনতা পার্টি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এবং বিভিন্ন সামাজিক সংস্থার পক্ষ থেকে এনআরসি, এনপিআর এবং সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরোধিতা করে আন্দোলন বিক্ষোভ এবং কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এইরকম সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির আজকের বৈঠক রীতিমত উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।

কারণ শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে নয়, সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে এনআরসি সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরোধীতায় যে আন্দোলন সংঘটিত হয়েছে, তার অন্যতম প্রধান মুখ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার এই বৈঠককে তাৎপর্যপূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা। তবে অল্প সময়ের এই বৈঠকের পরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা আমার সাংবিধানিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে, সৌজন্যের মধ্যে পড়ে। রাজ্যের 28 হাজার কোটি টাকা পাওনা আছে কেন্দ্রের কাছে। তাছাড়া বুলবুলের সাত হাজার কোটি টাকা বাকি রয়েছে। রাজ্যের টাকা যেটা আমাদের প্রাপ্য, তা যাতে মিটিয়ে দেওয়া হয়, সেই কথা বলেছি।”

তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, “আজ বলেছি আপনি আমার অতিথি। জানি না, বলা ঠিক হবে কিনা। তবুও বলছি, সিএএ, এনপিআর ও এনআরসির বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। মানুষে মানুষে বৈষম্য হওয়া উচিত নয়। কোনো মানুষের উপর অত্যাচার যেন না হয়। সেটা দেখার জন্য বলেছি। এনআরসি নিয়ে আপনারা ফের ভাবুন। আমরা চাই সিএএ, এনআরসি বাতিল হোক।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কলকাতা বন্দরের শতবর্ষপূর্তি সহ একাধিক কর্মসূচি নিয়ে দুইদিনের কলকাতা সফরে এসে উপস্থিত হয়েছেন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে রাজভবনে সামান্য সময়ের জন্য বৈঠক হয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এই বৈঠককে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক কটাক্ষ করতে শুরু করে দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে কিন্তু রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে নরেন্দ্র মোদি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠককে নিয়ে দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করা হয়।

এদিন টুইটার হ্যান্ডেল থেকে রাজ্যসভার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েনকে উদ্ধৃত করে টুইটারে লেখা হয়েছে, “এটা সরকারের সঙ্গে সরকারের বৈঠক। কারও থেকে তৃণমূলের সার্টিফিকেট প্রয়োজন নেই। আমরাই এই আন্দোলন শুরু করেছিলাম। এখন এটা জনতার আন্দোলন। কটা মিছিলে হেঁটেছেন, আপনারা কটা বিক্ষোভ করেছেন, সোফায় বসে পরামর্শ দেওয়া বন্ধ করুন।” তবে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হোক না কেন, রাজ্যের তৃণমূল সরকার এবং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজনৈতিক ভাবে আক্রমন করার কোনো রাস্তা ছাড়েননি পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম বিরোধী দল সিপিআইএম।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

এদিন এই ঘটনা প্রসঙ্গে রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিম বলেন, “দিনে দিনে বাড়ল দেনা। ওর বাইরের কথা বলেন, ভিতরের কথা বলেন। অতীতে আমরা দেখেছি, এটা শীতকালে যাত্রা বেড়ে যায়। যাত্রা শিল্পী হিসেবে নাম লেখানো উচিত ওর।” পাশাপাশি রাজ্যের পাওনা টাকা সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে কটাক্ষ করে সেলিম সাহেব বলেন, “দেনা নিয়ে অর্থমন্ত্রী, অর্থ সচিবের সঙ্গে কথা বলতে হয়। তাদের বাদ দিয়ে একান্তে আলোচনা হয় না।” তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শুধুমাত্র এই বৈঠক নয়, অতীতেও নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠককে কটাক্ষ করতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যের তৃণমূল বিরোধী দলগুলিকে।

গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে যখন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক হয়। সেই সময় রাজ্যের বিরোধী দলগুলির আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে সেই সময় বলা হয়েছিল, প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে বাচাতে মোদির কাছে মমতা গিয়েছেন। আর এবার সংশোধিত নাগরিক আইন বিরোধিতায় সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত হল বিরোধীরা।

তবে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন, বিরোধীরা যাই বলুক না কেন, একদিকে যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অতীতে নানান ইস্যুতে আওয়াজ তুলেছেন, তেমনই নাগরিকত্ব আইন থেকে শুরু করে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি পর্যন্ত একাধিক বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলন ইতিমধ্যেই ছাপিয়ে গেছে। অন্যান্য বিরোধী দলের আন্দোলনগুলোকে সেই কারণেই কার্যত নিজেদের পজিশন বাঁচাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে চাইছে বামফ্রন্ট সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি। তবে সেই কাজে তারা কতটা সফল হবেন! সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!