এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > পুলিশ আধিকারিকদের ‘নপুংসক’ বলে তোপ দাগলেন মন্ত্রী, জোর বিতর্ক রাজ্যে

পুলিশ আধিকারিকদের ‘নপুংসক’ বলে তোপ দাগলেন মন্ত্রী, জোর বিতর্ক রাজ্যে

গত পঞ্চায়েত ভোট থেকে রাজ্যে শাসক-বিরোধী সংঘর্ষে রাজনৈতিক উত্তাপ অব্যাহত। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য জুড়ে রাজনৈতিক হানাহানির ঘটনা ক্রমশ এতটাই বেড়ে গেছে, যে থামার কোন সংকেত পাওয়া যাচ্ছে না। নৃশংসতার বিচারে একে-অপরকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আর এই রাজনৈতিক হানাহানিতে এক একটি প্রাণ বলি হচ্ছে। এবার শাসক-বিরোধী সংঘর্ষে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হল কোচবিহারের চিলাখানায়। আর শাসক-বিরোধী সংঘর্ষের ফলে রাজ্যের মন্ত্রীর মন্তব্যকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর চরমে।

শাসক-বিরোধী সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে কোচবিহারের পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত। আর এই পরিস্থিতির মধ্যেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে গিয়ে একটি বিতর্কিত মন্তব্য করে ফেলেন। তৃণমূল কর্মীদের ওপর আক্রমণের প্রসঙ্গে তুফানগঞ্জের এসডিপিও সহ অন্যান্য পুলিশ অফিসারদের নপুংসক বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি।

বুধবার সকালে কোচবিহারে তুফানগঞ্জ 1 নম্বর ব্লকের চিলাখানায় তৃণমূল একটি বাইক মিছিল করে। অভিযোগ, সেসময় মিছিলের মধ্যে থেকে বিজেপি কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। সাথে কয়েকটি দোকানেও ব্যাপক ভাঙচুর চালায় মিছিলকর্মীরা বলে অভিযোগ। আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়।

আর এরই প্রতিবাদে কোচবিহার অসমগামী 31 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন এলাকার ব্যবসায়ীরা। তাঁদের সাথে এই অবরোধে যোগদান করে সমর্থন জানায় স্থানীয় বিজেপি কর্মী ও সমর্থকরা‌। এই অবরোধের ফলে জাতীয় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার খবর পেয়ে তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের তরফ থেকে অবরোধকারীদের অনুরোধ করা হয় জাতীয় সড়ক খালি করার জন্য। পুলিশের অনুরোধে সাড়া দিয়ে ব্যবসায়ীরা অবরোধ তুলে নেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু অবরোধ ওঠার পরে বিজেপি নেতা, কর্মীরা ও ব্যবসায়ীরা মিছিল শুরু করেন। এরপরে নতুন করে অভিযোগ আসে ব্যবসায়ীদের মিছিলেও তৃণমূল হামলা চালায়। আর এরপরেই পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশকে ঘিরে চলে বিক্ষোভ।এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকালে চিলাখানা যান উত্তরবঙ্গের উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বুধবার যে সমস্ত কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে, সেগুলি তিনি ঘুরে দেখেন‌। তৃণমূল কর্মীদের সাথে কথা বলেন। আর এরপরই ঘটনাস্থল থেকে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মন্ত্রী অভিযোগ করেন, পুলিশ বিজেপির কথায় চলছে। বিজেপির নির্দেশে তৃণমূল কর্মীদের আক্রমণ করছে পুলিশ। এই কথা প্রসঙ্গে তিনি পুলিশের বেশ কয়েকজন আধিকারিককে নপুংসক বলে আখ্যা দেন। আর তারপরেই রাজ্য জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। রাজ্যের মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যকে কড়া ভাষায় নিন্দা করেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। একজন মন্ত্রীর মুখে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে এধরনের কথা জনগণের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

রাজ্যের মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যে শাসক শিবির থেকে বিরোধী শিবির প্রত্যেকেই সমালোচনায় মুখর হয়েছে। ঘটনা প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে যদি রাজ্যের মন্ত্রী এ ধরনের মন্তব্য করেন, তাহলে সাধারণ মানুষের মনে পুলিশ প্রশাসন নিয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য। দলীয় সংঘর্ষের কারণ হেতু পুলিশকে এ ধরনের কথা বলা যায় কিনা সে নিয়ে শাসক মহলেও তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, রাজনৈতিক নেতাদের অনেক বেশি সচেতন থাকা উচিত তাদের বক্তব‍্যের প্রতি। জনগণের মনে যাতে কোনো বিতর্কিত কথার কুপ্রভাব না পড়ে সেদিকে নজর দেওয়া উচিত রাজনৈতিক দলগুলির। আপাতত সমগ্র বিষয়টি নিয়ে এখনো পর্যন্ত রাজ্যের শাসক মহল থেকে কোন বিবৃতি প্রকাশ পায়নি। তবে ঘটনাটি নজরে রেখেছে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!