এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > নতুন হটস্পট? ৪৮ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত ৬! কলকাতার এই বস্তি ঘিরে কি ঘুম উড়ছে প্রশাসনের?

নতুন হটস্পট? ৪৮ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত ৬! কলকাতার এই বস্তি ঘিরে কি ঘুম উড়ছে প্রশাসনের?

মুম্বাইয়ের ধারাভি বস্তির পর এবার কলকাতার বেলগাছিয়া বস্তি। 48 ঘণ্টার মধ্যে যে মারাত্মকভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে তা নিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় কলকাতা পুরসভা। এমনিতেই করোনা সংক্রমণ ঘিরে রীতিমতো আতঙ্কিত এই মুহূর্তে রাজ্যবাসী। তার মধ্যেই নতুন করে বেলগাছিয়া বস্তিতে 48 ঘন্টার মধ্যে ছয়জন করোনা রোগী ধরা পড়ার খবরে আতঙ্ক আরও প্রবল হলো বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে বেলগাছিয়া বস্তি সিল করে দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে।

জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে বেলগাছিয়া বস্তি থেকে যে তিনজন আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন রবিবার, সেই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অবশ্য তাঁরা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন কিনা সে সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। সোমবার রাত পৌনে এগারোটা নাগাদ বেলেঘাটা আইডিতে ভর্তি একজন করোনা পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে। সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তি বেলগাছিয়া বস্তির জে কে ঘোষ রোডের বাসিন্দা। অন্যদিকে জানা গেছে, গত পাঁচ দিনে শুধুমাত্র ওই এলাকা থেকেই 5 জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে প্রত্যেকেই করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কিনা সে কথা অবশ্য পরিষ্কার নয়।

কিন্তু আতঙ্ক মারাত্মক পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সূত্রের খবর, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জরুরী ভিত্তিতে শহরের সমস্ত বস্তিতে অসুস্থ রোগীর সন্ধানে চিরুনি তল্লাশির নির্দেশ দিয়েছেন পুরকর্মীদের। উল্লেখ্য, বেলগাছিয়া বস্তিতে প্রায় 60 হাজার বাসিন্দা বাস করেন। অন্যদিকে, শহরের পুরকমিশনার এবং বিভাগীয় অফিসারদের নিয়ে একটি বৈঠকের পর মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ‘রাজস্ব বিভাগ থেকে প্রতিটি বরোতে একজন ম্যানেজার ও ওয়ার্ড পিছু দু’জন সহকারি ম্যানেজার অফিসার নিয়োগ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরাই বস্তির বাড়ি বাড়ি ঘুরে রোগীর সন্ধান করবেন, চিকিত্‍সা ও হাসপাতালে ভরতিও করবে পুরসভাই।’

এদিকে 48 ঘণ্টার মধ্যে যেভাবে বেলগাছিয়া বস্তিতে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে, তা নিয়ে রীতিমত চিন্তিত রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারাও। জানা গেছে, ইতিমধ্যে বেলগাছিয়া বস্তি কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে সিল করে দেওয়া হয়েছে হটস্পট ভিত্তিতে। বেলগাছিয়া বস্তিতে এই মুহূর্তে কেউ ঢুকতে পারবেন না এবং বেরোতেও পারবেন না। এদিন স্থানীয় কাউন্সিলর তথা সাংসদ ডঃ শান্তনু সেন জানিয়েছেন, ‘সমস্ত গরিব মানুষকেই পুরসভার তরফে চাল-ডাল-আলু ও বিস্কুট যেমন দেওয়া হয়েছে তেমনই ওষুধপত্রও দেওয়া হচ্ছে।’ অন্যদিকে কাউন্সিলরের কথা থেকেই জানা গেছে, বেলগাছিয়া বস্তিতে করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়ার পরেই ইতিমধ্যে বস্তি জীবানুমুক্ত করার কাজ শুরু হয়ে গেছে পুরসভার পক্ষ থেকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, এদিন পোস্তাতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরির কাজ শুরু হয়েছে কলকাতা পুরসভা কর্তৃক। অন্যদিকে, সিঁথিতেও একটি আবাসন হোস্টেল নেওয়া হচ্ছে একই কারণে বলে জানা গেছে। বেলগাছিয়া বস্তিতে করো না আক্রান্তের খোঁজ পাওয়ার পরেই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পুরো কমিশনারের কাছে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার মেয়র নির্দেশ দিয়েছিলেন, বসতির প্রত্যেকটি ঘর থেকে অসুস্থদের খুঁজে বার করার জন্য। কিন্তু সেই নির্দেশ 100% পালন না করার জন্য জবাবদিহি চান এদিন মেয়র পুর কমিশনারের কাছে। কিন্তু পুর কমিশনার অবশ্য তাঁর জবাবে মেয়রকে খুশি করতে পারেননি বলেই জানা গেছে।

আপাতত মেয়রের পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি বরোতে ‘অ্যাসেসমেন্ট’ বিভাগের ম্যানেজার এবং ওয়ার্ড পিছু দুজন করে সহকারি ম্যানেজার নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে এদিন মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘বসতিবাসীরা অনেকেই বুঝতে পারেন না কোনটা সাধারণ সর্দি-কাশি, আর কোনটা করোনার লক্ষণ। তাই পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরাই ওই অসুস্থদের তথ্য সংগ্রহ করে চিকিত্‍সার ব্যবস্থা করবেন।’ উল্লেখ্য, এর আগেও খিদিরপুর ও বউবাজারের দুজন ফুটপাতবাসীর শরীরে করোনার জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল। এই অবস্থায় খুব স্বাভাবিকভাবেই কলকাতার মেয়র সমস্ত বস্তি এবং ফুটপাতবাসীদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ নিয়ে যারপরনাই চিন্তিত।

জানা গেছে, ইতিমধ্যে মেয়রের পক্ষ থেকে কলকাতা পুরসভার সমস্ত কাউন্সিলরদের কাছে একটি ভিডিও বার্তা গেছে, যেখানে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রত্যেকটি বাড়ি ধরে ধরে নজরদারি চালানোর। দিনের পর দিন যেভাবে করোনা সংক্রমণ ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন করোনা সংক্রমণের মহামারী আকার ধারণ করতে আর বিশেষ দেরী নেই। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার জন্য বারংবার আবেদন জানাচ্ছেন তাঁরা। বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকদের দাবি, একমাত্র সতর্ক ও সচেতনভাবেই করোনার সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব, না হলে করোনার মারণ থাবা কখন যে গ্রাস করবে তা বোঝা যাবেনা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!