প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 2019 এর লোকসভা নির্বাচনের পর যেভাবে গেরুয়া শিবির নিজেদের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করতে উদ্যোগী হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই বিধানসভা নির্বাচনের আগে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল তাঁদের সাংগঠনিক জোর বাড়াতে উঠে পড়ে লেগেছে। 2019 এর লোকসভা নির্বাচনের পর দেখা গিয়েছিল তৃণমূল শিবির থেকে দলে দলে গিয়ে ভিড় জমাচ্ছে নেতা কর্মীরা গেরুয়া শিবিরে। কিন্তু এবার অন্য ছবি রাজ্যের সামনে। যতই একুশের বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে, গেরুয়া শিবিরের ভাঙন ততই প্রকট হয়ে উঠছে।

এই অবস্থায় অবশ্য রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সম্পূর্ণ দায়ভার চাপিয়েছেন রাজ্যের পুলিশ এবং তৃণমূলের ভোট কৌঁশলী প্রশান্ত কিশোরের ওপর। এদিন মেদিনীপুরে বিজেপির পক্ষ থেকে একটি সভার আয়োজন করা হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি এই সভাতে সোজাসুজি প্রশান্ত কিশোরকে আক্রমণ করে জানিয়ে দেন, প্রশান্ত কিশোর এবং তাঁর টিম বিজেপিকে ভাঙানোর চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি এদিন রাজ্য সরকারকে করোনা ইস্যুতে কড়া আক্রমণ করেছেন। দিলীপ ঘোষের কথায় বিভিন্ন তারিখে যেভাবে লকডাউন হচ্ছে রাজ্যে তার কোনো মানেই হয় না। বরং এতে করোনা যত না মিটবে তার থেকে রাজনৈতিক সুবিধা অনেক বেশি হবে। এদিন দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার করোনা আটকানোর কোনো চেষ্টাই করেনি। বরঞ্চ লকডাউনের প্রাক্কালে শাসক দল বিজেপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলকে জোর করে আটকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

অন্যদিকে গোটা রাজ্যে এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে বিজেপিতে ধ্বস নেমেছে। প্রকারান্তরে সেই একই কথা স্বীকার করে নিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তবে এই ভাঙনের জন্য তিনি শাসক দলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, জেলায় জেলায় পুলিশ প্রশাসন ভয় দেখিয়ে বিজেপি থেকে লোক নিয়ে চলে যাচ্ছে শাসক দলে। অন্যদিকে প্রশান্ত কিশোর টাকা দিয়ে লোক কিনছেন। তবে বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এদিন আত্মবিশ্বাসের সাথে জানান, এরা প্রত্যেকেই আবার দলে ফিরে আসবেন।

তবে রাজ্য বিজেপি সভাপতির গাড়ি নিয়ে জেলা সফরে যাওয়ায় রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। কারণ সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের বাড়ির গাড়ির চালক থেকে শুরু করে নিরাপত্তারক্ষী সহ বেশ কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই অবস্থায় নিয়মানুযায়ী রাজ্য বিজেপি সভাপতির হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা। কিন্তু তিনি তা না করে জেলায় জেলায় সফর করে বেড়াচ্ছেন। আর এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা।

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, যেভাবে রাজ্যজুড়ে গেরুয়া শিবিরে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে বিজেপির সাংগঠনিক জোর যে ভেঙে পড়ছে, সেকথা অনস্বীকার্য। রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন, গেরুয়া শিবির শুরু থেকে অনেকটা এগিয়ে থাকলেও শেষের দিকে কিন্তু এবার খেল দেখাচ্ছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। এককথায় বলা যায় বাংলার দুই যুযুধান রাজনৈতিক শিবিরের লড়াই এখন জমে উঠেছে। আপাতত একুশের বিধানসভা নির্বাচনের দিকেই তাকিয়ে এখন বাংলার সমস্ত রাজনৈতিক দল।